স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ নভেম্বর : কাজ, খাদ্য এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জন্য আসন্ন নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহব্বানে বুধবার আগরতলায় রাজপথ কাঁপিয়ে পথসভা এবং মিছিল সংঘটিত করল বাম যুব সংগঠন। এদিন দুপুরে ডি ওয়াই এফ আই এবং টি ওয়াই এফ -এর যৌথ উদ্যোগে প্যারাডাইস চৌমুহনিতে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পথ সভায় উপস্থিত ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব জোট সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, গত ৪৩ মাস ধরে ত্রিপুরা রাজ্যে শুধু সন্ত্রাস কায়েম করে রেখেছে বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার। কাজ, খাদ্যের অভাব, গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই রাজ্যে। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে এবং মানুষের কাজ খাদ্যের দাবি আদায় করতে আসন্ন নির্বাচনে যাতে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের জয়যুক্ত করা হয় তার আহ্বান জানিয়ে আজকের কর্মসূচি। রাজ্যের নিস্কর্মা সরকারটা গোটা রাজ্যে একটি সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করে রেখেছে। এ সরকারটা মানুষকে কিছুই দিতে পারছে না। যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সরকারের এসেছে এখন সেসব প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারছে না। এবং সাড়ে তিন বছরে পর একটা নোংরা মানুষকে মন্ত্রিসভা এনে নোংরামী ছড়াচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সংঘটিত হলে একটি আসনে জয়ী হবে না বিজেপি। বামফ্রন্ট প্রার্থীরা রক্তাক্ত হয়েও লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে বলেন, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক কোন দলের হয় না। এবং তাদের কোনো রাজনৈতিক দল মাসিক বেতন দেয় না পুলিশকে। রাজ্যের মানুষের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে রাজ্য পুলিশের বেতন হয়।
কিন্তু পুলিশ জনগণের জন্য কাজ না করে বিজেপি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করে চলেছে। তাই রাজ্য পুলিশ এবং পুলিশের আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে যদি ন্যায় পথে থেকে চাকরি করতে পারেন তাহলে চাকুরি করুন। নাহলে চাকরি ছেড়ে চলে যান। ১৭ মাস পরে এসে চাকুরিতে যোগদান করে সঠিকভাবে জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে জানান তিনি। রাজ্যজোড়ে জীবন-জীবিকার উপর আক্রমণ চলছে। তাই বামফ্রন্টকে ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান জানান ডি ওয়াই এফ আই সভাপতি পলাশ ভৌমিক। তিনি বলেন ২০১৮ সালে বিজেপিকে ত্রিপুরার মানুষ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশায়।
কিন্তু গত ৪৪ মাসে ত্রিপুরা রাজ্যের কোন সমস্যা সমাধান করতে পারেনি বিজেপি সরকার। বেকারদের কর্মসংস্থান নেই, কর্মচারিরা আক্রান্ত, শ্রমিকরা আক্রান্ত। সারা রাজ্য জুড়ে একটা জঙ্গলে রাজত্ব চলছে। এবং যেখানে মানুষের কাজ, খাদ্য নেই। পেট্রোল ডিজেলের মূল্য প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মূল্য। তাই আগামী ২৫ নভেম্বর সকলে যাতে বামপন্থী প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসে তার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে টি ওয়াই এফ নেতৃত্ব অমলেন্দু দেববর্মা বলেন ২০১৮ পর রাজ্যে খুন, সন্ত্রাস বেড়ে গেছে। সব অংশের মানুষ আক্রান্ত। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার তারা গত কয়েকমাসে কেড়ে নিয়েছে। বেকারত্বের হার বেড়েছে। ড্রবল ইঞ্জিনের সরকারের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের মাঠে থাকতে হবে। রাজ্যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিজেপি ফ্যাসিস্ট সুলভ অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে। তাই মানুষের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে এর সন্ত্রাসের সরকারকে কেউ যেন ভোট না দেয়। আর বিজিপি কেউ জেনে রাখা ভালো সন্ত্রাস দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না। ড্রবল ইঞ্জিনের সরকার মানুষকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। রাজ্যের শান্তি, সম্প্রীতি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা বামপন্থীদের প্রথম লক্ষ্য বলে জানান তিনি। পরে আগরতলা শহরে একটি মিছিল সংঘটিত হয়। মিছিলটি প্যারাডাইস চৌমুহনি থেকে শুরু হয়ে পোস্ট অফিস চৌমুহনি, কামান চৌমুহনী সহ শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। মিছিলে কয়েক শতাধিক কর্মী সমর্থক অংশগ্রহণ করে এদিন।