স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ ফেব্রুয়ারি : আশ্রম থেকে উদ্ধার ১১ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়ার রহস্যজনক ঝুলন্ত মৃতদেহ। ঘটনা শুক্রবার রাতে আমতলী থানার অন্তর্গত পশ্চিম রানীখামার স্থিত রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ আশ্রমের বাথরুম থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত ছাত্রের নাম জয় দাস। মৃত ছাত্রের বাবার নাম টিটন দাস, মা মনিসা দাস। বাড়ি শিলচর। এই ক্ষেত্রে আশ্রমের ছাত্ররা অভিযোগ তোলে হরিচরণ মালাকার এবং স্বামী মৃত্যুঞ্জনা মহারাজের বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ আবাসনে প্রতিনিয়ত তাদেরকে মারধোর করা হয়। তাই ছাত্ররা এখানে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই আশ্রমে ভালো ব্যবস্থা নেই বলে জানায় আবাসিকের ছাত্ররা। তারা আরও জানায় আশ্রমের মধ্যে চলছে নৈরাজ্য। প্রতিনিয়ত তাদের মারধর করে দায়িত্বে থাকা দুই ব্যক্তি।
ক্যামেরার সামনে আশ্রমের তিন ছাত্র তাদের শরীরে আঘাতে চিহ্ন দেখায়। তাদের যেকোনো বিষয়ে এ ধরনের শারীরিক অত্যাচার করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর আমতলী থানার পুলিশ আশ্রমের দায়িত্ব প্রাপ্ত হরিচরণ মালাকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে গোটা আশ্রমের পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে বহু অভিযোগ রয়েছে। এই ক্ষেত্রে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি উঠতে শুরু করেছে। অন্যদিকে কালিমালিপ্ত হচ্ছে রামকৃষ্ণ আশ্রমের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে অন্যান্য শিশুর মা বাবা। তারা এ বিষয়ে আগে অবগত ছিল না। কিন্তু আজকে আশ্রমে এসে জানতে পারে শিশুদের রড দিয়ে মারধর করা হতো। এখন পর্যন্ত এই আশ্রম থেকে দুজন শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আজকে যে শিশুটি মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী ক্ষোভ উগড়ে আশ্রম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এদিকে আশ্রমের সম্পাদক প্রদীপ সরকার অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে মহারাজ মারধরের ঘটনাটি অস্বীকার করেন। পরবর্তী সময়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নোত্তরে তিনি জানান, তিনি কর্কট রোগে আক্রান্ত।
প্রায় সময় অসুস্থ থাকেন। শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন আশ্রমের সভাপতি এবং সম্পাদক প্রদীপ সরকার। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে স্পষ্ট হবে খুন নাকি আত্মহত্যা। এদিকে প্রশাসনের যে চরম কাফিলতি রয়েছে সেটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ আগরতলা শহরের বুকে এবং শহরতলী এলাকাগুলোতে বহু আশ্রম রয়েছে। সেসব আশ্রম সরকারিভাবে এবং মানুষের কাছ থেকে মোটা অংক সংগ্রহ করলেও শিশুদের দেখভাল ঠিকভাবে করে না। সঠিকভাবে পড়াশোনা এবং মানুষ করা পরিবর্তে তাদের দিয়ে আশ্রমে সমস্ত কাজ করানো হয়। এমনকি জনগণের পয়সা দিয়ে মোটা অংকের বিনিময় শিশু সুরক্ষা কমিশনের দায়িত্বে রয়েছেন বহু আধিকারিক, কিন্তু নিয়মিত আশ্রমগুলিতে পরিদর্শন বা শিশুদের কিভাবে সেখানে পরিষেবা দেওয়া হয় সেগুলি নিয়ে কোন ধরনের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না বলা চলে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অকালে ঝড়ে যাচ্ছে শিশুর প্রান।