স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৬ জুলাই : শনিবার বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও মতিনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ রাধা দেব্বর্মা, জেলা শাসক বিশ্বশ্রী বি, ত্রিপুরা হজ কমিটির চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সঞ্জয় সরকার, রাজ্যের বিশিষ্ট সমাজসেবী দেবব্রত ভট্টাচার্য্য , কিশোর বর্মন সহ অন্যান্যরা । প্রথমে মতিনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তারপর মতিনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনটি ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা। এরপর মুখ্যমন্ত্রী জান বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠানটি হয় বক্সনগর কমিউনিটি হলের নজরুল মঞ্চের মাঠে। নবনির্মিত হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী সহ সকল অতিথিরা চলে আসেন মূল অনুষ্ঠান স্থলে । করোনা টিকা স্কুলের শতভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রদান করায় বক্সনগর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদানন্দ দেববর্মার হাতে সম্মাননা তুলে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার ও সেবিকাদের দিয়ে পরিষেবা দিলেই স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে না। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন করতে গেলে স্বাস্থ্যকর্মীদের সাধারণ মানুষকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। তখনই স্বাস্থ্য পরিষেবায় উন্নত হওয়া সম্ভব হবে। অনেক সময় রোগীদের আত্মীয় পরিজন ডাক্তারকে সহযোগিতা করেন না। যে কারনে স্বাস্থ্য কর্মীরা সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারে না। বাধ্য হয়ে চিকিৎসকের চিকিৎসার জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়। গ্রামের চিকিৎসা ভালো হয় না, শহরে বা বহিঃরাজ্যে বা দেশের বাইরে রোগীকে নিয়ে গেলে চিকিৎসা ভালো হবে- এই ধরনের মনোভাব চিকিৎসকদের অসহযোগী মনোভাব বলে জানান তিনি। এই মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে স্পেশালিষ্টের অভাব রয়েছে। অনেক স্পেশালিষ্ট অবসরে গেছেন। তাদের একটা পারিশ্রমিক দিয়ে কাজে নেওয়া যায় কিনা সেই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে সরকার বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে দুটি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। একটি ডেন্টাল কলেজ করা যায় কিনা তার প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মিশন মোডে চেষ্টা করা হচ্ছে এই কলেজ স্থাপনের। রাজ্য সরকার নতুন নতুন চিকিৎসকদের নিয়োগ করছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
৩৭৯ টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র রাজ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গ্রামীন এলাকার মানুষের হাতের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌছে দেনে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলি। সেই লক্ষ্যে গোটা দেশে এই কাজ চলছে বলে জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। মতিনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি আগে ৬ শয্যা বিশিষ্ট ছিল। বর্তমানে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০। রয়েছে ইন্ডোর ও আঊটডোরের ব্যবস্থা। কমিউনিটি হেলথ অফিসার পদে নিয়োগ করা হয়েছে। তারা এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলিকে সুচারু ভাবে পরিচালনা করবে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে অধিক প্রাধান্য দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বলে জানান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।