Tuesday, February 11, 2025
বাড়িরাজ্যবিকাশ ত্রিপুরায় শিক্ষা ব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকারা, অভিভাবক মহলে চরম...

বিকাশ ত্রিপুরায় শিক্ষা ব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকারা, অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ

স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ১৫ জানুয়ারি : শিক্ষক শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ে গেলেও সময়মতো আসেন না এবং যেদিন শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে আসেন সেদিন তাদের মর্জিমাফিক নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেন। এমনই অভিযোগ করেছেন কৈলাসহরের শিববাড়ি সিনিয়র বেসিক স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে। কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনে ঊনকোটি এডিসি ভিলেজের রিয়াং বস্তি এলাকায় অবস্থিত শিববাড়ি সিনিয়র বেসিক স্কুল। কৈলাসহরের মূল শহর থেকে প্রায় পনেরো কিলোমিটার দূরে উচুঁ পাহাড়ে অবস্থিত রিয়াং বস্তিটি।

রিয়াং বস্তি এলাকায় প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের বসবাস রয়েছে। তারা রিয়াং সম্প্রদায়ের। গ্রামের প্রায় পঁচানব্বই শতাংশ পরিবারই বি.পি.এল পরিবার ভুক্ত। গ্রামের ৬৫ বছরের প্রবীণ নাগরিক স্বাধীনলা রিয়াং জানান যে, গ্রামে শিববাড়ি সিনিয়র বেসিক সরকারি স্কুলটি ১৯৮৬ সালে স্থাপিত হয়েছিলো। গ্রামে সরকারি স্কুলটি থাকার ফলে গ্রামের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করার জন্য খুবই সুবিধা হতো। স্কুলটি ভালো ভাবেই চলছিলো। ইদানীং কয়েক বছর ধরে স্কুলটির বেহাল অবস্থা। স্কুলে পড়াশোনা হয় না। স্কুলটি নিয়মিত ভাবে খোলা হয় না। ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে আসলেও স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা নিয়মিত ভাবে আসে না। যার ফলে স্কুলটি প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে। যদি মাঝে মধ্যে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে আসেন তাও আবার সময় মতো আসেন না। এগারোটা সাড়ে এগারোটা নাগাদ এসে সাড়ে বারোটা নাগাদ স্কুল বন্ধ করে চলে যান শিক্ষক শিক্ষিকারা। স্কুলে প্রায় এক বছর ধরে মিড ডে মিল বন্ধ। এসব কারনে ইদানীং কালে গ্রামের অভিভাবকরা এই স্কুলে ছেলেমেদের না পাঠিয়ে পাশের গ্রামের সরকারি স্কুলে পাঠাচ্ছেন।

 তাছাড়া, স্কুলটির পাকা দালান বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করানোয় স্কুলের ছাদের টিন গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ক্লাস রুমের কয়েকটি দরজা জ্বানালা কে বা কাহারা নিয়ে গেছে। বুধবার দুপুর দেড়টায় স্থানীয় সংবাদ প্রতিনিধিরা স্কুলে গিয়ে দেখেন যে, স্কুলটি তালাবন্ধী। গ্রামের ৬৫ বছরের প্রবীণ নাগরিক স্বাধীনলা রিয়াং সহ আরও অনেক গ্রামবাসীদের সাথে আলোচনা করে স্কুলের এই বেহাল অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নাম টেম বাহাদুর থাপ্পা। কৈলাসহরের বিদ্যালয় পরিদর্শক রাধন ত্রিপুরাকে জিজ্ঞেসা করলে তিনি জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক টেম বাহাদুর থাপ্পা সহ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা নিয়মিত ভাবে না যাওয়ার কারনে বিগত এক বছরের মধ্যে দুই বার শোকজ করা হয়েছিলো। স্কুলে বর্তমানে সাতাশ জন ছাত্র এবং পঁয়ত্রিশ জন ছাত্রী মিলে মোট ৬২ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। স্কুলে পাঁচজন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। দপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত ভাবে প্রতি মাসে মিড ডে মিলের জন্য চাল ডাল দেওয়া হচ্ছে বলে জানান। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা খুব শীঘ্রই গ্রহণ করবেন এবং স্কুলটি প্রতিদিন খোলা রেখে পড়াশোনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বিদ্যালয় পরিদর্শক রাধন ত্রিপুরা খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান। এর দ্বারা বুঝা যায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার হার কতটা বেহাল হয়ে আছে। আর এটাই বিকাশ ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থার হাল হাকিকাত বলে মনে করছে সকলে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য