স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ নভেম্বর : আবারো আন্দোলনের নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি এবং আমরা ১০,৩২৩। সরকার গাল ভরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। মুখ খুললে আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সরকার মুখে বলেন বড় বড় কথা কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিয়ে পালন করছেন না সরকার প্রধান মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের বর্বরতা এবং স্বৈরাচারীত্বে রাজ্যে অরাজগতা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ কিছু বলতে পারে না, তার বাড়িতে গিয়ে হাড় ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
এমনকি চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা আক্রামণ থেকে বাদ যাচ্ছে না। তাই সরকারকে চাপে না ফেললে সরকার সদয় হবে না। চুপ করে থাকবে না চাকরিচ্যুতির শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাই আগামী ১০ নভেম্বর ১২ টায় শিক্ষা অধিকর্তা কাছে প্রতিনিধিত্বমূলক ডেপুটেশন প্রদান করা হবে। ডেপুটেশনে আগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল সংঘটিত করবে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি এবং আমরা ১০,৩২৩ -এর যৌথ প্লাটফর্ম। শুক্রবার আগরতলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান আমরা ১০,৩২৩ -এর কনভেনার ডালিয়া দাস। এদিকে চাকরিচ্যুত শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ সাহা জানান রাজ্য সরকার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখন পর্যন্ত জনসম্মুখে আনে নি। কারণ চাকুরিচ্যুতির শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্দোষ। কিন্তু মুখ বধির সরকার তদন্ত রিপোর্ট লুকিয়ে রাখতে চাইছে। এবং সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করা হয়েছে। কারণ শুধু রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার চাকরীচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা নয়, আইনগতভাবেও চাকরীচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা ষড়যন্ত্রের শিকার। মামলা শুনানির আগেই নিষ্পত্তি করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে ১০,৩২৩ যে পলিসিতে নিয়োগ হয়েছিল সেই পলিসিতে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকারা বর্তমানে চাকরি করছেন। তাহলে ১০,৩২৩ -এর জন্য আইন ভিন্ন কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি -তে নিয়োগ নিয়ে সরকার প্রতারণা করছে। সুপ্রিম কোর্টে ও হাইকোর্টের এফিডেভিট পেশ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এফিডেভিট মিথ্যা তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কারণ হাইকোর্টের এফিডেভিট প্রতারণা বলে জানানো হয়। আরো বলেন সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব আগরতলার জনসভায় বলেছেন চাকরীচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্থায়ী সমাধান করতে সমস্ত ধরনের সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে আইনি সহযোগিতা চেয়ে কোন ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যায় নি। তাই চাকরীচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবহিত করতে চান তাদের রাজনৈতিকভাবে দেখলে চলবে না। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাদের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ২০১৮ নির্বাচনের আগে বহিরাগত নেতৃত্বে এসে রাজ্যে ১০,৩২৩ -এর চাকরি স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ হয়নি বলে জানান তিনি। এছাড়াও এদিন শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে বলেন মন্ত্রীর কথায় যেন তারা কাজ না করেন। চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা সুপ্রিমকোর্টের এমন কিছু কাগজপত্র পেয়ে গেছেন তাতে তারা আগামী দিনে দপ্তরে আধিকারিকদের বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত। সুতরাং আধিকারিকরা বিপদে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। পাশাপাশি সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয় বর্তমান সরকার আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা না করলে চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা সারা রাজ্যে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। প্রয়োজনে জাতীয় সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করতে বাধ্য হবে। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতৃত্ব অজয় দেববর্মা, কমল দেব সহ অন্যান্যরা।