Saturday, February 15, 2025
বাড়িরাজ্যরাতভর শাসক দলে হামলা, প্রতিবাদ জানিয়ে থানায় ডেপুটেশন কংগ্রেসের

রাতভর শাসক দলে হামলা, প্রতিবাদ জানিয়ে থানায় ডেপুটেশন কংগ্রেসের

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ অক্টোবর :  বিশালগড় রাউৎখলা এলাকা আবারো উত্তপ্ত। মঙ্গলবার রাতভর চলে হামলা, পাল্টা হামলা, অগ্নি সংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ সহ অস্ত্রের ঝলকানি। আক্রমন চালানো হয় এলাকার বিজেপি দলের বুথ সভাপতি এবং সদ্য কংগ্রেস দলে যোগ দেওয়া গোপাল সাহার বাড়িতে। অগ্নি সংযোগ করা হয় রবীন্দ্র সরকারের পান দোকানে। এলাকাবাসীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেয় আক্রমন করতে আসা দুর্বৃত্তদের তিনটি বাইক ও একটি স্কুটি। ঘটনা বিশালগড় থানাধীন রাউৎখলা এলাকায়।

ঘটনার বিবরনে জানা যায় গত সোমবার সন্ধ্যায় যুব মোর্চার সিপাহীজলা উত্তর জেলা সম্পাদক সৈকত সাহার নেতৃত্বে একদল বিজেপি কর্মী উত্তর রাউৎখলা এলাকার বাইপাস চৌমুহনী এলাকার রবিন্দ্র সরকার এবং সজল সরকারের দোকান বন্ধ রাখতে হুলিয়া জারি করে এবং এলাকার বিরোধী দলের কর্মীদের হুমকি ধমকি দেয় বলে অভিযোগ। কিন্তু বিজেপির যুব নেতার পাল্টা অভিযোগ দলীয় কর্মসূচি নিয়ে রাউৎখলা এলাকায় গেলে স্থানীয় কংগ্রেস ও সিপিআইএম কর্মীরা তাদের উপর আক্রমন চালায়। ঘটনাস্থল থেকে প্রান বাঁচিয়ে কোনক্রমে ফিরে আসে বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। এই ঘটনার পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতেও অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল গোটা এলাকায়। এদিন রাতে বিজেপি দলের স্থানীয় বুথ সভাপতি গোপাল সাহার বাড়িতে আক্রমন চালায় একদল দুষ্কৃতিকারী। গোপাল সাহার মা অভিযোগ করেন রাতে একদল দুষ্কৃতিকারি তাদের বাড়ির গেইটে এসে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড, লাঠি সহ আক্রমন চালায়। কিন্তু স্থানীয়রা প্রতিরোধ গড়ে তুললে তিনটি বাইক ও একটি স্কুটি ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে উত্তপ্ত জনতা দুর্বৃত্তদের ফেলে আসা বাইক এবং স্কুটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

অপরদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানের মালিক রবীন্দ্র সরকারের অভিযোগ যুব মোর্চার জেলা সম্পাদক সৈকত সাহার নেতৃত্বে একদল বিজেপি কর্মী সোমবার সন্ধ্যায় তার দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেয় এবং তাদের সঙ্গে কথা না বলে যেন দোকান না খুলে এই হুলিয়া জারি করে। পরে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দোকান খুলতে আশ্বাস দিলে দোকান মালিক রবীন্দ্র সরকার তার দোকান খুলেন। কিন্তু বুধবার ভোর চারটা নাগাদ দুষ্কৃতিকারিরা তার দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ তার। অগ্নি সংযোগের ঘটনাটি বিজেপি যুব মোর্চার নেতার নেতৃত্বেই ঘটানো হয়েছে বলেই অভিযোগ দোকান মালিক রবীন্দ্র সরকারের।

রাজনৈতিক হিংসায় এখনও উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বিশালগড়ে। এলাকায় প্রচুর পরিমানে টি.এস.আর ও কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানদের মোতায়েন করার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে। থমথমে পরিবেশকে শান্ত করতে জেলা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করছে এলাকাবাসী।

এদিকে বিশালগড় কংগ্রেস কর্মীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ এনে বুধবার দুপুরে বিশালগড় মিছিল সংগঠিত করা হয়। মিছিলের পর বিশালগড় থানায় সন্ত্রাসের ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ডেপুটেশন প্রদান করা হয়। ডেপুটেশন প্রধানকালে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা, পিসিসির সদস্য জয়দেব বর্মন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অভিযুক্ত সিপাহীজলা জেলা উত্তর যুব মোর্চার সম্পাদক সৈকত সাহা সহ বাকিদের গ্রেপ্তার করতে। ডেপুটেশন প্রদান করার পর কংগ্রেস নেতা জয়দেব বর্মন বলেন, কংগ্রেস কর্মী চন্দন ধর এবং গৌরাঙ্গ ধর বাড়িতে বিজেপি দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। তাই থানায় ডেপুটেশন প্রদান করা হয়েছে। পুলিশকে বলা হয়েছে যদি তারা জনগণের দায়িত্ব পালন করতে রক্ষক হিসেবে ভূমিকা পালন করে তাহলে করার জন্য। না হলে জনগণ নিজের দায়িত্ব নিজে হাতে তুলে নেবে। কারণ বিশালগড় বাজার কারোর কেনা নয়। এবং যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের যাতে অতিসত্বর করা হয়। পুলিশ আশ্বস্ত করেছে তদন্ত চলছে। এখন দেখার বিষয় জনগণের নিরাপত্তা কতটা দিতে সক্ষম হয় পুলিশ।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য