স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ ডিসেম্বর : নির্বাচন এগিয়ে আসতেই এ ডি সি পরিচালনা করা তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললো রাজ্যের প্রধান শাসক দল বিজেপি। অভিযোগ এ ডি সি -তে তিপ্রা মথার সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক দুর্নীতি সংগঠিত হচ্ছে। সরকার অর্থ প্রদান করছে – সেই জায়গায় সরকারী ভাবে প্রদেয় অর্থ আত্মসাৎ করার ঘটনা ঘটছে এডিসি এলাকায়।
এই অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই এর বিরুদ্ধে বিজেপি জনজাতি মোর্চা ৪৪ টি সাব জোনালে এবং ১০ টি জোনাল অফিসে ডেপুটেশন প্রদান করে রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে। এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেই সময়সীমা অতিক্রম করেছে। তাই বৃহস্পতিবার ভারতীয় জনতা পার্টি জনজাতি মোর্চা ত্রিপুরা প্রদেশের উদ্যোগে রাজভবন অভিযান সংগঠিত করা হয়। এদিন মহারানী তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে রাজভবন অভিযান শুরু হয়। মিছিলে অংশ নেন প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সহ সভানেত্রী পাতাল কন্যা জমাতিয়া, সাংসদ রেবতী কুমার ত্রিপুরা, মন্ত্রী শান্তনা চাকমা, বিধায়ক ডাঃ অতুল দেববর্মা, জনজাতি মোর্চার সভাপতি বিকাশ দেববর্মা, সাধারণ সম্পাদক ডেভিট দেববর্মা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এদিন রাজভবন অভিযানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় এক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। তিনি সভায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রেখে বলেন, জনজাতি এলাকার বিধায়ক এম ডি সি সহ যেসব জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাদের উপর মানুষের সমর্থন রয়েছে বলে সব সময় বিশ্বাস ছিল। যা আজ পরিলক্ষিত হয়েছে। লক্ষণীয় কর্মী সমার্থক রাজভবন অভিযানে অংশ নিয়েছে। তাই এ ডি সি এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ও কর্মী সমর্থকদের মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানান। এবং আজকের জনজাতি অংশের মানুষের উপস্থিতি দেখে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গেছে। কারণ একই সময়ে আগরতলা শহরে অন্য একটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সভা রয়েছে। আর এই সভাতে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ভাবছে তাড়াতাড়ি বাড়িতে গেলেই ভালো হয়। একই সময়ে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে আয়োজিত কংগ্রেসের জনসভাকে কটাক্ষ করে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন আজ শুধু মাত্র জনজাতি মোর্চার শক্তি প্রদর্শন করা হয়েছে।
ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে সাতটি মোর্চা রয়েছে। তাই একটি মোর্চার শক্তি প্রদর্শন দেখে সব জায়গায় কম্পন শুরু হয়ে গেছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন নানা ভাবে অঙ্গভঙ্গি করে ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নেতারা কথা বললেই সরকারি কর্মচারী গ্রহণ করবে ভাবলে ভুল করছে। কারণ মানুষকে বিভ্রান্তি করার দিন চলে গেছে। জনজাতি এলাকায় গিয়ে তীব্র সাড়া বিজেপি। জনজাতি অংশের মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির সাথে রয়েছে। মূলত কারণ হলো জনজাতি অংশের মানুষের জন্য যদি কেউ উন্নয়ন করে থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করছে। জনজাতি অংশের মানুষের প্রকৃত সম্মান দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এবং দেশের সর্বোচ্চ পদে দ্রৌপদী মুমূকে স্থান দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। এর চাইতে বড় উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না। একইভাবে ত্রিপুরার মন্ত্রিসভাতে জনজাতিদের মন্ত্রীত্ব দিয়ে সম্মান দেওয়া হয়েছে। কারণ ভারতীয় জনতা পার্টি জানে সব অংশে মানুষকে সঠিক সম্মান দিতে। ভোট ব্যাংকে রাজনীতি করে না ভারতের জনতা পার্টি। আগের সিপিআইএম সরকার ভোট ব্যাংকে রাজনীতি করেছে। কংগ্রেসও সেই রাজনীতি করেছে। শুধু ভোট ব্যাংকে রাজনীতি নয়, এর পাশাপাশি তারা খুন সন্ত্রাসের ও উশৃঙ্খলতার রাজনীতিও করেছে বলে তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দিন ভারতীয় জনতা পার্টি মানুষের সমর্থন নিয়ে পুনরায় সরকারের প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি অংশের মানুষের কাছে বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১ জানুয়ারির থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। আরো জানান ভারতীয় জনতা পার্টি কোন গুন্ডা পার্টি নয়। তাই সকলে যাতে শৃঙ্খলার সাথে সরকারকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করতে এগিয়ে আসে। এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত, একটি ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা প্রতিষ্ঠিত করা যায় তার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সাহা। মিছিল শেষে এক প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে গোটা বিষয়টি তুলে ধরেন। যাতে করে সাংবিধানিক ভাবে এই বিষয়টিকে দেখা হয়। যারা জনজাতিদের কল্যাণের অর্থ মাঝ পথে নয়ছয় করছে তাদের থেকে এডিসি-কে যাতে রক্ষা করা যায় সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান নেতৃত্ব।