স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ নভেম্বর : তাইওয়ানের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, তাইওয়ানের প্রাতাস দ্বীপপুঞ্জে হামলা করা হবে কিনা তা নিয়ে অভ্যন্তরীনভাবে বিতর্ক করেছে চীন। তবে তারা ২০২৪ সালের আগে তা করবে না ওই বছর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
তাইওয়ানের ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি ব্যুরো’র মহাপরিচালক চেন মিং-টং বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এক বৈঠকে আইনপ্রণেতাদেরকে একথা বলেন।
তবে প্রাতাস দ্বীপে হামলার পদক্ষেপ নিয়ে চীনের বিতর্ক করার কথা তিনি কীভাবে জানলেন এবং কেন এই হামলা আগামী কয়েক বছরে ঘটবে না তা খোলাসা করেননি চেন মিং-টং।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চেনের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য করেনি। তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি প্রদেশ বলেই মনে করে চীন।
অন্যদিকে, তাইওয়ান দাবি করে তারা স্বাধীন, সার্বভৌম। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে রাখা ‘অনিবার্য’ বলে মনে করেন এবং এ লক্ষ্যে তিনি দ্বীপটিকে নানা দিক থেকেই চাপে রাখছেন।
গত মাসে চীনের প্রবল চাপের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাইওয়ানকে। ওই সময় চারদিনেই তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানায় প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠায় চীন। চীনের যুদ্ধবিমান বার বার তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়ায় তাইপে এবং বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পায়।
প্রাতাস দ্বীপপুঞ্জ মোটামুটিভাবে দক্ষিণ তাইওয়ান এবং হংকংয়ের মাঝামাঝি অবস্থিত। তাইওয়ানের মূল ভূখণ্ড থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বের কারণে এই দ্বীপপুঞ্জে চীনের আক্রমণ করে বসার ঝুঁকি আছে বলে মনে করেন কিছু কিছু নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ।
চীন তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য দ্বীপদেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে।
তাইওয়ানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা চেন মিং টন পার্লামেন্টের বৈঠকে বলেন, “প্রাতাস দ্বীপপুঞ্জ আক্রমণ এবং দখলের মাধ্যমে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তাইওয়ানকে জোর করে আলোচনা বসানোর পাঁয়তারা চলছে। আমাদের হিসাব-নিকাশ বলছে, এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের মেয়াদকালে ঘটবে না।”
তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুওমিনতাংয়ের এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন চেন। ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট সাইয়ের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষের আগে তাইওয়ান চীনের হামলার শিকার হতে পারে কিনা সে প্রশ্ন করা হয়েছিল চেনকে।
জবাবে চেন আরও বলেন, “সত্যি বলতে, তারা (চীন) এর আগেও অভ্যন্তরীনভাবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করেছে।” কিন্তু এ ধরনের বিতর্ক বা আলোচনা কখন হয়েছিল সে ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি।
তাইওয়ানের কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, কর্তৃপক্ষ একটি যে বিষয় নিয়ে চিন্তিত তা হল, উত্তেজনার পারদ চড়লে চীন প্রাতাস দ্বীপপুঞ্জ দখল করে নিতে পারে, যা এ অঞ্চলকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
তাইওয়ান বারবারই বলে এসেছে, তারা চীনের সঙ্গে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়। কিন্তু একইসঙ্গে তারা তাদের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখারও অঙ্গীকার করেছে।
চেন মিং টন আইনপ্রণেতাদেরকে বলেন, “চীনের সঙ্গে অতীতের চেয়ে তাইওয়ানের উত্তেজনা এখন বেশি হলেও তা তাইওয়ানকে আক্রমণ করার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। আগামী এক, দুই, তিন বছরে, প্রেসিডেন্ট সাইয়ের মেয়াদের মধ্যে এটি ঘটবে না।”