Wednesday, March 19, 2025
বাড়িরাজ্যত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের তিন দিনের মহা আয়োজন শুরু হচ্ছে একুশে

ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের তিন দিনের মহা আয়োজন শুরু হচ্ছে একুশে

আগরতলা, ১৮ ফেব্রুয়ারি।। রাজ্যের গর্বের পালকে যোগ হচ্ছে আরো এক নতুন অধ্যায়। উড়ান এর আয়োজনে “ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল” আয়োজিত হতে চলেছে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন এই মহা উৎসবের শুভ সূচনা হবে। ২১,২২ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি চলবে এই লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের আবেগঘন উৎসবমুখর আয়োজন।

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি বিকাল পাঁচটায় প্রথমবারের মতো ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল এর শুভ সূচনা করার জন্য রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর(ডাঃ) মানিক সাহা মহোদয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই মহতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে তেলেঙ্গানার মহামান্য রাজ্যপাল জিষ্ণু দেববর্মা মহোদয়ের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে রাজ্যের মাননীয় মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীকেও। তিনদিনের এই আয়োজনকে সাজানো হয়েছে নানা আঙ্গিকে। এই লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত থাকতে দেশ এবং বিদেশ থেকে কবি-সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, শিল্পী এবং বুদ্ধিজীবীরা ২০ তারিখ পদার্পণ করবেন আগরতলায়। লিটারেচার ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে এত বড় আয়োজন ত্রিপুরা রাজ্যে খুব সম্ভবত এবারই প্রথম। এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন বুকার পুরস্কার বিজয়ী, ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী, পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারপ্রাপক সহ আরো গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব। ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভালের গরিমা বাড়িয়ে এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রথম মহাকাশচারী বিজ্ঞানী রাকেশ শর্মা, পদ্মশ্রী, ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী সর্বজন শ্রদ্ধেয় চিকিৎসক রবি কান্নান, বুকার পুরস্কার বিজয়ী গীতাঞ্জলি শ্রী প্রমুখ। এই আয়োজনে কথায় এবং কবিতায় অংশ নেবেন কবি জয় গোস্বামী, কথায় সুরে, গানে গানে মালা গাঁথবেন শিল্পী স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তা। থাকবেন জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভালে ঝড় তুলে আসা রাজু বাউল। বর্ধমানের বিখ্যাত বহুরূপী দল আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের মঞ্চ কাঁপিয়ে তুলবেন।

গানের ছন্দে যখন সেঁজুতি গুপ্ত দর্শক শ্রোতাদের মন জয় করবেন, তখন ডাঃ কুণাল সরকার তার কথার জাদুতে ভরিয়ে তুলবেন গোটা প্রেক্ষাগৃহ। পিতা সমরেশ বসুর কালজয়ী উপন্যাস নিয়ে কথা বলবেন তার সুযোগ্য পুত্র লেখক ও চিকিৎসক ডাঃ নবকুমার বসু। রাজ্যের গর্ব, রবীন্দ্র গবেষক বিকচ চৌধুরী অভিজ্ঞতা ও অনুভবের ডালি মেলে ধরবেন উৎসবের দ্বিতীয় দিনের চতুর্থ সেশনে। কথায় কথায় মায়া ছড়াবেন বাচিক শিল্পী চন্দ্রিমা রায়। আবার কথা আর গানের মায়ায় ইন্দ্রজাল রচনা করবেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা ও পরিচালক, গায়ক অঞ্জন দত্ত। গোটা শহর যখন ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে প্রস্তুত, তখন ঢাকের বাদ্য বাজিয়ে ঝড় তুলবেন পদ্মশ্রী গোকুল চন্দ্র দাস । তিনদিনের লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের আয়োজন এভাবেই এক মহা আয়োজনের রূপ নেবে আগরতলায়। আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাহিত্যের সঙ্গে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে জড়িয়ে আলোচনার সূত্রপাত করবেন বরেণ্য চিকিৎসক পদ্মশ্রী রামন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী ডাঃ রবি কান্নান। এরপরই পদ্মশ্রী গোকুল ঢাকির ঢাকের জাদু। এ মায়া কাটতে না কাটতেই মঞ্চে আসবেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত। আগামী ২২শে ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের দুই নং প্রেক্ষাগৃহে সকাল ১১ টায়। সেখানে কথা আর গানকে একসূত্রে গেঁথে মঞ্চে থাকবেন চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক, গায়ক অঞ্জন দত্ত এবং প্রকাশক অপু দে। বেলা বারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দ্বিতীয় সেশনে কথা বলবেন ভারতের প্রথম মহাকাশচারী বিজ্ঞানী রাকেশ শর্মা। বিজ্ঞান আর সাহিত্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন মর্ত্য থেকে মহাকাশ নিয়ে তার এক অপূর্ব বিশ্লেষণের সাক্ষী থাকবে আগরতলা।

