Sunday, September 8, 2024
বাড়িখেলাইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের পর বিপাকে অস্ট্রেলিয়া

ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের পর বিপাকে অস্ট্রেলিয়া

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ জুলাই: ম্যানচেস্টারে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪ উইকেটে ১১৩। স্বাগতিকদের আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে সফরকারীদের এখনও করতে হবে ১৬২ রান।সিরিজের চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস এ দিন থামে ৫৯২ রানে। ওভারপ্রতি রান ৫.৪৯ করে, পাঁচশ বা এর বেশি রানের সংগ্রহে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম দুটিও ইংল্যান্ডের।গত মাসে লর্ডসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওভারপ্রতি ৬.৩৩ করে রান তুলে ৪ উইকেটে ৫২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ইংলিশরা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে তারা করে ৬৫৭, ওভারপ্রতি রান ৬.৫০ করে।ইংল্যান্ডকে ২৭৫ রানের লিড এনে দিতে এ দিন অগ্রণী ভূমিকা রাখেন বেয়ারস্টো। ৮১ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৯৯ রানে অপরাজিত থাকেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। তার সঙ্গে ৪৯ বলে ৬৬ রানের দশম উইকেট জুটিতে জেমস অ্যান্ডারসনের অবদান কেবল ৫।সুদীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে ৯৯ রানে অপরাজিত থাকা সপ্তম ব্যাটসম্যান হলেন বেয়ারস্টো। অ্যাশেজে তার আগে এই স্বাদ পেয়েছিলেন কেবল অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ ওয়াহ, ১৯৯৫ সালে পার্থে।

১ রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ বেয়ারস্টোর সঙ্গী হলো এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। ম্যানচেস্টারেই ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে তিনি আউট হয়েছিলেন ৯৯ রানে।অ্যাশেজে কোনো ইনিংসে ইংল্যান্ডের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে ছয় জন পঞ্চাশ ছুঁয়েছিলেন আগে একবারই, ১৮৯৩ সালে ওভালে। ঐতিহ্যবাহী এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার এমন নজির আছে তিনবার- ১৯২০ সালে সিডনিতে, ১৯৩০ সালে ওভালে, একই মাঠে ২০০১ সালে।সব মিলিয়ে আর একবারই এটি করে দেখাতে পেরেছে ইংল্যান্ড, ১৯৩০ সালে কিংসটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শুক্রবার তৃতীয় দিনেও উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। ইংল্যান্ড দিন শুরু করে ৪ উইকেটে ৩৮৪ রান নিয়ে। দিনের শুরুতে বেন স্টোকসকে রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করেন কিপার অ্যালেক্স কেয়ারি।সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইংলিশ অধিনায়ক ফিফটি করেন ৭২ বলে। এরপরই থামেন তিনি। প্যাট কামিন্সের স্টাম্পের বল লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৫ চারে গড়া তার ৫১ রানের ইনিংসটি।

আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান ব্রুক ফিফটি করেন ৮০ বলে। দ্বিতীয় নতুন বলে তাকে থামান হেইজেলউড। বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি ৫ চারে ৬১ রানের ইনিংস খেলে।হেইজেলউড নিজের পরের দুই ওভারে বিদায় করে দেন ক্রিস ওকস আর উডকে। লাঞ্চ বিরতির পর স্টুয়ার্ড ব্রডকে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে চতুর্থ শিকার ধরেন ৩২ বছর বয়সী এই পেসার।নবম উইকেটের পতন হয় যখন, বেয়ারস্টোর রান ছিল কেবল ৪৯। পরের ওভারে মিচেল স্টার্ককে ছক্কায় উড়িয়ে তার ঝড়ের শুরু। হেইজেলউডকে একটির পর কামিন্সের তিন বলের মধ্যে মারেন দুই ছক্কা।স্ট্রাইক নিতে বল কিপারের হাতে রেখে তিনবার ‘বাই’ রানও নেন তিনি। ৯০ থেকে কামিন্সকে মারেন দুটি চার। পরের ওভারে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়েও অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে দেন তিনি। পরের বলেই এলবিডব্লিউ হন অ্যান্ডারসন।৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার হেইজেলউড। টেস্টে দশমবার এই স্বাদ পেলেন তিনি।পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন উসমান খাওয়াজা ও ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনে কাটিয়ে দেন ১০ ওভার। এরপরই আক্রমণে এসে নিজের দ্বিতীয় বলে খাওয়াজাকে ফিরিয়ে দেন উড। বাড়তি বাউন্সের ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার।

চা-বিরতির পর বেশিক্ষণ টেকেননি ওয়ার্নার। ওকসের বল তিনি টেনে আনেন স্টাম্পে। তখন ৫৪ রানে ২ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার।ওকসের পরের ওভারে আউট হতে হতে বেঁচে যান স্টিভেন স্মিথ। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে যায় স্লিপে, মুঠোয় জমান জো রুট। তৃতীয় আম্পায়ার বেশ কয়েকবার রিপ্লে দেখে নটআউট ঘোষণা করেন। রুট মুঠোয় জমানোর আগে বল মাটি স্পর্শ করেছিল।সুযোগ পেয়ে মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন স্মিথ। দ্বিতীয় স্পেলে আক্রমণে ফিরে ৮৮ বল স্থায়ী ৪৩ রানের জুটি ভেঙে শততম টেস্ট উইকেটের স্বাদ পান উড। লেগ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বলে ব্যাট চালিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন স্মিথ।৩৩ বছর বয়সী গতিময় ফাস্ট বোলার উড আরেকটি শর্ট বলে দ্রুত বিদায় করে দেন ট্রাভিস হেডকেও।দিনের বাকি পাঁচ ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেন লাবুশেন (৪৪*) ও মিচেল মার্শ (১*)। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৩১৭

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৮৪/৪) ১০৭.৪ ওভারে ৫৯২ (ব্রুক ৬১, স্টোকস ৫১, বেয়ারস্টো ৯৯*, ওকস ৬, ব্রড ৭, অ্যান্ডারসন ৫; স্টার্ক ২৫-০-১৩৭-২, হেইজেলউড ২৭-২-১২৬-৫, কামিন্স ২৩-০-১২৯-১, গ্রিন ১৫.৪-১-৬৪-২, হেড ৭-০-৫২-০, মার্শ ৯-০-৫৭-০, লাবুশেন ১-০-৩-০)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৪১ ওভারে ১১৩/৪ (খাওয়াজা ১৮, ওয়ার্নার ২৮, লাবুশেন ৪৪*, স্মিথ ১৭, হেড ১, মার্শ ১*; অ‍্যান্ডারসন ১১-৪-১৭-০, ব্রড ৮-২-৩১-০, মইন ৬-০-২৮-০, উড ৭-০-১৭-৩, ওকস ৯-৪-১৮-১)

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য