Thursday, January 23, 2025
বাড়িরাজ্যজনগণের কাছে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ চাইলেন সুদীপ, অপরাধ মুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত...

জনগণের কাছে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ চাইলেন সুদীপ, অপরাধ মুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সরকার পরিচালনা করবে বলে দাবি তাঁর, যোগদান করলেন দিবাচন্দ্র রাঙ্খল

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ ডিসেম্বর : বিজেপির বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ২৪ ঘন্টার পর বৃহস্পতিবার কংগ্রেসে যোগদান করলেন দিবাচন্দ্র রাঙ্খল। এদিন আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে কংগ্রেসের জনসভায় করমছড়ার প্রাক্তন বিধায়ক দিবাচন্দ্র রাঙ্খলের হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দিয়ে দলে স্বাগত জানান প্রদেশ কংগ্রেসের ইনচার্জ ড. অজয় কুমার, বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর বর্মন, কংগ্রেস নেতা আশীষ কুমার সাহা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এর সাথে এদিন যোগদান করেন কোন এক সময় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করা যুব নেতা রাকেশ দাস।

 তাকেও এদিন কংগ্রেসে স্বাগত জানানো হয়। এদিনের আয়োজিত সভায় বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বক্তব্য রেখে বলেন, কংগ্রেস বাইক বাহিনী নয়, হেলমেট বাহিনী নয় এবং মানুষকে ভয় দেখিয়ে নয়। কংগ্রেস মানুষকে ভালবাসতে জানে। এটা কংগ্রেসের পুঁজি। আগামী দিনে ত্রিপুরা কংগ্রেস কিছু করে দেখাতে চায়। কিন্তু বিজেপির কিছু করে দেখানোর ইচ্ছে নেই। কংগ্রেস চায় এই রাজ্যের উন্নয়ন, জাতি জনজাতির সকল অংশের মানুষের মুখের হাসি। তাই কংগ্রেসকে পাঁচ বছরের জন্য ত্রিপুরার মানুষের কাছে সুযোগ দেওয়ার কথা বলছে। এমনটাই জানান সুদীপ রায় বর্মন। তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি পালনে সম্পূর্ণভাবে ঠকবাজ হয়েছে এই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।

সরকারে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বলেছিল ৫০ হাজার শূন্যপদ পূরণ করা হবে। কিন্তু মিথ্যাচার সরকার কোন শূন্য পদ পূরণ করেনি। পাশাপাশি সপ্তম সপ্তম বেতন কমিশনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি, কিন্তু পাঁচ বছরে সপ্তম বেতন কমিশন দিতে না পারায় ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এমনকি অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটাও পালন করতে পারেনি। বরং অনিয়মিত বহু কর্মী পাঁচ বছরে কাজ হারিয়েছে। ১০,৩২৩ এর স্থায়ী সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। স্থায়ী সমাধান দূরের কথা বরং শিক্ষকদের উপর পুলিশ দিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। আন্দোলন করতে রাস্তায় নামলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশিক্ষা শিক্ষক এবং রামসা শিক্ষকদের নিয়মিত করণ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি পালনেও ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি সরকার। হাইকোর্টে রায় থাকার পরেও সর্বশিক্ষা শিক্ষকদের নিয়মিত করণ করা হচ্ছে না। আপরদিকে রোজভ্যালি সহ চিটফান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। দেখা গেছে সরকারি প্রতিষ্ঠিত হয়ে সুষ্ঠু তদন্তে দূরের কথা চিটফান্ডের সম্পত্তি বিক্রি করে জনগণের পয়সা না দিয়ে এর মজা লুটছে সরকার। আগে কখনো এমন রাজনৈতিক দল দেখা যায়নি, পুলিশকে এত নতজানু হতে দেখা যায়নি। রাজ্যের মানুষ অন্যায়কে প্রত্যক্ষ করলেও প্রতিবাদ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে রাজ্যের মানুষ এ সরকারের আমলে। যে রাজনৈতিক দলগুলি বিজেপির প্রতিবাদ জানাতে চায় তাদের উপর আক্রমণ সংঘটিত হয়, বিরোধী দলের বাড়িঘর ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের চিত্র আগে কখনো দেখা যায়নি। তাই এই সরকারের উপর আস্হা রেখে লাভ নেই। এ সরকার কিছু করবে না বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন ১০,৩২৩ তীব্র শীতের মধ্যে অনশন মঞ্চে বসে যে কষ্ট করছে, সেটা জন্য সরকারে যদি কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে যথার্থ ভূমিকা পালন করবে বলে আশ্বাস দেন। আরো বলেন আজকে যুব সমাজ নেশার ডুবে আছে। নেশার কবল থেকে ছাত্র যুবকদের বাঁচাতে চায় কংগ্রেস। কারণ বহু মা’রকূল খালি হচ্ছে নেশার কারণে। নেশা রুখতে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। তাই কংগ্রেস নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে চায়। ছাত্র যুবদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে চায় বলে জানান তিনি। লুটেপুটে নিচ্ছে এই বিজেপি সরকারের মন্ত্রী বিধায়করা। পাঁচ বছর ত্রিপুরা রাজ্যে কাজ করার সুযোগ চায় কংগ্রেস।

