স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ জুন : আই.পি.এফ.টি দলের অস্তিত্বের লড়াইয়ের গতির রুখে দিচ্ছে আভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী কোন্দল। রাজ্য সম্মেলন থেকে শুরু হয় দলে ঠান্ডা যুদ্ধ। দলের প্রাক্তন সভাপতি অসুস্থ বলে সদ্য সমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে সভাপতি স্থান পায়নি। সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মেবার কুমার জমাতিয়া।
কিন্তু মেবার কুমার জমাতিয়াকে সভাপতি হিসেবে মানতে নারাজ দলের প্রাক্তন সভাপতি নরেন্দ্র চন্দ্র জমাতিয়ার অনুগামীরা। কিন্তু মেবার কুমার জমাতিয়ার অনুগামীদের বক্তব্য, সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি গঠন হয়েছে তা সাংবিধানিকভাবে রীতিনীতি মেনে হয়েছে। সুতরাং দলের সভাপতি মেবার কুমার জমাতিয়াই। কিন্তু প্রাক্তন সভাপতি নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মার অনুগামীদের বক্তব্য তারা দলের সভাপতি হিসেবে মেবার কুমার জমাতিয়াকে মানতে চায় না। তারা দলের সভাপতি হিসেবে নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মাকে গুরুত্ব দেবে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মারাত্মক আকার ধারণ করতে চলেছে।
নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা আগরতলা প্রেসক্লাবে শনিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি সদস্যদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। আইপিএফটি দলের সাংগঠনিক বিষয়ে ও রণকৌশল সহ একাধিক বিষয়ে এইদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়। বিগত দিনে দলের পক্ষ থেকে যে সকল কর্মসূচী গুলি হাতে নেওয়া হয়েছে সেই গুলি কতটা কার্যকর করা সম্ভব হয়েছে সেই বিষয়ে এইদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি ২৩ আগস্ট তিপ্রাল্যান্ড দাবি দিবস পালনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এইবার দিল্লী অভিযানের মাধ্যমে দিনটি পালন করা হবে। এই সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচী কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এইদিনের বৈঠকে বলে জানান নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা। এদিন বৈঠকের পর আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব অঘোর দেববর্মা, প্রাক্তন এম.ডি.সি কৃষ্ণমোহন জমাতিয়া, জাকু দেববর্মা, রমেন রিয়াং আই.পি.এফ.টি দলে যোগদান করেছেন। আগামী দিনে পৃথক রাজ্যের মতাদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চান তারা। তাই এদিন যোগদানকারী চার নেতৃত্বকে পুষ্পার্ঘ্য তুলে দিয়ে দলের স্বাগত জানানো হয়েছে বলে জানান এন সি দেববর্মা। আরো বলেন, সরকারের শরিক দল হিসেবে গত চার বছরে আইপিএফটি রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা এবং জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য কিছু করে নি, এই বার্তাটি সম্পূর্ণ ভুল। যারা এ ধরনের বার্তা দিচ্ছে তাদের বিষয়টা মূল্যায়ন করা দরকার। তবে মূল দাবি তিপ্রাল্যান্ড। আর এই পৃথক রাজ্যের দাবিতে থেকে আই.পি.এফ.টি সরে আসে নি। এই দাবি নিয়ে আগামী দিনে ময়দানে লড়াই করবে আই.পি.এফ.টি।
কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো আগামী ২ জুলাই আই.পি.এফ.টি মেবার গুষ্ঠীর তিপ্রা মথায় মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজধানীর চন্দ্রমহলে শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান আইপিএফটি -র ছাত্র ও যুব সংগঠন, মহিলা সংগঠনের নেতৃত্ব। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক সত্যরঞ্জন ত্রিপুরা জানান নরেন্দ্র দেববর্মা গত সাড়ে চার বছরে কোন কিছুই করেন নি। তিনি সভাপতি না হলেও নিজেকে সভাপতি হিসেবে দাবি করছেন। কিন্তু দলের সভাপতি হিসেবে নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মাকে মান্যতা দেয় না। আদর্শ এবং রীতিনীতি মেনে মেবার কুমার জমাতিয়া সভাপতি হয়েছেন। তিনিই দলের সভাপতি। তাই থানসার স্বার্থে আগামী ২ জুলাই আগরতলা শহরে একটি জমায়েত করা হবে। সব মহকুমা থেকে কার্যকর্তা এবং কর্মীরা এদিন জমায়েতে অংশগ্রহণ করবেন। দলের এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো আগামী ২০২৩ হবে শেষ লড়াই। আর এই লড়াই জোরদার করতে আই.পি.এফ.টি তিপ্রা মথাতে মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু দেববর্মা, মহিলা সংগঠনের সহ-সভানেত্রী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।তবে থানসার নামে দলের অন্দরে ঠান্ডা লড়াই আগামী দিনে কোন দিশা দেখাবে সেটা সময় ভালো বলবে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।