স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৬ এপ্রিল : আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে, স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর পানীয় জল এবং স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর। সেই লক্ষ্য রেখে মিশন মুডে জল জীবন মিশনের কাজ চলছে দপ্তর। শনিবার বিকেলে মহাকরণের সাংবাদিক সম্মেলন করে সাফল্যের দিক তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হয়েছে জল জীবন মিশন।
এর আগে ছিল অটল জলধারার। ভারতবর্ষের সরকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে গুরুত্বপূর্ণ স্কিমগুলি রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম স্কিম জল জীবন মিশন। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিটা বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। সেটা কি সামনে রেখে সারা দেশের সাথে ত্রিপুরা রাজ্যেও কাজ চলছে। সারা রাজ্যে গ্রামে ৭ লক্ষ ৬০ হাজার ৫২ টি বাড়ি রয়েছে। ২০১৯ সালে জল জীবন মিশন শুরু হওয়ার আগে রাজ্যে ২৪ হাজার ৫০২ টি বাড়িতে জলের টেপ কানেকশন ছিল। ৩.২২ শতাংশ বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হতো। কিন্তু জল জীবন মিশন রাজ্যে আসার পর ২০১৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৭৩ টি বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অটল জলধারার থেকে শুরু করে মোট ৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৪৭৫ টি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত রাজ্য ৫০.৩২ শতাংশ বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। জাতীয় স্তরে জল জীবন মিশনের মাধ্যমে ৪৮.৮১ শতাংশ বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। দেশে ৯ কোটি ৪২ লক্ষ ৯২ হাজার ৬৩৪ টি বাড়িতে জল প্রদান করেছে। পানীয় জল সরবরাহ দিকে জাতীয় স্তর থেকে এগিয়ে রয়েছে রাজ্য। রাজ্যের নিরিখে ত্রিপুরা দেশে ১৬ নম্বর স্থানে রয়েছে। এর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে গোয়া।
সেখানে ১০০ শতাংশ বাড়িতে জল পৌছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে ত্রিপুরা পঞ্চম স্থানে রয়েছে। ত্রিপুরায় দ্রুত গতিতে কাজ হচ্ছে। ১৪৭৬ টি পাড়াতে ১০০ শতাংশ পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ১৪৫৭ টি পাড়াতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল পৌছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আর ২৯৬ টি পাড়াতে কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। খুব দ্রুত সেইসব পাড়ায় জল সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু করা হবে। স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে বিশুদ্ধ পানীয় জল প্রদান করার নির্দেশ রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। ৪৫৩৬ টি স্কুলের মধ্যে ১০০ শতাংশ বিশুদ্ধ পানীয় জল প্রদান করা হয়েছে ৩৪০৭ টি স্কুলে। ১১২৯ টি স্কুলে জল প্রদান করা বাকি রয়েছে। অন্যদিকে ৮৯৩২ টি অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রের মধ্যে ৪৭৩৫ টি সেন্টারে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে দপ্তর কাজ করছে বলে জানান তিনি। ২০২২ এর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। সম্প্রতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর দিল্লি সফর প্রসঙ্গে জানান ডোনার মন্ত্রকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে ডোনার মন্ত্রকের মন্ত্রী কিষাণ রেড্ডীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে কালচারাল হাভের বিষয়ে কথা বলেন। প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে আর্থিক সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কবে নাগাদ এবং কতটাকা দেওয়া হবে তা পরবর্তী সময়ে জানাবেন বলে জানিয়েছেন। রাজ্য থেকে ১০০ কোটি টাকার কালচারাল হাভ করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। অন্যদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের ক্রীড়া পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজানোর জন্য কেন্দ্রীয় ক্রিড়া মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুরের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। কিছু দিনের মধ্যে একজন অফিসার রাজ্যে আসবেন। স্টেডিয়াম সহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখে রিপোর্ট নিয়ে গিয়ে প্রদান করবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া কোন স্কীমে কতটাকা প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি। এদিন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে।