স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ এপ্রিল: স্টোকস এখন ব্যস্ত চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএলে। তবে অ্যাশেজ তার ভাবনায় আছে প্রবলভাবেই। ২০১৫ সালের পর আবার ‘ছাইদানি’ নিজেদের করে নিতে মরিয়া তারা। প্যাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই অভিযানে তাদের মূল হাতিয়ার হবে ‘বাজবল।’ গত বছর স্টোকস অধিনায়ক হওয়ার পর ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও আগ্রাসী মানসিকতার কৌশল বেছে নিয়েছে ইংল্যান্ড। ম্যাককালামের ডাক নাম ‘বাজ’-এর সঙ্গে মিলিয়ে এটিকে বলা হচেছ ‘বাজবল।’ গত এক বছরে ক্রিকেট বিশ্বে তুমুল চর্চিত হয়েছে এই কৌশল। ম্যাককালাম-স্টোকস জমানায় ১২ টেস্টের ১০টিই জিতেছে ইংল্যান্ড। এই সময়ে তাদের দলীয় রান রেট ৪.৭৬। বলার অপেক্ষা রাখে না, এখানে ইংলিশদের কাছাকাছিও নেই কোনো দল।
তারা দুজন দায়িত্বে আসার আগে সবশেষ ১৭ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয় ছিল স্রেফ ১টি। সেখান থেকে দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। আকর্ষণীয় ও বিনোদনদায়ী ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি তাদের এই ঘরানার কার্যকারিতাও যে দুর্দান্ত, তা তো ফুটে উঠছে ফলাফলেই। অ্যাশেজেও তারা একই কৌশলে ভরসা রাখতে চান। যদিও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে সিমিং ও সুইঙ্গিং কন্ডিশনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের ভোগান্তি গত কয়েকটি সফরেই ধরা পড়েছে। এবার উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলে তা ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথদের জন্য ভালোও হতে পারে। উইকেটে গতি থাকলে তা কাজে লাগানোর পেস আক্রমণও অস্ট্রেলিয়ার আছে। তবে আইপিএলের ফাঁকে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টোকস জানালেন, নিজেদের শক্তিতেই তারা ভরসা রাখতে চান।
“আমাদের চিন্তাভাবনায় আমরা খুবই পরিষ্কার, বিশেষ করে ইংল্যান্ডজুড়ে মাঠকর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোন ধরনের উইকেট আমরা চাই। তারাও আমাদেরকে দারুণভাবে সাড়া দিয়েছেন, যা খুব ভালো ব্যাপার।” “আমরা গতিময় ও ফ্ল্যাট উইকেট চাই। আমরা ২২ গজে গিয়ে দ্রুত রান তুলতে চাই। এতে অবশ্য তারাও (অস্ট্রেলিয়া) ম্যাচে খুব ভালোভাবে থাকবে। গতিময় উইকেটে বোলিংয়ের সুযোগ পেলে তারাও সেটা নিয়ে খুশি থাকবে।” শুধু রান তোলাই নয়, স্টোকসের ভাবনায় আছে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়াও। তার পরিকল্পনায় তাই বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বোলিং গ্রুপও। জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডের মতো অভিজ্ঞরা তো আছেনই, ৯০ মাইল গতিতে বল করার মতো তিন জন ফাস্ট বোলার এখন আছে ইংল্যান্ডের-জফ্রা আর্চার, মার্ক উড ও অলিভার স্টোন। তবে অ্যাশেজে অল্প সময়ের মধ্যে খেলতে হবে ৫ টেস্ট। পেসারদের চোটের শঙ্কাও আছে। মেডিকেল টিমকে তাই এখন থেকেই পেসারদের বাড়তি যত্নের কথা বলে রেখেছেন স্টোকস। অ্যাশেজের প্রতি টেস্টে অন্তত ৮ জন বোলারকে প্রস্তুত দেখতে চান তিনি।
মাঠের শুরু হতে বাকি বাছে আরও দুই মাসের বেশি। তবে প্রথম টেস্টের সম্ভাব্য একাদশের ছবি এখনই এঁকে ফেলেছেন স্টোকস। “আমার মনে হয়, শুরুর একাদশ বা কাছাকাছি কী হবে, তা এখন জানা আছে আমার। ৯০ মাইল গতিতে বল করতে পারে, এমন বোলারদের যে কোনো অধিনায়কই চান। প্রথম টেস্ট যখন আসবে, আমি নিশ্চিত করতে চাইব সম্ভাব্য সেরা একাদশ যেন আমি বাছাই করতে পারি।” “বোলিং গ্রুপ নিয়ে, আমাদের মেডিকেল টিমকে আমি বলেছি যে, সব ম্যাচের জন্য ৮ জন বোলারকে প্রস্তত রাখার সম্ভাব্য সেরা সুযোগ যেন আমাদের দেওয়া হয়। এই বছরের অ্যাশেজে ম্যাচগুলি খুব কাছাকাছি। প্রতি ম্যাচেই তাই এই সম্পদগুলো তৈরি দেখতে আগ্রহী আমি। এই মুহূর্তে আমি ২০ জনের স্কোয়াড বাছাই করতে পারি। আমরা এতটা ভাগ্যবান যে আমাদের হাতে এতজন খুব ভালো ইংলিশ ক্রিকেটার এখন আছে।”