স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৭ জুলাই : করোনা সংক্রমিত হয়ে ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।২৫৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯০ জনের শরীরে সংক্রমণ সনাক্ত হয় বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের বুলিটিনে জানা গেছে। পশ্চিম জেলায় রেকর্ড সংক্রমণ। সংক্রমণের পরিসংখ্যান পশ্চিম জেলায় ১৫৭ জনের, সিপাহীজলা জেলাতে সংক্রমিত ৩৩ জন, খোয়াই জেলায় সংক্রমিত ১২ জন, গোমতী জেলায় সংক্রমিত ২৬ জন, দক্ষিণ জেলার সংক্রমিত ২০ জন, ধোলাই জেলায় সংক্রমিত ১৫ জন, ঊনকোটি জেলায় সংক্রমিত ৬ জন, উত্তর জেলায় সংক্রমিত ২১ জন, সংক্রমণের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে ১১.৩৯ শতাংশ।
সুস্থতার হারে তুলনামূলকভাবে কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে সুস্থতার হার ৯৭.৮৪ শতাংশ। নতুন করে সুস্থ হয়েছে ৩৭ জন। রাজ্যের চিকিৎসাধীন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১,২৮২ জন। সংক্রমণ প্রতিদিন যেভাবে রেকর্ড করে চলেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ট্রিপল সেঞ্চুরি করবে। এর পেছনে মূলত দায়ী রাজনৈতিক মহল বলে মনে করছে সচেতন মহল। প্রশাসনিক নির্দেশিকা বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রতিদিন চলছে পশ্চিম জেলায় রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচি। রবিবার আগরতলা শহরে দেখা যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যকরণী বৈঠক, বিক্ষোভ মিছিল, সাংবাদিক সম্মেলন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি। যা পরিণাম হয়তো ভুগতে হবে সাধারণ মানুষকে। কারণ সঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনিক ভাবে মাস্ক পরিধান করা এবং দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
কিন্তু কে শুনে কার কথা। সংক্রমণ এতটা অসচেতন ভাবে গ্রহণ করে চলেছে শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি, যা হয়তো গণসংক্রমণের রূপ ধারণ করার পেছনে মূল দায়ী হতে পারে। কারণ রবিবার বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের কার্যকারিনী বৈঠকে দেখা গেছে অধিকাংশ কার্যকর্তার মুখে মাস্ক নেই। ছিলনা দৈহিক দূরত্ব। মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়া আর কোন কার্যকর্তার মুখে ছিল না মাস্ক। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের কাউন্সিলরদের মুখেও ছিল না মাস্ক। আর দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দুরের কথা। একই চিত্র ফুটে উঠেছে বনমালীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কার্যকরণী বৈঠকে। বৈঠকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, মন্ডল সভাপতি থেকে শুরু করে অধিকাংশ কার্যকর্তার মুখে ছিল না মাস্ক। দৈহিক দূরত্ব ছিল সম্পূর্ণ বেলাগাম।
এদিকে এদিন আগরতলা শহরে কর্মসংস্থানের দাবিতে মিছিল সংঘটিত করেছে বাম যুব সংগঠন ডি ওয়াই এফ আই। মিছিলে ছিল অস্বাভাবিক ভিড়। মাস্ক পরিধান না করেই শহরের রাজপথে চিৎকার করে স্লোগান দিয়েছে কর্মসংস্থানের জন্য। এমনকি ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিকের মুখে ছিল না মাস্ক পরিধান করা।
এদিন দুপুরে আবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে যুব কংগ্রেস। যুব কংগ্রেস সভাপতি রাখু দাস সহ কোন নেতার মুখে মাস্ক পরিধান ছিল না। রাজনৈতিক নেতাগুরুদের এ ধরনের ভূমিকায় চিন্তিত সচেতন মহল। যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে এর দায়ভার কে নেবে ? পরিস্থিতি উদ্বেগ জনক, বিশেষ করে পশ্চিম জেলায়। প্রতিদিন যেভাবে রেকর্ড সংক্রমণ হচ্ছে তাতে গণসংক্রমণের রূপ ধারণ করতে পারে বলে অভিমত সচেতন-মহলের। এদিকে রাজ্যে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়ে সুস্থ হয়েছে ১,০০,০৫৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯২১ জনের।