Friday, February 7, 2025
বাড়িরাজ্যনেশা কারবারিদের হাতে আক্রান্ত ৪ মহিলা

নেশা কারবারিদের হাতে আক্রান্ত ৪ মহিলা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ অক্টোবর : পশ্চিম ভুবন বিনপাড়া এলাকায় মদ জুয়া খেলার রমরমা ব্যবসা রুখতে সরব হয়েছিল প্রমিলা বাহিনী। কিন্তু মদ আর জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতেই এলাকায় বেআইনিভাবে মদ বিক্রেতাদের হাতে আক্রান্ত হতে হলো চার মহিলাকে। শনিবার পশ্চিম মহিলা থানায় মামলা করতে আসলে মামলা গ্রহণ করেনি পশ্চিম মহিলা থানার পুলিশ।

 উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে রাজ্যে জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নেশা মুক্ত ত্রিপুরা ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়তে রাজ্য পুলিশের একাংশ পুলিশ অফিসারের মাথা ব্যাথা রয়েছে তা হয়তো জানা নেই মুখ্যমন্ত্রীর। ফলে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়া সম্ভব হয় নি সাড়ে তিন বছরেও। তা আবারো প্রমাণ দিল শনিবার। জানা যায় পশ্চিম ভুবন বিনপাড়া দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মদের রমরমা ব্যবসা চলছে। পাল্লা দিয়ে এলাকায় জুয়া খেলার রমরমা বেড়ে চলেছে। এলাকার ঘরে ঘরে যুবকরা সেই নেশায় ডুবে যাচ্ছে। ফলে এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনার থেকে শুরু করে পারিবারিক অশান্তির ঘটনা বেড়ে চলেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় নেই কোনো রকম টহলদারি।

আর এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি এলাকার মহিলারা সরব হয়, আর এর রেশ ধরে মারধরের শিকার হতে হয় এলাকার চার মহিলাকে। পুলিশের উপর ভরসা হারিয়ে এলাকার মহিলারা গত ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে নিয়মিত মদ ও জুয়া বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে এলাকায়। অবশেষে শুক্রবার রাতে এলাকার চার মহিলাকে চুলে ধরে বেধড়ক মারধর করে চার মদ বিক্রেতা। অভিযুক্তরা রাজেন্দ্র বিন, স্বাগত বিন, আকাশ বিন, দিলীপ বিন। অভিযুক্তরা চার মহিলাকে মারধর করে মহিলাদের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলে। মহিলারা এবিষয়ে রামনগর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জন্য বলেন। আজ যখন পশ্চিম মহিলা থানায় মামলা দায়ের করতে শনিবার এলাকার মহিলারা সংঘবদ্ধভাবে যায়,  তখন তাদের মামলা গ্রহণ করলেন না থানার ওসি মমতাজ হাসিনা। অবশেষে আক্রান্ত হওয়া মহিলারা পশ্চিম মহিলা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পরবর্তী সময় বিক্ষোভকারী মহিলারা সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাথে দেখা করতে গেলে, পশ্চিম মহিলা থানার ওসি মমতাজ হাসিনা বিক্ষোভকারীর মহিলাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীর মহিলাদের ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ। পরবর্তী সময় পশ্চিম থানায় গিয়ে অভিযোগ জানায় বিক্ষোভকারী মহিলারা।

তাদের অভিযোগ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের নেশার রমরমা চলছে। এলাকার যুব সমাজকে নেশার কবল থেকে বাঁচাতে তারা মাঠে নেমেছিল। এবং এই বিষয়ে রামনগর থানার পুলিশকে। পুলিশ এলাকায় গিয়ে মদ বিক্রেতাদের মদ বিক্রি না করার বিষয়ে বললে কোনো কাজ হয়নি। তাই নিয়মিত এলাকার মহিলারা মদ বিরোধী অভিযান চালাত। আর এ অভিযান চালানোর ফলেই শুক্রবার রাতে মারধর করা হয় চার মহিলাকে। শনিবার সকালে পশ্চিম মহিলা থানা এসে যখন মামলা দায়ের করতে চায় মহিলারা তখন জানতে পারেন এলাকার মদ বিক্রেতারা মহিলাদের বিরুদ্ধে পশ্চিম থানায় এসে মিথ্যা মামলা করে গেছেন। এবং পাল্টা মামলা মহিলাদের কাছ থেকে গ্রহণ করতে চান নি পশ্চিম মহিলা থানার দাপুটে ওসি মমতাজ হাসিনা। পাশাপাশি মহিলাদের সাথে তিনি দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ তুলেন এলাকার মহিলারা। কিন্তু মমতাজ হাসিনা বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ যদিও নতুন কোন বিষয় নয়। কারণ থেকো বছরের পর বছর তিনি আগরতলা শহরের পূর্ব থানা এবং পশ্চিম থানায় থেকে কাটাচ্ছেন। বাম এবং রাম উভয় আমলে তিনি সরকারের দিও পুলিশ অফিসার। তাই চাকরি পাওয়ার পর থেকেই তিনি আগরতলা থেকে যাচ্ছেন। আর থানার শীতল রুমে বসে সরকারের নির্দেশে কাজ করে চেয়ার ধরে রাখতে জানেন ভাল করেই। এতে করে বহু মামলা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে চলে। এবং মহিলা সংক্রান্ত ঘটনা আগরতলা শহরে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সার্ভিস রুলস অনুযায়ী একজন পুলিশ অফিসারকে দু বছর পরপর বদলি হতে হয়। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর থেকে তিনি পূর্ব মহিলা থানায় দীর্ঘ বছরের পর বছর চেয়ার ধরে রাখেছেন। আর এখন পশ্চিম মহিলা থানায় বদলি হয়ে কাজের দায়ভার এড়িয়ে চলছেন তিনি এমনটাই অভিযোগ উঠে আসছে পুলিশের অন্দরমহল থেকে। কিন্তু কে শুনে কার কথা, সরকারের নির্দেশে কাজ করতে পারে বলে হয়তোবা তিনি সব আমলেই প্রিয় মহিলা পুলিশ অফিসার। তবে বলাবাহুল্য শনিবার পশ্চিম মহিলা থানায় যে দায়িত্বহীনতার ঘটনা তিনি করেছেন তা হয়তো শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ ভালো চোখে মেনে নিতে পারেন নি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য