স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ এপ্রিল : সোমবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে ভ্যাটিকান। পোপের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। গত বছর ইটালিতে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে পোপের সঙ্গে দেখা হয়েছিল নমোর। সেই সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী লেখেন,’পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রভু খ্রিস্টের আদর্শ বাস্তবায়নে উৎসর্গ করেছিলেন।’
ভ্যাটিকানের তরফে কার্ডিনাল কেভিন ফেরেল জানান, সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে প্রয়াত হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। শোকপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে মোদি লেখেন, ‘পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এই মুহূর্তে বিশ্বের ক্যাথলিক সম্প্রদায়কে আমি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। পোপ ফ্রান্সিসকে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ কাছে সর্বদা তাঁর করুণ, নম্র মনোভাব এবং আধ্যাত্মিক চেতনার জন্য স্মরণ করবে। ছোটবেলা থেকেই তিনি প্রভু খ্রিস্টের আদর্শ বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি দরিদ্র ও নিপীড়িতদের সেবা করতেন। সকলের জন্য আশার আলো ছিলেন তিনি। আমি তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করছি। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সর্বাত্মক উন্নয়নের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার আমাকে অনুপ্রাণিত করে। ভারতের জনগণের প্রতি তাঁর স্নেহ সর্বদা সকলের মনে থাকবে। ঈশ্বরের আলিঙ্গনে তাঁর আত্মা চিরশান্তি পাক।’
জি-৭ সম্মেলনে মোদিকে দেখে করমর্দন নয়, আলিঙ্গনও করছিলেন পোপ। করোনাকালে গোটা বিশ্বের জন্য প্রতিষেধক তৈরির কাজে ভারতের অগ্রণী ভূমিকার কথা বলে মোদি সরকারকে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন তিনি। সেসময়ই পোপকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৮৮ বছর বয়সি পোপ। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংকটজনক অবস্থায় ইটালির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল পোপ ফ্রান্সিসকে। ২১ বছর বয়সে তার একটি ফুসফুসের অংশ বাদ দিতে হয়। যার জেরে সমস্যা ছিলই। সম্প্রতি সেটাই গুরুতর আকার নেয়। শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর দুটি ফুসফুসই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। পাশাপাশি বুকের এক্স-রে ও আরও যে সব পরীক্ষা করানো হয়েছিল তার রিপোর্টও খুব একটা স্বাভাবিক ছিল না।
তবে খানিকটা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান পোপ। তারপরে চিকিৎসকরা তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন। অসুস্থতার কারণে গুড ফ্রাইডের উপাসনা বা ইস্টারের বিশেষ উপাসনা- কোনও কিছুতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি পোপ। কিন্তু রবিবার অসুস্থতা সত্ত্বেও সকলকে চমকে দিয়ে ইস্টারের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। হাজির হন ইস্টারের বিশেষ জমায়েতে। সেন্ট পিটার্স স্কোয়্যারে ৩৫ হাজারেরও বেশি পুণ্যার্থীর দিকে হাত নাড়েন। ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে বলেন, “ভাই এবং বোনেরা, হ্যাপি ইস্টার।” কিন্তু পরের দিনই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।