স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০ সেপ্টেম্বর: মাঠে দুই দলেরই সময় ভালো কাটছিল না। তবে রোববার লিগ ম্যাচে পেছনের হতাশা ঝেড়ে ফেলে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিল টটেনহ্যাম। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বিবর্ণ ইউনাইটেডকে তারা হারিয়ে দিল ৩-০ গোলে।বল দখল কিংবা আক্রমণ, কোনো ক্ষেত্রেই ভালো করতে পারেনি প্রিমিয়ার লিগের সফলতম ক্লাবটি। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় পজেশন ধরে রেখে গোলের জন্য ২৪ শট নিয়ে ১০টি লক্ষ্যে রাখে টটেনহ্যাম। সেখানে ইউনাইটেডের ১১ শটের দুটিই কেবল লক্ষ্যে ছিল।
ব্রেনান জনসন সফরকারীদের এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দেইয়ান কুলুসেভস্কি। তাদের তৃতীয় গোলটি করেন ডমিনিক সোলাঙ্কি।অসাধারণ এক পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্ত হয় টটেনহ্যামের। তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় তারা।প্রতিপক্ষের সীমানায় মার্কাস র্যাশফোর্ড বল হারিয়ে ফেললে পাল্টা আক্রমণ শাণান মিকি ফন দে ফেন। দারুণ ক্ষীপ্রতায় ছুটে বক্সের বাইরে প্রতিপক্ষের তিন জনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে, ভেতরে ঢুকে বাইলাইন থেকে দূরের পোস্টে পাস দেন এই ডাচ ডিফেন্ডার। আর বিনা বাধায় ছুটে গিয়ে অনায়াসে ফাঁকা জালে বল জড়ান ব্রেনান জনসন।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ক্লাবের টানা চার ম্যাচে গোল করলেন ২৩ বছর বয়সী ইংলিশ ফরোয়ার্ড। গোলের পরপরই টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে জনসনের গর্বিত বাবা ডেভিড জনসনের হাস্যোজ্জ্বল মুখ।গতিময় ফুটবলে ২০তম মিনিটে আবারও ইউনাইটেডের রক্ষণে হানা দেয় টটেনহ্যাম। পরিষ্কার সুযোগও পেয়ে যান জনসন; বক্সের মুখ থেকে তার নিচু কোনাকুনি শট দূরের পোস্টে লেগে ফেরে।আগের ম্যাচে চোট পাওয়ায় এদিন স্কোয়াডেই ছিলেন না সন হিউং-মিন। অধিনায়ককে ছাড়াই অবশ্য দাপুটে ফুটবল খেলতে থাকে টটেনহ্যাম। তাদের দারুণ সব আক্রমণ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার অবস্থা হয় স্বাগতিকদের।
৩৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা জাগে। তবে পেদ্রোর পেরোর ডান দিক থেকে আসা ক্রসে ক্রিস্তিয়ান রোমেরোর ওভারহেড কিক একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।চার মিনিট পর নিজেদের সেরা সুযোগটি পায় ইউনাইটেড। তবে ভাগ্য সহায় ছিল না তাদের; বাঁ দিক থেকে র্যাশফোর্ডের বাড়ানো ক্রস বক্সে পেয়ে আলেহান্দ্রো গার্নাচোর জোরাল ভলি পোস্ট কাঁপায়।৪০তম মিনিটে আন্দ্রে ওনানার নৈপুণ্যে উল্টো আরেক গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় ইউনাইটেড। ওয়ান-অন-ওয়ানে এগিয়ে গিয়ে ফন দে ফেনের নৈপুণ্যে শট রুখে দেন গোলরক্ষক।পরের মিনিটেই বড় ধাক্কাটি খায় ইউনাইটেড। অহেতুক প্রতিপক্ষের জেমস ম্যাডিসনকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন স্বাগতিক অধিনায়ক ব্রুনো ফের্নান্দেস।
১০ জন নিয়ে মাঠে নেমে দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে আরেক গোল হজম করে ইউনাইটেড। মাঝমাঠ থেকে দারুণ গতিতে বল পায়ে ছুটে বক্সে ঢুকে বাঁ দিকে পাস বাড়ান জনসন, মাটাইস ডি লিখটের পায়ে লেগে বল একটু ওপরে উঠে যায়। আর আলতো এক ভলিতে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কুলুসেভস্কি।কিছুক্ষণ পর ব্যবধান আরও বাড়ানোর পরিষ্কার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি টিমো ভেরনার। কুলুসেভস্কির থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন জার্মান ফরোয়ার্ড, তবে শটটা যথেষ্ট জোরে নিতে পারেননি তিনি। ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ওনানা।ইয়োশুয়া জির্কজির বদলি নামা কাসেমিরো ৬৯তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ সম্ভাবনা জাগান। তবে দুরূহ কোণ থেকে তার শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
৭৮তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন সোলাঙ্কি। সতীর্থের কর্নারে মাতার সারের লাফিয়ে নেওয়া হেডে বল প্রায় লক্ষ্যেই ছিল, জটলার মাঝ থেকে পা বাড়িয়ে হালকা স্পর্শে সেটাকে নিশ্চিত করে দেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।ছয় রাউন্ড শেষে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে উঠেছে টটেনহ্যাম। তৃতীয় হারের পর ৭ পয়েন্ট নিয়ে ১২ নম্বরে ইউনাইটেড।১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিভারপুল। সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে ম্যানচেস্টার সিটি ও আর্সেনাল।