Friday, March 29, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদলেবানন ও গাজায় হামাসের লক্ষ্যে ইসরায়েলের বিমান হামলা

লেবানন ও গাজায় হামাসের লক্ষ্যে ইসরায়েলের বিমান হামলা

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৭ এপ্রিল: লেবানন ও ফিলিস্তিনের গাজা ভুখণ্ডে হামাসের লক্ষ্যস্থলগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। রকেট হামলার জবাবে এসব হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি তেল আবিবের।এতে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযানকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ার হুমকি তৈরি হয়েছে।  শুক্রবার ভোররাতে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজার বিভিন্ন এলাকায় মাটি কাঁপানো একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে। ইসরায়েল জানায়, তাদের জঙ্গি বিমানগুলো গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের অস্ত্র উৎপাদন স্থাপনাগুলো ও টানেলগুলো লক্ষ্যস্থল করেছে।ভোর হওয়ার আগে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা দক্ষিণ লেবাননেও হামাসের লক্ষ্যস্থলগুলো আঘাত হেনেছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সেখানে রাশিদিয়া শরণার্থী শিবির এলাকার আশপাশের বাসিন্দারা তিনটি বড় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।   এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে লেবানন থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে চালানো রকেট হামলা চালানোর পর। এসব হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করেছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে ৩৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে, এরমধ্যে ২৫টিকে বাধা দিয়ে ধ্বংস করেছে ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।

২০০৬ সালের পর লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনা এটি। ওই বছর ইসরায়েল লেবাননের ব্যাপক অস্ত্রে সজ্জিত রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিজবুল্লার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।রাশিদিয়া শরণার্থী শিবিরে লেবাননে থাকা ফিলিস্তিনি উপদলের উপস্থিতি আছে। আগে তারা বিক্ষিপ্তভাবে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে এই সীমান্তটি মোটামুটি শান্তই ছিল।বৃহস্পতিবারের ওই রকেট হামলার পর টেলিভিশনে প্রদর্শিত ফুটেজে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী শহর শলোমির রাস্তায় ধ্বংস হওয়া যাওয়া গাড়ির পাশাপাশি বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডুলি উঠতে দেখা গেছে। ইসরায়েলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রকেট হামলার পর উত্তরাঞ্চলের হাইফা ও রোশ পিনা বিমানবন্দর বন্ধ করে দিয়েছে তারা।ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সীমান্তের অপর পাশ থেকে মর্টারের গোলাও ছোড়া হয়েছে।

“ইসরায়েলের জবাব, আজ রাতে ও পরবর্তীতে, আমাদের শত্রুদের জন্য উল্লেখযোগ্য সঠিক মূল্য হবে,” মন্ত্রিসভার এক নিরাপত্তা বৈঠকের পর বলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।গাজায় ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো আঘাত হানার সময় জবাবে এক পশলা রকেট ছোড়ায় হয় আর ইসরায়েলের শহরগুলো ও সীমান্ত এলাকাগুলোতে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে, তবে এতে কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি।  মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসে জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযানকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকা সংঘর্ষের মধ্যে এই আন্তঃসীমান্ত হামলার ঘটনাগুলো ঘটলো। চলতি বছর রমজান চলাকালেই ইহুদিদের নিস্তার পর্বের ছুটির দিন শুরু হচ্ছে।এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, “গাজা ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে এই নির্লজ্জ আগ্রাসন ও ভয়াবহ উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং তা এই অঞ্চলের জন্য যে ফলাফল বয়ে আনছে তার জন্য আমরা জায়নবাদী দখলদারিত্বকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করছি।” 

আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি পুলিশের অভিযান নিয়ে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের প্রতিবেশী ও অন্যান্য আরব দেশগুলোও ইসরায়েলের পুলিশের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে।বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের পুলিশ জানায়, ইসরায়েলের উম আল ফাহেম, সাখনিন ও নাজারেথের মতো আরব প্রধান শহরগুলোতেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।গাজা থেকে ফিলিস্তিন পপুলার রেজিস্ট্যান্স কমিটির মুখপাত্র মোহাম্মদ আল ব্রাইম লেবানন থেকে ইসরায়েলে চালানো রকেট হামলার প্রশংসা করেছেন, তবে এর দায় স্বীকার করেননি।তিনি বলেছেন, “এ ধরনের অসভ্য ও বর্বরভাবে আল আকসায় অভিযান চালানোর পর কোনো আরব আর কোনো মুসলিম চুপ করে থাকতে পারে না।”লেবানন থেকে হওয়া রকেট হামলার জন্য ইসরায়েল হামাসকে দায়ী করলেও দেশটির শক্তিশালী শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লার অনুমতি নিয়েই সেখানে থাকা ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এ হামলা চালিয়েছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।   

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য