স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ এপ্রিল : শুল্কযুদ্ধে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানালেও চিনের পক্ষে রা কাড়েনি কোনও দেশ। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার পক্ষ নেওয়া দেশগুলিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিল বেজিং। চিনের বাণিজ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়ে দিলেন, ‘যদি কোনও দেশ আমেরিকাকে তুষ্ট করতে চিনের স্বার্থবিরোধী চুক্তি করে তবে তার ফল ভালো হবে না।’
একে অপরের দিকে শুল্ক-বাণ ছুড়ে চলেছে আমেরিকা ও চিন। ভারত, কানাডা, চিন-সহ একাধিক দেশের উপর ২ এপ্রিল থেকে ব্যাপক হারে পারস্পরিক শুল্ক চাপিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এর পালটা চিন আমেরিকার উপর কর চাপালেও, বাকি দেশগুলি কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। যার জেরে ট্রাম্পের কোপে পড়েছে শি জিনপিংয়ের দেশ। নয়া শুল্কবিধি লাগুতে বাকি দেশগুলির জন্য ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ জারি করলেও রেহাই মেলেনি চিনের। তাদের উপরে ১৪৫ শতাংশ ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো ২০০ শতাংশের বেশি কর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পালটা ১২৫ শতাংশ কর চাপিয়েছে চিনও। এমন অস্বাভাবিক শুল্কের জেরে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিন-আমেরিকার বাণিজ্য।
এদিকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে তৎপর হয়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ। বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে আলোচনা প্রক্রিয়া চলছে ভারত ও আমেরিকার প্রশাসনিক আধিকারিকদের মধ্যেও। সোমবার ভারতে এসেছেন মার্কিন উপরাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স। এই পরিস্থিতির মাঝেই সোমবার বেজিংয়ের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “এভাবে কোনও দেশকে তুষ্ট করার জন্য তৈলমর্দন কখনও শান্তি আনতে পারে না। এবং স্বার্থের সঙ্গে এই ধরনের চুক্তি কখনও সম্মানের হয় না।” আরও জানানো হয়েছে, “অন্যের স্বার্থের বিনিময়ে নিজেদের সাময়িক স্বার্থ খোঁজা বাঘের ছাল খোঁজার মতো। এই ধরনের চুক্তি উভয় দিকেই সমস্যা তৈরি করবে ও অন্যের ক্ষতি করবে।” একইসঙ্গে চিন জানায়, “শুধুমাত্র আমেরিকাকে তুষ্ট করতে চিনের ক্ষতি করে কোনও দেশ যদি কোনও চুক্তি করে সেক্ষেত্রে ফল ভালো হবে না। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করব, এবং সমুচিত জবাব দেব।”
উল্লেখ্য, মার্কিন শুল্কের কোপে পড়ে প্রথমে ভারতকে পাশে চেয়ে বার্তা দিয়েছিল চিন। বেজিং বিশ্বকে ‘হাতি ও ড্রাগনের নাচ’ দেখানোর আমন্ত্রণ জানালেও ‘হাতি’ অর্থাৎ ভারত এই বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। এরপর আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যেকার সংঘাতকে অস্ত্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে চিনের পাশে দাঁড়ানোর প্রস্তাব দেয় বেজিং। তবে ইউরোপীয় সংঘের সদস্য দেশ ইতালির প্রধানমন্ত্রীর জর্জিয়া মেলোনির ট্রাম্প সাক্ষাৎ ও শুল্ক স্থগিতাদেশে সেখানেও স্বপ্নভঙ্গ হয় চিনের। কাউকে পাশে না পেয়ে বিশ্ব বাণিজ্যে বর্তমানে কোণঠাসা আমেরিকা। অন্যদিকে, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ যখন চিনকে এড়িয়ে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে তৎপর, ঠিক সেই সময় এবার সরাসরি হুমকি, হুঁশিয়ারির পথে হাঁটল ড্রাগনের দেশ।