স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৬ জুলাই : রাজ্যে চলছে সুশাসন। আর এই সুশাসন জামানায় বিরোধী দলের বিধায়ক নিজ এলাকায় কর্মীদের সাথে বৈঠক করতে পারছেন না। বিধায়কের পিঠের চামড়া তুলে নেবে বলে স্লোগান তুলে প্রকাশ্যে দাবি করেন কিছুতে যুবক। কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়ের নিশানা শাসক দলের দিকে। রবিবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর প্রতাপগড় ১ নং রোড এলাকায় আগরতলা পুর নিগমের ৩১ নং ওয়ার্ডের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করতে যান নয় বনমালীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়।
এদিন এলাকার বাবুল রায়ের বাড়িতে দুপুরে নাগাদ বৈঠক শুরু হওয়ার পর আশেপাশে কিছু উশৃংখল যুবক জড়ো হয় বাবুল রায়ের বাড়ির ঘেরাও করে। পরে সভা যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে ঠিক তখন দুষ্কৃতিরা সংঘবদ্ধ ভাবে বাবুল রায়ের বাড়ির সামনে উপস্থিত হয়। দুষ্কৃতিরা গোপাল চন্দ্র রায়কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নানান হুমকি সহ গালিগালাজ দিতে থাকে। তখন গোপাল চন্দ্র রায় পুলিশকে ফোনে ঘটনার বিষয়ে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই দুষ্কৃতিরা বাবুল রায়ের বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পুলিশ আসলে পুলিশের সামনে দুষ্কৃতিরা বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়কে উদ্দেশ্য করে গালি গালাজ সহ গো বেক শ্লোগান দিতে থাকে। বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান দুষ্কৃতিদের ভয়ে কেউই নিজ বাড়িতে কংগ্রেসের সভা করতে দিতে চাইছে না। ভয়কে উপেক্ষা করে বাবুল রায় নিজ বাড়িতে মিটিং করতে দিয়েছেন। পুলিশকে আগাম জানিয়ে এই ঘরোয়া সভা করা হচ্ছিল। তারপরও সেখানে দুষ্কৃতিরা আক্রমণ করেছে। আইনের শাসন কোথায়। পুলিশ কেন দুষ্কৃতিদের গ্রেপ্তার করছে না। দুষ্কৃতিরা ওনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছ। দুষ্কৃতিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেসের সভা করা যাবে না।
তাহলে ত্রিপুরা রাজ্যে গণতন্ত্র কোথায়। ত্রিপুরা রাজ্যে মানুষের নিরাপত্তা নেই। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই সাথে তিনি নিজের অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও বাবুল রায়ের বাড়ির নিরাপত্তার দাবি জানান। পাশাপাশি দুষ্কৃতিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। তাই তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহার উদ্দেশ্যে দাবি করেন নিরাপত্তার। পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। অপরদিকে বিক্ষোভকারী যুবকরা নিজেদের এলাকাবাসী বলে দাবি করে স্লোগান দিতে শুরু করে এলাকার বিধায়ক গোপাল রায় যাতে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তারা সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, গোপাল রায় জয়ী হওয়ার পর থেকে এলাকায় আসেন না। এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখের খবর রাখেন না। আজ তিনি জাতিগত সুরসুরি দিতে এসেছেন। সিপিআইএমের দালালি করে তিনি বিধায়ক হয়েছেন এলাকার। উনার কোন যোগ্যতাই নেই বিধায়ক হওয়ার। অবিলম্বে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে বলে জানান তারা। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করলেন। তিনি বলেন কাউকে দেখেননি। বর্তমানে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী।