স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ অক্টোবর : রাজ্যে শিল্প ও বানিজ্য দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত আই টি বিভাগের জন্য নতুন পলিসি আনা হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরা ডাটা সেন্টার পিলিসি ২০২১। বিশ্ব বিদ্যালয়, কারগরি মহাবিদ্যালয় গুলি থেকে প্রতিবছর বহু ছাত্র ছাত্রী পাশ আউট হয়। তাদের কর্ম সংস্থানের কথা মাথায় রেখে এবং আই টি সেক্টারকে আরও উন্নত করার জন্য এই পিলিসি আনা হয়েছে। চেন্নাই ও মুম্বাইয়ের পর ত্রিপুরা হচ্ছে আই টি গেইটওয়ে।
তাকে ব্যবহার করে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে এই ডাটা সেন্টার পলিসি গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার মহাকরণে রাজ্য মন্ত্রী সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে একথা বলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি আরও জানান এই পলিসি অনুযায়ী বহিঃ রাজ্যের কোন আই টি সংস্থা যদি রাজ্যে এসে ডাটা সেন্টার তৈরি করতে চায় তাহলে রাজ্য সরকার তাদের অনেক সুবিধা প্রদান করবে। রাজ্য সরকারের কোন পরিকাঠামো ব্যবহার করলে ৫০ শতাংশ ভারার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। পূর্ত দপ্তর কোন নির্মাণ করলে তাতে ৫০ শতাংশ ছাড় মিলবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে চার্জ করা হবে ৪.৭৮ শতাংশ হারে। তাদের জন্য বেশ কিছু অফার দেবে রাজ্য সরকার। সবটাই করা হচ্ছে যুবকদের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে। তিনি আরও জানান এস সি ই আর টি-র অধিকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন নিয়োগ নিতি আনা হবে। এতদিন রাজ্য সরকারের সিনিয়ার টি সি এস অফিসারকে এই অধিকর্তা হিসাবে নিয়োগ পেতেন। নতুন নিয়োগ নিতি চালু হলে সেই মোতাবেক অধিকর্তা নিয়োগ করা হবে। তাতে এস সি ই আর টি-র গুনমান আরও বৃদ্ধি পাবে। পুরো সময়ের জন্য একজন অধিকর্তা পাবে এস সি ই আর টি। এই সিদ্ধান্তও মন্ত্রী সভায় গৃহীত হয় বলে জানান তিনি। রাজ্য সরকারের অধীন এমন বহু স্কুল রয়েছে যে গুলি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। সেই সমস্ত স্কুল গুলিতে ছাত্র ও শিক্ষকের রেশিও ঠিক নেই। অথচ পরিকাঠামো পর্যাপ্ত রয়েছে। সেই স্কুল গুলিতে পঠন পাঠন ব্যহত হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই সমস্ত অব্যবহৃত স্কুল গুলিকে তুলে দেওয়া হবে সি বি এস সি –র অধীনে থাকা বেসরকারি সিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাতে। শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য সরকারী নিয়ম মেনে তারা এই স্কুল গুলি চালাবে। বছরে দুবার এই বিষয়ে তথ্য নেওয়া হবে। সেই তথ্য ওয়েব সাইটে দেওয়া হবে। যে সমস্ত বেসরকারি সিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ম মেনে স্কুল চালাতে ইচ্ছুক তাদের দেওয়া হবে স্কুল গুলি । এই স্কুল গুলির নিয়োগ নিতি তারাই দেখবে। তবে রাজ্য সরকারের সাথে মৌ স্বাক্ষর হবে তাদের। এই ক্ষেত্রে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। এতে করে রাজ্যের ছেলে মেয়েরা জাতীয় স্তরের পরীক্ষায় বসে সাফল্য অর্জন করতে পারবে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
মন্ত্রী সভায় আরও একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। রাজ্যের ৮ টি জেলার ১০০ টি স্কুলকে বাছাই করে মিশন ১০০-র অধীন বিদ্যাজ্যোতি স্কুলস হিসাবে ঘোষণা করা হবে। এই সমস্ত স্কুল গুলিকে সমস্ত ধরনের সুবিধা প্রদান করা হবে। শ্রেষ্ঠ স্কুল গুলিকে বাছাই করে এই সুবিধা প্রদান করা হবে। যাতে করে ছাত্র ছাত্রীদের পূর্ণাং বিকাশ ঘটতে পারে। এতে সিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। জয়েন্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামি নভেম্বর মাসে। ইতিমধ্যে জয়েন্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরার মাধ্যমে গ্রুফ-সি ও গ্রুফ-ডি পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই নভেম্বর মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করা না গেলে গোটা প্রক্রিয়া ভেস্তে যাবে। ইতিমধ্যে পুর নিগম ও পুর পরিষদের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেছে। তাই জয়েন্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরার মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করার বিষয়ে মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধিন স্টেট ফরেনসিক সাইন্স ল্যাবরেটরিতে দুইজন সিনিয়র সাইন্টিস্ট গ্রুফ-এ গেজেটেড পদে নিয়োগ করার জন্য দুইটি পদ পুনঃরায় সৃষ্টি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান এই দুইটি পদ পূর্বেও ছিল। কিন্তু এই দুইটি পদ লেপস হয়েগিয়েছিল। তাই এই দুইটি পদ পুনঃরায় সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়াও সমবায় দপ্তরে জয়েন্ট রেজিস্টারের একটি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আগামিদিনে এই পদটি পূরন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। টি.এফ.ডি.পি.সি লিমিটেডের এম.ডি তথা আই.এফ.এস ডক্টর রামেশ্বর দাসের চাকুরির মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে। সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান আগামি নভেম্বর মাসে চাকুরির মেয়াদ শেষ হবে আই.এফ.এস ডক্টর রামেশ্বর দাসের। তাই ওনার চাকুরির মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত সাব জেলার বিনয় পাণ্ডেকে চুক্তির ভিত্তিতে ৬ মাসের জন্য পুনরায় জেল দপ্তরে নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।