স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৬ জুন : সোমবার প্রথমে টিআরবিটি অফিসের সামনে জমায়েত হয়। তারপর চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে সন্তুষ্ট হতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করল টেট ওয়ান ও টেট টু পরীক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায়। জানা যায়, সম্প্রতি টিআরবিটি টেট-১ ও টেট-২ পরীক্ষার চূড়ান্ত আনসার কি প্রকাশ করে।
কিন্তু দেখা যায় টেট-১ ও টেট-২ পরীক্ষার্থীরা টিআরবিটি প্রথমে আনসার কি প্রকাশ করার পর যে সকল প্রশ্নের উত্তর ও সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্ন নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিল, সেই সকল প্রশ্নের উত্তরের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় নি। টেট-১ ও টেট-২ পরীক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছিল সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নের জন্য তাদের স্টার মার্ক প্রদান করা হোক। তাও দেওয়া হয় নি। এমনকি একাধিক প্রশ্নের বিতর্কিত উত্তরকে সঠিক বলে দাবি করে চূড়ান্ত আনসার কি প্রকাশ করে টিআরবিটি। পরীক্ষার্থীরা এই নিয়ে আপত্তি জানালে টিআরবিটি-র চেয়ারম্যান সাংবাদিক সম্মেলন করে পরীক্ষার্থীদের আদালতের রাস্তা দেখিয়ে দেন। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কি টিআরবিটি চেয়ারম্যান রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়া রুখে দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের আদালতের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন? এই যখন পরিস্থিতি ঠিক তখন অর্থাৎ সোমবার টেট-১ ও টেট-২ পরীক্ষার্থীরা ন্যায়ের দাবিতে টিআরবিটি অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে টিআরবিটি চেয়ারম্যান পরীক্ষার্থীদের সাথে সাক্ষাৎ করতে সম্মত হন। তবে এই ক্ষেত্রেও তিনি নিয়ম বেধে দেন যে পরীক্ষার্থীরা কোন ধরনের কাগজ পত্র নিয়ে ওনার কক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি এইটা করেছেন একমাত্র নিজেকে বাঁচাতে তা বুঝার অপেক্ষা রাখেনা।
কারন পরীক্ষার্থীরা যদি টিআরবিটি-র ভুল প্রমান দিয়ে দেখিয়ে দেয় তবে তিনি তো কোন উত্তর দিতে পারবেন না। এক কথায় বলতে গেলে টিআরবিটি চেয়ারম্যান টিআরবিটিকে কালিমালিপ্ত করে ফেলেছেন। তবে পরীক্ষার্থীদের একটাই দাবি টিআরবিটি ভুল উত্তর গুলিকে সংশোধন করে চূড়ান্ত আনসার কি প্রকাশ করুক। তাদের মধ্যে এক পরীক্ষার্থী জানান, গত শুক্রবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন পরীক্ষার্থীদের তোলা অভিযোগ অনুযায়ী তাদের স্টারমার্ক দেওয়ার ক্ষমতা বোর্ডের নেই। সম্পূর্ণ বিষয়টা এক্সপার্টদের উপর নির্ভর করে। এক্সপার্টরা বিষয়টি বিবেচনা করেই প্রশ্নপত্র করেছেন। পরীক্ষার্থীদের যদি কোন ধরনের অভিযোগ থাকে সেটা সমাধান করার ক্ষমতা বোর্ডের নেই, প্রয়োজনে পরীক্ষার্থীরা আদালতে যেতে পারেন। এক্সপার্টরা আদালতে গিয়ে এ বিষয়ে জবাব দেবে। কারণ বিচার বিশ্লেষণ করে পুনরায় ফাইনাল আনসার কি প্রকাশ করার মতো নিয়ম নেই। চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পর পরীক্ষার্থীদের বক্তব্য বছরে দুবার টেট পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা।
কিন্তু দু বছর বাদে টেট পরীক্ষা গ্রহণ করে আবার বলছেন আদালতে যাওয়ার জন্য। কেন তারা আদালতে যাবে প্রশ্ন তোলেন তারা বোর্ড কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে। এদিকে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সন্তুষ্ট জনক আশ্বাস না পেয়ে পরীক্ষার্থীরা মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার বাসভবন ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশ। পুলিশ তাদের সাথে কথা বলে হাই সিকিউরিটি জোন এলাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলে। অথচ তারা সেখান থেকে সরে যেতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাদের আটক করতে বাধ্য হয়। পুলিশ তাদের আটক করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ আধিকারিক ধ্রুব নাথ। তিনি বলেন বেআইনিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে তারা জড়ো হয়েছিল। আগাম কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া এভাবে জমায়েত হওয়া হাই সিকিউরিটি জোন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই তাদের আটক করা হয়েছে। এদিকে এক পরীক্ষার্থী জানান, তারা ধর্মনগর, করবুক সহ দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন। অনুমতি নিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে অন্য দিন দেখা করা তাদের জন্য সম্ভব নয়। তাই তারা মুখ্যমন্ত্রী সাথে দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু সব শেষে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করা তাদের ফিকে হয়ে গেল। পুলিশ তাদের আটক করে নেয়।