স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ অক্টোবর : লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মূল্য হ্রাস করতে কোনরকম ভ্রুক্ষেপ নেই। মঙ্গলবারও দেখা গেছে রাজ্যে পেট্রোলের মূল্য ১০৭.৭৯ টাকা এবং ডিজেলের মূল্যও ১০০ টাকার অধিক। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য। কোভিড মহামারির পর দেশের মানুষের আর্থিক আয়-উপার্জন অনেকটাই প্রভাব পড়েছে।
কিন্তু দেশে পেট্রোপণ্যের মূল্য যেভাবে লাফিয়ে বাড়ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য। তাই এর প্রতিবাদে গর্জে উঠছে রাজ্যের এবং দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তারপরও সরকারের কোনরকম হুশ ফিরছে না পেট্রোপণ্যের মূল্য হ্রাস করতে। পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্না ও বিক্ষোভ সংগঠিত করে ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন বনমালিপুর স্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রদেশ ক্যাম্পের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করা হয়।
মিছিলে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ কুনাল ঘোষ, প্রদেশ স্ট্যায়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান সুবল ভৌমিক সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। পরে গনরাজ চৌমুহনি স্থিত বি ও সি -র সামনে বিক্ষোভে সামিল হয় প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুনাল ঘোষ বলেন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য। মূল্য কমাতে সরকার কোনরকম ভূমিকা গ্রহণ করছে না। সরকার এক প্রকার নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছে। এটা সরকারের জনবিরোধী নীতি ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারকে জনবিরোধী নীতি প্রত্যাহার করতে হবে। রাজনীতি পরে হবে। মানুষ পরিবার কিভাবে চালাবে তার জন্য সরকারকে ভাবতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষের পরিবারের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। আর সরকার মানুষের সাথে এভাবে প্রতারণা করে চলেছে। তাই সরকারের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে সরকার যাতে পেট্রোল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের মূল্য কমানোর ব্যবস্থা করে। এই প্রতিবাদ সারাদেশে করে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ বিজেপি মানুষের বিপদকে উপেক্ষা করছে। স্বাধীনতার পরে প্রথম পেট্রোল এবং ডিজেলের মূল্য এতটা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বে কখনো পেট্রোপণ্যের মূল্য এতটা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়নি। দমবন্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সারা দেশে। সরকার যদি দাম কমানোর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে এই বিজেপি সরকারকে বদলে ফেলতে হবে বলে জানান তিনি। কুনাল ঘোষ আরো বলেন বিজেপি মানুষের বন্ধু নয়।
কারণ তারা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তালিকা থেকে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, আলু, পেঁয়াজ তুলে দিয়েছে কালোবাজারিদের মদত করছে। এই লড়াই ধর্মের জন্য নয়। রুটি, কাপড় ও বাসস্থানের জন্য এই লড়াই। পেট্রোল, ডিজেল যারা কিনছে, তারা টের পাচ্ছেন। এই মূল্য বৃদ্ধি থেকে মুখ ঘুরাতে ভিন্ন শ্লোগান তোলা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস সকলের সঙ্গে থেকে এই লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানান তিনি। এদিকে প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক বলেন, গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক একটি আলাদা দপ্তর ছিল। এর নাম ছিল ডোনার মিনিস্ট্রি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আর্থিক দিকে আলাদা সুযোগ সুবিধা দিতে ডোনার মিনিস্ট্রি করা হয়েছিল। কিন্তু অতিরিক্ত সুবিধা তো দূরের কথা, বিজেপি সরকার ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের সাথে লন্ঠন শুরু করেছে। রাজ্যের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়েছে। সব অংশের মানুষের অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সরকারের এই ধরনের রীতি নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই বলে জানান তিনি।