 এদিন বিকাল চারটা থেকে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত গল্প , কবিতা, উপন্যাসে সাহিত্যের আড্ডায় দ্যুতি ছড়াবেন সাহিত্য একাডেমী বিজয়িনী সরো খাইবাম গম্ভীনি, নরেশ দেববর্মা, দরবা সায়নাম শ্রীনিবাসাচারিয়া, ক্রাইরী মগ চৌধুরী, এবং শ্রীলঙ্কা থেকে আগত লেখক ও অনুবাদক রশ্মিকা মান্ডাওয়ালা। সন্ধ্যা পৌনে ছটা থেকে পৌনে সাতটা পর্যন্ত কথার মালায় মোহবিষ্ট করে রাখবেন বুকার পুরস্কার বিজয়িনী গীতাঞ্জলি শ্রী এবং রবীন্দ্র গবেষক বিকচ চৌধুরী। এরপর রাত পৌনে সাতটা থেকে সোয়া সাতটা পর্যন্ত কথা বলবেন ডাঃ নবকুমার বসু এবং অনুরাধা শর্মা পূজারী। রাত সোয়া সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত কথায় কথায় মালা গাথবেন চন্দ্রিমা রায়। এরপর গানে গানে মঞ্চ আলোকিত করবেন ডঃ সেঁজুতি গুপ্ত। ২৩ শে ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে ছটা পর্যন্ত আলোচনায় অংশ নেবেন অরুণ কমল, অশোক দেব, ড. অনির্বাণ গাঙ্গুলী, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম মুখার্জী এবং পারিজাত দত্ত। সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকে সাতটা পর্যন্ত আলোচনায় থাকবেন ডাঃ কুণাল সরকার। রাত সোয়া সাতটা থেকে সোয়া আটটা পর্যন্ত কবিতা পাঠে নিমগ্ন হবেন কবি জয় গোস্বামী। এরপর জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল এ ঝড় তোলা রাজু বাউল তার দল নিয়ে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের দুই নং প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চে উঠবেন। ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালকে কেন্দ্র করে গোটা রবীন্দ্র ভবন চত্বর সেজে উঠবে উৎসবের সাজে। মৃৎ শিল্পের অনুপম নিদর্শন সহ ছবি আর সোসাইটি ফর আর্ট রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং এর সহযোগিতায় ভাস্কর্যের মন মাতানো প্রদর্শনী, বইয়ের স্টল আর বাহারি খাবারের আয়োজন থাকবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সঙ্গে রবি ঠাকুরের পদপ্রান্তে রাজ্যের শিল্পীদের মন মাতানো আয়োজন রবীন্দ্র শতবার্ষিকীভবনের প্রবেশদ্বারেই উৎসব সমারোহকে ভিন্ন আঙ্গিক দেবে।

তবে এই গোটা এই মহা সমারোহ সম্ভব হয়েছে যাদের দরাজ সহযোগিতায়, অবশ্যই সেই মহান প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে উড়ান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম– টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ত্রিপুরা, শ্যামসুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স , ত্রিপুরা স্কিল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ব্যাম্বো মিশন, ওএনজিসি , আমার গ্রাফিক্স, নীলজ্যোতি ট্রাভেলস, এসবিআই , লংতরাই, ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম, ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাংক, ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংক, টিএনজিসিএল, আইসিএ ত্রিপুরা, ওটিপিসি, নেভি টাস, হ্যালুসিনেট , এমএমডিইউপি, ট্রেডা,আইএএস সহ আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এদের প্রত্যেকের কাছেই ত্রিপুরা লিটারেচার ফেস্টিভ্যালের আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উড়ান কৃতজ্ঞ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য