Saturday, January 25, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদহিজাব ছাড়াই দাবা টুর্নামেন্টে ইরানি তরুণী

হিজাব ছাড়াই দাবা টুর্নামেন্টে ইরানি তরুণী

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৮ ডিসেম্বর: আন্তর্জাতিক এক দাবা টুর্নামেন্টে হিজাব ছাড়াই অংশ নিয়েছেন ইরানের এক নারী দাবাড়ু। দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর যে কয়েকজন নারী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিজাব ছাড়াই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, তাঁদের সর্বশেষ জন হলেন এই দাবাড়ু। পোশাকবিধি না মানার অভিযোগে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনিকে (২২) আটক করে ইরানের নীতি পুলিশ। হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে দেশটির ধর্মীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। 

ইরানের কঠোর পোশাকবিধিতে নারীদের মাথা ঢেকে চলা বাধ্যতামূলক। দেশটির সংবাদমাধ্যম খবরভারজেশি ও এতেমাদ গত সোমবার জানায়, কাজাখস্তানের আলমাতায় এফআইডিই ওয়ার্ল্ড র‍্যাপিড অ্যান্ড ব্লিৎজ চেস চ্যাম্পিয়নশিপে হিজাব ছাড়াই অংশ নেন সারা খাদেম। দুটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে টুর্নামেন্টে সারাকে হিজাব ছাড়া দেখা যায়। খবরভারজেশি অবশ্য সারার হিজাব পরা ছবিও প্রকাশ করেছে। তবে এটি ওই টুর্নামেন্টেই তোলা তাঁর ছবি কি না সে বিষয়ে কিছু বলেনি। টুর্নামেন্ট কিংবা প্রকাশিত খবরের বিষয়ে সারার ইনস্টাগ্রামে কিছু বলা নেই। রয়টার্স সরাসরি বার্তা পাঠিয়ে জানতে চাইলেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। 

সারা ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সারাসাদাত খাদেমালশারেইহ নামেও পরিচিত। আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে সারার অবস্থান ৮০৪তম। ২৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান এই টুর্নামেন্টে তাঁকে একজন প্রতিযোগী হিসেবে এই ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত দেখানো হয়েছে। ইরানের চলমান বিক্ষোভে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। অনেককে হিজাব খুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দিতেও দেখা গেছে। এই বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ইরানের কয়েকজন নারী ও পুরুষ ক্রীড়াব্যক্তিত্ব। অক্টোবরে ইরানি পর্বতারোহী এলনাজ রেকাবি দক্ষিণ কোরিয়ায় হিজাব ছাড়াই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। অবশ্য পরে তিনি জানান, অনিচ্ছাকৃতভাবে তিনি কাজটি করেছেন। 

নভেম্বরে তেহরানে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নিজের হিজাব খুলে যাওয়ার বিষয়টি খেয়াল করেননি বলে জানান এক ইরানি তিরন্দাজ। যদিও ভিডিওতে তাঁকে হিজাব খুলে পড়ে যেতে দিতে দেখা যায়। এ ঘটনাকে বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন হিসেবেই অনেকে দেখেছেন। নভেম্বরে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে ইরানের উপক্রীড়ামন্ত্রী মারিয়াম কাজেমিপোর বলেন, কিছু নারী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ইসলামি মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। পরে নিজেদের কর্মের জন্য তাঁরা ক্ষমা চেয়েছেন। ইরানি কর্তৃপক্ষ কঠোর হাতে চলমান বিক্ষোভ দমন করে আসছে। অ্যাকটিভিস্টদের পরিচালিত এইচআরএএনএ বার্তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার নাগাদ এই বিক্ষোভে ৬৯ শিশুসহ ৫০৭ জন নিহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর ৬৬ জন সদস্যও নিহত হন। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ এখন পর্যন্ত ৩০০ জনের মতো নিহত হয়েছেন বলে সরকারি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য