Monday, June 2, 2025
বাড়িজাতীয়পাক পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারত?

পাক পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারত?

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ মে : অপারেশন সিঁদুরের আওতায় পাকিস্তানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারত? সারগোদায় পাক বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার হামলার পর রীতিমতো চর্চায় উঠে এসেছে পাকিস্তানের কিরানা হিলস নামের এক বিশেষ অঞ্চল। মনে করা হয়, পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পরমাণু ঘাঁটিগুলির একটি এই কিরানা হিলস। সোমবার সেনার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন উঠলে এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী স্পষ্ট ভাষায় সে দাবি খারিজ করে জানালেন, ‘না, এমন কোনও জায়গায় হামলা চালায়নি ভারত।’

অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের কিরানা হিলস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সারগোদা জেলায় অবস্থিত এই পাহাড়ে পাক সেনার ঘাঁটিতে ভারতের হামলার একাধিক ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা হয় সেনার তরফে। এই পাহাড়ি এলাকা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অন্যতম বড় ঘাঁটি। মনে করা হয়, পাকিস্তানের হাতে যে ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে। সেই তালিকায় আছে এই কিরানা হিলও। ভারত সেখানে হামলা চালিয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে এয়ার মার্শাল বলেন, ‘কিরানা হিলসে যে পরমাণু ঘাঁটি রয়েছে এ তথ্য আমাদের দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এমন কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিরানা হিলসে আমরা হামলা চালাইনি। সেখানে যাই থাকুক না কেন।”

পাশাপাশি এয়ার মার্শাল আরও জানান, “ভারতের এই লড়াই ছিল পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, পাক সেনার বিরুদ্ধে নয়। ৭ মে ভারতীয় সেনা বেছে বেছে শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটিতেই হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য পাক সেনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াইকে নিজেদের লড়াই বলে ভেবে নেয়। জঙ্গিদের পক্ষ নিয়ে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামল ওরা।”

তবে যাকে নিয়ে এত চর্চা সেই কিনারা হিলসের সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, কৌশলগত দিক থেকে এই স্থান পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর দূরত্ব সারগোদা বিমান ঘাঁটি থেকে সড়কপথে মাত্র ২০ কিলোমিটার এবং কুশাব পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে। ইসলামাবাদ থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কুশাবে রয়েছে প্লুটোনিয়াম উৎপাদনের জন্য চারটি জলচুল্লি। ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, যা ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষবার নথিভুক্ত হয়। জানা যায় এই কিনারা হিল ৬৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এবং ৩৯ কিলোমিটার পরিধি দ্বারা বেষ্টিত। বহুস্তরীয় নিরাপত্তায় বেষ্টিত এই অঞ্চল। এতে রয়েছে ১০টি সুরঙ্গ পথ। বড়সড় বিস্ফোরণ সহ্য করার ক্ষমতা। এমন একটি জায়গায় আশেপাশেও যদি ভারত হামলা চালায় তবে তার অর্থ এটাই যে, পাকিস্তানের সমস্ত গোপন সামরিক কার্যকলাপ ভারতের নখদর্পনে। এবং প্রয়োজনে তা গুঁড়িয়ে দিতেও সক্ষম ভারতীয় সেনা।

পাক সেনার হামলার জবাবে পরে পাকিস্তানের ১১টি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। যেখানে যেখানে হামলা চলে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, রফিকি, মুরিদ, নূর খান, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর, চুনিয়ান, পাসরুর, শিয়ালকোট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাওয়ালপিন্ডির নূর খান সেনাঘাঁটিতে হামলা। পাক সেনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি এটি। পাক পরমাণু অস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানস ডিভিশনের সদর দপ্তরের খুব কাছে অবস্থিত এই ঘাঁটি। সেখানে হামলার অর্থ পাকিস্তানকে এই বার্তা দেওয়া যে, ভারত চাইলেই পাকিস্তানের পরমাণু পরিকল্পনা কমিটির শিরচ্ছেদ করতে পারে। উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর। ফলে গোটা বিশ্বের নজর ছিল পহেলগাঁও সন্ত্রাস পরবর্তী সংঘাতের দিকে। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, ভারতের সেনাঘাঁটি এবং জনবহুল এলাকায় হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। তথাপি পরমাণু শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উভয়দেশই এখনও পর্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!