স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১২ এপ্রিল : ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশ এবং আন্দোলনকারী জনতার মাঝে সংঘর্ষ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কৈলাসহরের সবকটি ইসলামিক সংস্থা এবং সামাজিক সংস্থার মিলে সিদ্ধান্ত হয় শনিবার সকাল ১০ টায় কৈলাশহর টিলাবাজার থেকে একটি প্রতিবাদী মিছিল কৈলাশহর মহকুমা অফিস সংলগ্ন স্থানে গিয়ে মহকুমা শাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন ওয়াকফ বিল বাতিলের দাবিতে। কিন্তু মিছিল কৈলাশহর কুবঝার যাওয়ার পর পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়।
কিন্তু আন্দোলনকারী উত্তেজিত জনতা তা মানতে নারাজ। এর মধ্যে আচমকা কয়েকজন মিছিলকে লক্ষ্য করে জুতা দিয়ে ঢিল ছুড়ে। তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এই ঘটনার পর আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেট ভেঙ্গে কৈলাশহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানি গ্যাস ছুড়তে শুরু করে। পাশাপাশি উত্তেজিত জনতা ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। এই ইট পাটকেলের আঘাতে গুরুতর আহত হন ইরানি থানার কয়েকজন পুলিশকর্মী। পাশাপাশি পুলিশের লাঠিচার্জে প্রায় ৫০ জনের মতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
ঘটনা প্রায় এক ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর ছুটে আসেন উনকোটি জেলার নতুন পুলিশ সুপার। পুলিশ সুপার এসে বদরুজ্জামানের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। কংগ্রেস নেতা বদরুজ্জামানকে জেলা পুলিশ সুপার করা হুশিয়ারি সুরে জানান এ ধরনের ঘটনা যদি পুনঃ বৃত্তি করার চেষ্টা হয় তাহলে পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। কারণ এই দিনের আন্দোলনে বহু পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। বিশেষ করে পুলিশের অনুমতি না থাকার পরেও এ ধরনের আন্দোলন সংঘটিত করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো কয়েক হাজার আন্দোলনকারীকে জমায়েত করা হয়েছে। সম্প্রদায়িক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারত। জেলা পুলিশ সুপারের এই মন্তব্যে পাল্টা বদরুজ্জামান বলেন, সাম্প্রদায়িক কোন ধরনের সমস্যা হবে না সেটা আমি পুলিশকে গ্যারান্টি দিচ্ছে। কিন্তু আপনি ধমকির সুরে কথা বলবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলছিল। কিন্তু একটি চক্র এসে আন্দোলনকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্যে বলেন কংগ্রেস নেতা। বদরুজ্জামান আরো বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অধিকার রক্ষার দাবিতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু আচমকা কোন এক দুষ্কৃতিকারীরা মিছিলকে লক্ষ্য করে জুতা দিয়ে ঢিল ছুঁড়ে, তাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এবং দুষ্কৃতীদের দ্বারা তিনি নিজে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান। আজকে প্রায় দশ হাজারের উপর আন্দোলনকারী এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘটনায় আহত ইরানি থানার পুলিশ অফিসার যতীন দাসকে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন।