স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ অক্টোবর : নাবালিকাকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যু দণ্ডের সাজা ঘোষণা করলেন ধর্মনগর বিশেষ আদালতের বিচারক অংশুমান দেববর্মা। সাজা প্রাপ্ত আসামিরা হল সৌরভ চন্দ্রনাথ এবং দিবাকর দাস। ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ১৯ জুন ধর্মনগরের পদ্মপুর এলাকায়।
আদালতের রায়ে খুশি নাবালিকার পরিবার। জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৯ জুন ধর্মনগরের পদ্মপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় এক নাবালিকা। অনেক খুঁজাখুঁজির পর নাবালিকাকে খুজে না পেয়ে পরিবারের লোকজন সেইদিন রাতের বেলায় ধর্মনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করে। ২০ জুন হাপলং চা বাগানের কার্গিল টিলা এলাকা থেকে উদ্ধার হয় এক নাবালিকার মৃতদেহ। ধর্মনগর মহিলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ নাবালিকার পরিবারের লোকজনদের খবর দেন। নিখোঁজ নাবালিকার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ শনাক্ত করে। তারপর ধর্মনগর মহিলা থানার পুলিস একটি খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। পুলিশ সৌরভ চন্দ্রনাথ ও দিবাকর দাস নামে দুই জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার কথা স্বীকার করে।
পড়ে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মৃত নাবালিকার বস্ত্র উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরন করা হয়। ল্যাব রিপোর্ট থেকে জানা যায় অভিযুক্তরা হত্যার আগে নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে। ধৃত অভিযুক্তরা আদালতে বিচারকের সামনে স্বীকার করে কি ভাবে তারা নাবালিকাকে অপহরণ করেছে, কোথায় নিয়ে ধর্ষণ করেছে এবং কি ভাবে হত্যা করেছে। এইদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। তারপর আদালতে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালিন সময় মোট ৪১ জন সাক্ষির সাক্ষ্য বাক্য গ্রহণ করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ধর্মনগর বিশেষ আদালতের বিচারক দুই অভিযুক্তকে পক্সো আইনের ছয় ধারায়, IPC 376D ধারায় এবং IPC 302 ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। মঙ্গলবার বিচারক দুই আসামির সাজা ঘোষণা করেন। পক্সো আইনের ছয় ধারায় আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল, IPC 376D ধারায় আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল এবং IPC 302 ধারায় আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যু দণ্ডের নির্দেশ দেন ধর্মনগর বিশেষ আদালতের বিচারক। আদালতের এইদিনের রায়ের ফলে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। পাশাপাশি কন্যা হারা নাবালিকার পরিবার আদালতের এই রায়ে খুশি। কারন তারা তাদের কন্যাকে ফিরে পাবে না ঠিক, কিন্তু তাদের কন্যার হত্যাকারিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হয়েছে।