স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৬ নভেম্বর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিনের সঙ্গে প্রায় দুই বছর পর ফোনকলে কথা বলেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। আলাপকালে পুতিনকে ইউক্রেইন থেকে রুশ সেনা সরিয়ে নেওয়া এবং ‘যথাযথ ও স্থায়ী শান্তির’ পথ খুলতে কিইভের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরকারি বাসভবন ক্রেমলিন দুই দেশের নেতার এই ফোনালাপের খবর নিশ্চিত করেছে এবং বার্লিনের অনুরোধে এ আলাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে।
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসের শান্তি আলোচনার আহ্বানের জবাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইউক্রেইনে যুদ্ধ শেষের কোনওরকম চুক্তির ক্ষেত্রে রাশিয়ার নিরাপত্তায় হুমকির বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। সেইসঙ্গে ‘নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতার’প্রতিফলনও থাকতে হবে।জার্মান সরকারের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, চ্যান্সেলর শলৎস স্থায়ী শান্তি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে পুতিনকে ইউক্রেইনের সঙ্গে আলোচনার বসার ইচ্ছা প্রকাশের অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেইনকে যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ সমর্থন দিয়ে যাওয়ার ওপরও জোর দিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কথা হয়েছিল পুতিন ও শলৎসের। ওই বছরই ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করেছিল রাশিয়া। ফলে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ। তখন থেকেই বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশের নেতার সঙ্গে পুতিনের কথা হয়নি।দীর্ঘদিন পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস স্বপ্রণোদিত হয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওলাফ শলৎসকে সতর্ক করে ভলোদিমির বলেছেন, তার (শলৎস) এই ফোনকল কেবল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচ্ছিন্নতা কমাতে রাশিয়ার জন্য সহায়ক হবে।
শলৎস কেন এই সময়ে পুতিনকে ফোন করে কথা বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। তবে ফোনকলটি এমন সময়ে হয়েছে যখন যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেইনের অবস্থা নাজেহাল এবং যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগমন নিয়ে ইউক্রেইনের পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো অনেক বেশি উদ্বেগে আছে।ট্রাম্প ইউক্রেইনে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক ও আর্থিক সহায়তার সমালোচনা করেছেন বারবার। জার্মানিতে ২৩ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। তার আগে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের আগমন অনিশ্চয়তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
যুদ্ধে ইউক্রেইনকে যুক্তরাষ্ট্রের পর বেশি সাহায্য করে আসছে জার্মানি। তবে জার্মানির এই সহায়তা নিয়ে শলৎসের দল বাম-শাখা এবং কট্টর-ডান দলগুলোর পক্ষ থেকে তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে।স্যোশাল মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক বিষয়ক পোলিশ ইন্সটিটিউট এর রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল বলেন, “শলৎস বিশ্বাস করেন পুতিনের সঙ্গে তার এই যোগাযোগ নির্বাচনের আগে দিয়ে দেশের ভেতরে তার হাত শক্তিশালী করবে।”