স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ ফেব্রুয়ারি : বাংলা ভাষা আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভাষা। ১৯৯৯ সালের ২৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২১ ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকেই ২১ ফেব্রুয়ারি আর বাঙালির একার নয় সমগ্র বিশ্বের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও নিজের মাতৃভাষাকে নিয়ে গর্ব করার দিন। দিনটি বাংলা ভাষা ব্যবহৃত জনগণের কাছে একটি গৌরব উজ্জ্বল দিন। দিনটি রাজ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার রাজ্য সরকার ও বাংলাদেশ সরকারি হাইকমিশনারকে যৌথ উদ্যোগে আগরতলা রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ, তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, মেয়র দীপক মজুমদার সহ অন্যান্যরা। শুরুতেই ভাষা শহীদদের জন্য নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধা জানান অতিথিরা। এদিন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের ওয়েবসাইটের সূচনা করা হয়। বিরাট আন্দোলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষিত হয়েছে।
অথচ এখনো পাকিস্তানিরা দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চায়নি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের যে নাকারাত্মক চিন্তা ভাবনা রয়েছে তা প্রমানিত। এই অবস্থায় দেরিতে হলেও পাকিস্তানের বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কথা বলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। অন্যদিকে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন পৃথিবীতে ৬ হাজারের উপর ভাষা রয়েছে। এই ভাষায় মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে। প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলে। সেই সমস্ত ভাষাকে সম্মান দেওয়ার জন্য ইউনেস্কো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে। যাতে করে কোন ভাষা হারিয়ে না যায়। একটা ভাষা হারিয়ে গেলে সেই সংস্কৃতি হারিয়ে যায়। প্রত্যেক ভাষাকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে বলে আহ্বান জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
সোমবার রাজ্য সরকার এবং বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার যৌথ উদ্যোগে সকালে প্রভাত ফেরীর আয়োজন করা হয়। এদিন শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ এবং বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে রবীন্দ্রভবনে এসে শেষ হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্র ভাষা বাংলার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ১৯৯২ সাল থেকে রাজ্যে মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা শুরু হয়। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাঙালি, ককবরক ভাষী সহ সমস্ত অংশের মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে। পৃথিবীতে বহু ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। ছয় হাজারের উপর ভাষা রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত কোন না কোন ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। নিজের ভাসাকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি অন্য ভাষা যাতে হারিয়ে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে বলে জানান মন্ত্রী রতন লাল নাথ।