স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৭ জুলাই: বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়ায় বিদ্রোহের ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বা ভাগনারপ্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন কেউ-ই নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হননি।লুকাশেঙ্কো গতকাল বৃহস্পতিবার বেলারুশের রাজধানী মিনস্কের স্বাধীনতা প্রাসাদে বিবিসিকে এ কথা বলেন।ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী রুশ প্রতিষ্ঠান ভাগনার গত মাসের শেষ দিকে বিদ্রোহ করে বসেছিল। তারা মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল। পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন ভাগনারপ্রধান।কীভাবে, ঠিক কী কী শর্তে ভাগনারের বিদ্রোহ অবসানে সমঝোতাটি হয়েছিল, তা খুব ভালো করে জানা ব্যক্তিদের একজন লুকাশেঙ্কো।বেলারুশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘কথোপকথনের’ জন্য গতকাল সাংবাদিকদের একটি ছোট দলকে দেশটির রাজধানী মিনস্কের স্বাধীনতা প্রাসাদে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এই দলে বিবিসির সাংবাদিকও ছিলেন।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই লুকাশেঙ্কোর স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে গতকাল বেলারুশের নেতাকে শক্ত–সামর্থ্যই দেখা যায়। সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁর কথোপকথন চলে।ভাগনারের বিদ্রোহ, সমঝোতা—এসব নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। এ নিয়ে রহস্য উন্মোচনের পরিবর্তে আলাপচারিতায় জল আরও ঘোলা করেন লুকাশেঙ্কো।সমঝোতা অনুসারে, ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিনের তাঁর বাহিনীর কিছু যোদ্ধাসহ বেলারুশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা হয়নি।এ বিষয়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রিগোশিন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আছেন। অথবা তিনি সম্ভবত গতকাল সকালেই মস্কো গেছেন। অথবা তিনি সম্ভবত অন্য কোথাও আছেন। কিন্তু তিনি বেলারুশে নেই। ভাগনারের যোদ্ধারা বেলারুশে আসেননি।তবে কি সমঝোতাটি আর বলবৎ নেই—এমন প্রশ্ন করা হয় বেলারুশের প্রেসিডেন্টের কাছে। কিন্তু সমঝোতা বলবৎ নেই, এ কথা মানতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
বিবিসির সাংবাদিকের কাছে মনে হয়েছে, হয়তো পর্দার আড়ালে কোনো আলাপ-আলোচনা চলছে, যা সাংবাদিকদের বলা হবে না।ভাগনারের বিদ্রোহ নিয়ে লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনায় বিবিসির সাংবাদিক দেখতে পান, এ বিষয়ে মস্কো ও মিনস্কের ভাবনাচিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম নয়।গত সপ্তাহান্তে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই নাটকীয় ঘটনার (বিদ্রোহ) মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একজন নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।তবে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের মত ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কেউ-ই এই পরিস্থিতির জেরে নায়ক বনে যাননি।’লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘প্রিগোশিন নয়, পুতিন নয়, লুকাশেঙ্কোও নয়। এখানে কোনো নায়ক ছিল না। আর এই ঘটনা থেকে শিক্ষা কী? আমরা যদি এই ধরনের সশস্ত্র দল গঠন করি, তবে আমাদের তাদের ওপর নজর রাখতে হবে। তাদের প্রতি গভীর মনোযোগ দিতে হবে।’