স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১১ ফেব্রুয়ারি : মহারাষ্ট্রে গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোম (জিবিএস) আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০ ছাড়াল! সোমবার এমনটাই জানিয়েছে সে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। জানানো হয়েছে, সব মিলিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৯২জন রোগী ভর্তি রয়েছেন, যাঁদের সকলেরই গিয়ান-ব্যারের অনুরূপ উপসর্গ রয়েছে। এঁদের মধ্যে ১৬৭ জনের শরীরে সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। বাকিদের এখনও শারীরিক পরীক্ষা চলছে।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যে স্নায়ুর বিরল এই রোগের বলি হয়েছেন সাত জন। এঁদের সকলেরই শরীরে জিবিএসের উপসর্গ ছিল। গত সপ্তাহেই বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধার দেহে জিবিএসের খোঁজ মিলেছে। জ্বর এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ নিয়ে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে এসেছিলেন তিনি। পরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন ওই বৃদ্ধা। এ ছাড়া, অন্যান্য আক্রান্তের মধ্যে ৩৯ জন পুণে পুরসভা এলাকার, ২৯ জন পিম্পরি চিঞ্চওয়াড় পুরসভা এলাকার এবং ৯১ জন আশপাশের গ্রামাঞ্চলের। পুণে ছাড়া অন্যান্য জেলা থেকেও আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এঁদের মধ্যে ২১ জন রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক। তাঁদেরকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ৪৮ জন আইসিইউ-তে রয়েছেন। তবে অনেককেই চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাজ্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। যে যে এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেই অঞ্চলগুলিকে নজরে রাখা হচ্ছে। সংক্রমণে রাশ টানতে গত সপ্তাহেই নান্দেদ গ্রাম, ধায়ারি এবং পুণে শহরের সিংহগড় রোড সংলগ্ন ৩০টি বেসরকারি জল সরবরাহ কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়েছে পুণে পুরসভা। ওই এলাকার জলের নমুনা পরীক্ষার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরপ্রশাসন।
কী হয় এই রোগে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু জানিয়েছে, গিয়ান-ব্যারে সিনড্রোমের প্রথম উপসর্গ হল দুর্বলতা। প্রথমে পা দু’টো দুর্বল হয়ে যায়। ক্রমে হাত, মুখের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। কিছু রোগী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জিবিএস আসলে একটি বিরল ‘অটোইমিউন ডিসঅর্ডার’। এই রোগে নিজের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেরই স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। আক্রান্তদের ডায়েরিয়া, পেটব্যথা, জ্বর, বমি ভাবের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।