স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৮ এপ্রিল : শুক্রবার সারা ভারত কৃষক সভা রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যা ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে এদিন সম্পাদক মন্ডলীর সভায় আলোচনা হয়। এই আলোচনায় সরকারের কৃষক বিরোধী মনোভাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী তিন মাস আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। শুক্রবার সারা ভারত সভা রাজ্য কমিটির কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দেন সারা ভারত কৃষক সভায় রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর। তিনি বলেন, রাজ্যে বিগত বছর আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যা সংগঠিত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের।
অথচ কৃষকরা সরকার থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পায়নি। এই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জল সেচের অভাবে বরু ফসল একেবারেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। জল সেচের অভাবে জমি চৌচির হয়ে গিয়েছিল। এইগুলি সামনে উঠে আসার পর সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু গত দুদিনের বৃষ্টিতে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কৃষকরা। কিন্তু এই বৃষ্টিতে ফসল পুরোপুরি ভাবে হবে না। তাই সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষ থেকে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে গণডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যে সমস্ত জল সেচের মেশিন নষ্ট হয়ে আছে সেগুলি মেরামত করার জন্য গত বিধানসভা বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।
তিনি আরো বলেন বর্তমান সরকার বক্তৃতায় অনেক কিছুই বলছেন, কিন্তু রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো কৃষকরা। আলোচনায় আরো উঠে এসেছে, ত্রিপুরাতে বাংলাদেশে সীমান্ত রয়েছে ৮৫৬ কিলোমিটার। এরমধ্যে ২৬ কিলোমিটার জায়গায় কাঁটাতারে বেড়া হয়নি। পুরনো আইনে কথা ছিল এগুলি দেড়শো মিটারের মধ্যে হতে হবে। এগুলি নিয়ে বিগত দিনে প্রতিবাদ হয়েছিল। তারপরও কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএফ -এর বর্ডার রোডে এক থেকে দেড় কিলোমিটার ভেতরে কাঁটাতার লাগিয়ে দিয়েছে। যার ফলে কাঁটা তারের বাইরে ভারতবর্ষে কৃষকদের যে জমি সেটা প্রায় লক্ষাধিক একরের অধিক হবে। গত ছয় বছরের আশি থেকে ৯০ ভাগ জমি অনাবাদি পরে রয়েছে। কারণ বিএসএফ কৃষকদের পাওয়ার টিলার মেশিন, হাল চাষের গরু নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। এবং যে জল সেচের মেশিন গুলি ছিল সেগুলি পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই আগামী মে মাসে প্রথম দিকে সীমান্ত এলাকার কৃষকদের নিয়ে রাজ্যভিত্তিক একটি কনভেনশন করা হবে। জুন মাসে সমস্ত জেলা শাসকের কাছে গিয়ে ব্যাপকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে। মূলত ছয় দফা দাবি এই দিনের আলোচনায় উপস্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দাবি হলো গেটের সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে, সকাল সাতটা থেকে গেট খুলে রাখতে হবে। পাশাপাশি কৃষকদের স্থায়ীভাবে পাস দিতে হবে। শেষ করে কৃষকরা যাতে সব ধরনের ফসল উৎপাদন করতে পারে তার জন্য। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা রতন দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।