Sunday, January 26, 2025
বাড়িখেলাসোনার পদক হারানোর কষ্টে নয়, ছেলের জন্য কেঁদেছেন পিটি

সোনার পদক হারানোর কষ্টে নয়, ছেলের জন্য কেঁদেছেন পিটি

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৯ জুলাই: ৩১—অ্যাডাম পিটির শোকেসে সোনার পদকের সংখ্যা এটা। অলিম্পিকে ৩, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৮, কমনওয়েলথ গেমসে ৪ এবং ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত ১৬টি সোনার পদক জিতেছেন গ্রেট ব্রিটেনের এই সাঁতারু। ২৯ বছর বয়সী পিটি যদি এখনো পুলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে সাঁতারকে বিদায় জানান, তবুও তাঁর পিঠে সাঁটা থাকবে সাঁতারের কিংবদন্তি তকমা।তবে গতকাল যদি তিনি সোনার পদকের সংখ্যাটা আরও একটি বাড়িয়ে ৩২ করতে পারতেন, তাহলে অলিম্পিকের ইতিহাসে অমরত্বই পেয়ে যেতেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ফেল্‌প্‌সের পর দ্বিতীয় পুরুষ সাঁতারু হিসেবে অলিম্পিক সাঁতারের একই ইভেন্টে টানা তিনটি সোনা জয়ের কীর্তি হয়ে যেত পিটির। আর তাঁর ইভেন্ট ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে হতেন একমাত্র।

এমন সুযোগ প্রতিদিন তো নয়ই, প্রতি অলিম্পিকেও আসে না। ‘অমর’ হওয়ার সুযোগ পেয়েও সেটা হাতছাড়া হয়ে গেলে যে কারোই খারাপ লাগার কথা। সেটাও যদি আবার হয় ১ সেকেন্ডের ২০০ ভাগের ১ ভাগের কারণে, তখন তো কষ্টটা আরও বাড়বে।হ্যাঁ, গতকাল পুরুষদের ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোক আট বছর পর নতুন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন পেয়েছে। দুবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন পিটিকে পেছনে ফেলে ৫৯.০৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে সোনা জিতেছেন ইতালির নিকোলো মার্তিনেঙ্গি। পিটি সাঁতার শেষ করেছেন ৫৯.০৫ সেকেন্ডে।এই হারের পর দর্শক সারিতে থাকা প্রেমিকা হলি রামসি ও ৩ বছরের ছেলে জর্জের কাছে ছুটে যান পিটি। সেখানে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা খোঁজেন। একটা সময় তাঁর চোখে দেখা যায় জলের কণা। সংবাদ সম্মেলনে পিটির এই কান্নার প্রসঙ্গটি এসেছে। তিনি এটাকে কষ্টের কান্না বলেননি, বলেছেন আনন্দাশ্রু।

অল্পের জন্য হেরে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পিটি বলেন, ‘আমি যখন আমার ছেলেকে আলিঙ্গন করি, তার কোকড়ানো চুল দেখি, আবেগাপ্লুত হই। আমার কান্না আসে। আপনাকে বুঝতে হবে, যেকোনো বাবা–মায়ের হৃদয়েই এমন ভালোবাসা আছে। এটা সেটাই, এটা অন্য ধরনের ভালোবাসা। এটা এমন, যেটা সাঁতার আমাকে আর দিতে পারবে না…এবং আমিও এর (সাঁতার) কাছ থেকে এটা আর চাই না।’সাঁতারের কাছে পিটির আর কিছু না চাওয়ার প্রসঙ্গ যখন এলই, তখন বছরখানেক আগে হঠাৎই তাঁর এলোমেলো হয়ে যাওয়া, পুল দেখলেই আঁতকে ওঠার বিষয়ে একটু বলা যায়। এর শুরুটা হয়েছিল ২০২২ সালে। সে বছর পাঁ ভেঙে গিয়েছিল পিটির, কমনওয়েলথ গেমসে চতুর্থ হয়ে সাঁতার শেষ করেন। এই প্রতিযোগিতায় ভাঙে তাঁর আট বছর অপরাজিত থাকার ধারা।

ওই সময়য়ে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন পিটি, একপর্যায়ে মানসিক অসুস্থতা ঘিরে ধরে তাঁকে। নিজেকে সাঁতার থেকেও সরিয়ে নেন সেই সময়। সব মিলিয়ে তাঁর ৩ বছর বয়সী ছেলের মা রামসির সঙ্গে সম্পর্কও ভেঙে যায়।সেই অবস্থা থেকে নিজেকে ফেরাতে পেরেছেন পিটি। আবার নেমেছেন পুলে। তবে অলিম্পিকের ইতিহাসে অমরত্ব পাওয়ার খুব কাছে গিয়েও পারেননি তিনি। এ নিয়ে অবশ্য কোনো আক্ষেপ নেই পিটির, ‘আমি আমার সবই এখানে (সাঁতার) দিয়েছি। আমি এর চেয়ে বেশি আর দিতে পারতাম না।’ এ ছাড়া তিনি তো বলেই দিয়েছেন সাঁতার, সোনার পদক—এসবের চেয়েও বড় ভালোবাসার ভান্ডার তিনি পেয়ে গেছেন, সেই ভান্ডার তাঁর ছেলে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য