এবং সরকারটা ভালোভাবে পরিচালনা করতে চায়। দুর্নীতিমুক্ত এবং অপরাধমুক্ত সরকার পরিচালনা করতে চায় কংগ্রেস। এদিন এমন ভাবেই জনদরবারে দাবি করেন সুদীপ রায় বর্মন। থানা থেকে শুরু করে পুলিশ সুপার পর্যন্ত যারা রয়েছে তারাও এই রাজ্যের সন্তান। তারা এ রাজ্যটাকে শ্মশানে পরিণত করতে চাই নাকি রাজ্যের উন্নয়ন চায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুদীপ রায় বর্মন। তিনি আরো বলেন তাদের পরিবারও এই রাজ্যে রয়েছে। তাই আগামী দিনের কথা ভেবে যাতে পুলিশ চুপ করে বসে না থেকে, আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আরো বলেন যারা আজকে রাষ্ট্রবাদী পার্টি বলে দাবি করছে তাদের ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখা দরকার। তারা ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমা চাইত। যাতে জেলে যাওয়া থেকে বাঁচতে পারে। কিন্তু একমাত্র কংগ্রেসের রয়েছে যারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জেলে গেছে। দেশকে ব্রিটিশদের থেকে মুক্তির স্বাদ দিয়েছে। বিজেপির মতো বিভাজনের রাজনীতি করেনি, দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করেছে কংগ্রেস বলে দাবি শ্রী বর্মন। কংগ্রেস নেতা অজয় কুমার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহাকে অবসরে পাঠাতে জনগণ প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন ডাক্তার মানিক সাহাকে অনুশীলন করার জন্য নির্বাচনের আগে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন বাইকবাহিনী, মিথ্যাচার, ঘৃণা এবং বিজেপির উল্টো গুনা শুরু হয়ে গেছে। সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে জোট করার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে অজয় কুমার আরো জানান এখনো কোনো কিছুই বলা হয়নি। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা ইতিমধ্যেই ভয় পেয়ে গেছেন। তাই “জো ডর গেয়া, বো মর গেয়া।”কিন্তু ত্রিপুরাবাসী এবার মুখ্যমন্ত্রীকে তাড়াবে এটা নিশ্চিত। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সমীর রঞ্জন বর্মন বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ দীর্ঘ পাঁচ বছর কংগ্রেসের অপশাসন দেখেছে। তাই এই অপশাসন থেকে ত্রিপুরা মুক্ত করতে দল-মত নির্বিশেষে সকলে কংগ্রেসকে সমর্থন করার আহ্বান জানান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর বর্মন। বিজেপি’র উল্টো শুরু হয়ে গেছে। আভি তো টেইলার হে, পিকচার অভি বাকি হে। মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহাকেও অবসরে যেতে হবে বলে জানান প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল রায়।এদিন সভায় কয়েক শতাধিক কর্মী সমর্থক উপস্থিত ছিল। সভা হওয়ার আগে আগরতলা শহরে একটি মিছিল সংঘটিত করে। উল্লেখযোগ্য কর্মী সমার্থক এই দিনের মিছিলে উপস্থিত ছিল।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য