Thursday, November 13, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদসমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি: ২০৫০ সাল নাগাদ ঝুঁকিতে ১৫ লাখ অস্ট্রেলীয়

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি: ২০৫০ সাল নাগাদ ঝুঁকিতে ১৫ লাখ অস্ট্রেলীয়

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ সেপ্টেম্বর ।। অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় এলাকায় বাস করা ১৫ লাখ মানুষ ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে সতর্ক করা হয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু প্রতিবেদনে। দেশটির প্রথম জাতীয় জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়ন বিষয়ক এই প্রতিবেদনে, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, দাবদাহ, খরা ও দাবানলের মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দূর্যোগ আরও ঘনঘন হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

“অস্ট্রেলিয়ানরা ইতোমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বেঁচে আছেন,” বলেছেন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ক্রিস বাউয়েন। তিনি বলেন, “কিন্তু এটা পরিষ্কার যে, এখন আমাদের ঠেকানো প্রতিটি ডিগ্রি উষ্ণায়ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ঙ্কর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।”

৭২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের তিনটি পরিস্থিতি—১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি এবং ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি—পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মাথাপিছু দূষণের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যেই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির বেশি উষ্ণায়ন পেরিয়ে গেছে। তাপমাত্রা যদি ৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়, সিডনিতে তাপজনিত মৃত্যুর হার ৪০০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে এবং মেলবোর্নে তা প্রায় তিনগুণ হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়া সরকার ২০৩৫ সালের কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্য ঘোষণা করার কয়েকদিন আগে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কোনও সম্প্রদায়ই জলবায়ু-ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে না। এসব ঝুঁকি হবে “ক্রমবর্ধমান, পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত এবং একসঙ্গে ঘটমান।”

প্রতিবেদনে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, তীব্র দাবদাহে মৃত্যুর হার বাড়বে, ভয়াবহ বন্যা ও দাবানলে পানির মান খারাপ হবে, এবং সম্পত্তির মূল্য কমে যাবে ৬১ হাজার ১শ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; ৩০০ বিলিয়ন পাউন্ড)।

২০৫০ সাল নাগাদ উপকূলীয় ‘উচ্চ’ এবং “অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা”-তে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী বেড়ে যাবে। যদি জনসংখ্যা বর্তমান অবস্থায় থাকে, তবে ঝুঁকির মুখে পড়বে ১৫ লাখের বেশি মানুষ। বিশেষত অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল, প্রত্যন্ত এলাকা এবং বড় শহরের বাইরের উপশহরগুলো বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় “এটি স্বাস্থ্যসেবা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, প্রাকৃতিক প্রজাতি ও প্রতিবেশব্যবস্থা, এবং প্রাথমিক শিল্পগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।” এছাড়া, জরুরি সেবাদাতাদের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

প্রতিবেদন আরও জানানো হয়, কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার নিংগালু রিফের মতো প্রবাল প্রাচীর, যেগুলো ইতোমধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ সাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, উষ্ণ সমুদ্রের কারণে তা আরও বেশি সাদা হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে এবং জীববৈচিত্র্য হারানোর আশঙ্কা বাড়বে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য