স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩ জানুয়ারি। চীনে শিয়ান নগরীর কিছু বাসিন্দাকে মাঝরাতে বাড়ি থেকে তুলে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন। আবার কর্তৃপক্ষের এমন পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
চীনে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে যার উপকেন্দ্র হয়ে উঠছে শিয়ান নগরী। নতুন সংক্রমণ ঠেকাতে নগর কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
নগরীর এক কোটি ৩০ লাখ বাসিন্দাকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে এমনকী খাবার বা নিত্যপণ্য কিনতেও তাদের বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিবিসি জানায়, চীনা নববর্ষ উদযাপন এবং আগামী মাসে রাজধানী বেইজিংয়ে শুরু হতে যাওয়া শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন নির্বিঘ্ন করতেই চীন কর্তৃপক্ষ এত কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। কর্তৃপক্ষের এত বেশি কড়াকড়িতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। অনেকেই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ করছেন এবং ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের খাবার এবং নিত্যপণ্য সরবরাহ করলেও অনেকেই তাদের খাবার প্রায় ফুরিয়ে যাওয়া এবং এখনও কোনও ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে নতুন উদ্বেগ হয়ে দেখা দিয়েছে মধ্যরাতে বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টিন।
সর্বশেষ এ ঘটনাটিই চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। চীন কর্তৃপক্ষ গত ১ জানুয়ারি মধ্যরাতে শিয়ান নগরীর দক্ষিণের একটি আবাসিক কম্পাউন্ডের বাসিন্দাদের নিজ বাড়ি ছেড়ে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যেতে বাধ্য করেছে। তবে ঠিক কতজনকে তুলে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন জানান, কম্পাউন্ডের বাইরে তিনি ৩০টি বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন। আরেকজন দাবি করেন, সেখান থেকে হাজারের বেশি মানুষকে তুলে নেওয়া হয়েছে। যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে বৃদ্ধ, শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীও আছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। বিবিসি জানায়, ছবিতে একজন বৃদ্ধকে হাঁড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে একা বাইরে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া কয়েকজন পরে সেখানকার ছবি পোস্ট করে বলেন, সেন্টারে তাদের জন্য খুব সামান্য সুবিধাই রয়েছে। সেখানে ঠাণ্ডা, এমনকি তাদের খাবারও দেওয়া হয়নি।
একজন লেখেন, ‘‘অতি জরুরি কিছু জিনিস ছাড়া এখানে কিছুই নেই। কেউ আমাদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করতে আসেনি, এটা কী ধরনের কোয়ারেন্টিন? মধ্যরাতে এক হাজারে বেশি মানুষকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে বৃদ্ধ এবং শিশুরাও রয়েছে।”
অনেকে এই কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলছেন, বাসিন্দারা দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নিজ বাড়িতেই কোয়ারেন্টিনে আছেন। তাহলে কেন তাদের আবার কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হল?
প্রথমদিকে নগরীর বাসিন্দাদেরকে খাবার কিনতে বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে নিয়ম আরও কড়া করা হয়। নতুন নিয়মে বসিন্দাদেরকে কেবল কোভিড পরীক্ষার জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।