Saturday, February 8, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানো ‘পুরোপুরি অর্থনৈতিক’: সৌদি আরব

ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানো ‘পুরোপুরি অর্থনৈতিক’: সৌদি আরব

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,১৩ অক্টোবর: ওপেক প্লাসের তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত ‘পুরোপুরি অর্থনৈতিক’ এবং উৎপাদক গোষ্ঠীটি ভোক্তা ও উৎপাদক উভয়ের স্বার্থে কাজ করে বলে দাবি করেছে সৌদি আরব।যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি সত্ত্বেও গত সপ্তাহে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বিশ্বের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর গোষ্ঠী ওপেক প্লাস তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।বৃহস্পতিবার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ওপেক প্লাস সদস্যদেশগুলো চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বিবেচনায় নিয়ে এবং বাজারের অস্থিরতা কমানোর লক্ষ্যে সদস্যদের সর্বসম্মতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে।এই সিদ্ধান্ত ‘তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নয়’ এমন সমালোচনামূলক বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে তারা, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।গত সপ্তাহে ওপেক প্লাস জানায়, তারা তাদের তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল হ্রাস করবে।তাদের এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরব সম্পর্কে এর প্রভাব পড়বে।”অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও রাশিয়াসহ তাদের মিত্র তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মিলিত গোষ্ঠী ওপেক প্লাস। গোষ্ঠীটি যেন তেল উৎপাদন হ্রাস করার সিদ্ধান্ত না নেয় তার জন্য মার্কিন কর্মকর্তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক তদ্বির করেছিল, কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে দিয়ে উৎপাদনের নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে ওপেক প্লাস।সৌদি আরব মস্কোর ‘আজ্ঞাবহ’ হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেইনে মস্কোর সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দিয়ে তাদের শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করে, এতে আপত্তি তুলেছিল সৌদি আরব।    

সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে অনামা এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তেলের উৎপাদন হ্রাসে সিদ্ধান্ত ‘পুরোপুরি অর্থনেতিক প্রেক্ষাপটে’ নেওয়া হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, “সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সাথে ধারাবাহিক পরামর্শের মধ্যেমে এটি পরিষ্কার করেছে, সব ধরনের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত পরামর্শ অনুযায়ী এক মাসের জন্য স্থগিত করলে নেতিবাচক অর্থনৈতিক পরিণতি হতে পারে।”  বাইডেনের আশা ছিল, নভেম্বরে হতে যাওয়া মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফের জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া ঠেকিয়ে রাখা যাবে।এমনিতেই তার ডেমোক্রেটিক পার্টি মার্কিন কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে তা ভোটের ফলে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।ইউক্রেইন যুদ্ধের এ সময় রাশিয়ার জ্বালানি আয় সীমিত করে আনাও ওয়াশিংটনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল।এজন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোতে তদ্বির চালিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি, পররাষ্ট্র নীতি ও অর্থনৈতিক দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বিদেশি কাউন্টারপার্টদেরকে তেলের উৎপাদন কমানোর বিরুদ্ধে ভোট দিতে অনুরোধও করেছিলেন বলে এই বিষয় সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে।বাইডেনের জ্বালানি বিষয়ক শীর্ষ দূত আমোস হচস্টেইন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রেট ম্যাকগার্ক ও ইয়েমেনে মার্কিন প্রশাসনের বিশেষ দূত টিম লেন্ডারকিংকে নিয়ে ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তসহ জ্বালানি সংক্রান্ত নানান ইস্যুতে আলোচনা করতে গত মাসেই সৌদি আরব সফর করেছিলেন। তাদের ওই সফর ব্যর্থ হয়েছে, যেমনটা ব্যর্থ হয়েছিল বাইডেনের জুলাই মাসের সৌদি আরব সফর।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য