স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১১ জুলাই : একদিকে স্মার্ট মিটার বসানো এবং অপরদিকে এক ধাক্কায় বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধি ও পাইপলাইন গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করায় মহাবিপদে পড়েছে জনগণ। এর তীব্র বিরোধিতা করে সরকারকে জনবিরোধী বলে তকমা দিয়ে রাস্তায় নেমেছে বামেরা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি গ্যাসের একতরফা মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবিতে সিপিআইএম পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংঘটিত করা হয়। মূলত বিক্ষোভ কর্মসূচি হয় রাজধানীর ভুতুরিয়া বিদ্যুৎ নিগম কার্যালয়ের সামনে।
সেখানে বিদ্যুৎ নিগমের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় সিপিআইএম -এর কর্মী সমর্থকরা। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে। তিনি বর্তমান সরকারের ত্রিপুরা সমালোচনা করে বক্তব্য রেখে বলেন, ২০০৫ সাল থেকে কেন্দ্র বাধ্য করতে চেয়েছিল বিদ্যুৎ দপ্তর যাতে বেসরকারি করনের হাতে তুলে দেওয়া যায়। কিন্তু পরবর্তী সময় কোম্পানি তৈরি করতে বাধ্য করেছে কেন্দ্র। তখন ২০০৩ সালে নেতি লাভ করে বিদ্যুৎকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে বাধ্য করে তৎকালীন কেন্দ্র সরকার। তারপরেও ত্রিপুরার বিদ্যুৎ নিগম একটি লাভজনক সংস্থা ছিল। ২০১৪ সালে রেগুলারেটি কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী বিদ্যুতের গড় দাম ছিল তিন টাকা ৯৯ পয়সা। এখন বর্তমান সরকারের আমলে সেটা বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ৭২ পয়সা। পাশাপাশি বিভিন্ন চার্জ আদায় করছে গ্রাহকদের কাছ থেকে। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের স্মার্ট মিটার চালু করার চেষ্টা করেছিল সেই রাজ্যের সরকার।
কিন্তু এর বিরুদ্ধে সেই রাজ্যে সরব হয়েছিল বিজেপি। কারণ স্মার্ট মিটারের মধ্যে কারচুপি হয়। তারপর পশ্চিমবঙ্গের সরকার স্মার্ট মিটার বসানো থেকে বিরত থাকে। তাই এ স্মার্ট মিটার বসানোর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে গ্রাহকদের কথা চিন্তা করে যাতে ডিজিটাল মিটার বসানো হয়। ত্রিপুরার বিদ্যুৎ নিগম একটি লাভজনক সংস্থা ছিল। কিন্তু পরিচালনগত তোকেই কারণে বর্তমানে ৭০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ হয়ে আছে বিদ্যুৎ নিগম। সরকারের বিরোধিতা করে প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী বক্তব্যে আরও বলেন, রাজ্যের বিদ্যুৎ নিগমকে রুগ্ন করে দেওয়া বর্তমান সরকারের কৌশল। বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া তাদের উদ্দেশ্য। আরো বলেন, পাঁচটি ডিভিশন যথাক্রমে কৈলাশহর, কমলপুর, লংতরাই, মোহনপুর ও সাব্রুম ডিভিশন বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছিল বর্তমান রাজ্য সরকার। তারপর লক্ষ্য করা গেছে কৈলাশহর ডিভিশন গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে চম্পট দিয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনরকম মামলা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেন তিনি। তাই সকলকে আন্দোলনে নামার জন্য আহবান জানান মানিক দে। পরবর্তী সময় বিদ্যুৎ নিগম অফিসে একটি ডেপুটেশন প্রদান করা হয়।