স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২২ অক্টোবর : গত ১৬ জানুয়ারি ভারতবর্ষের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। এদিন থেকে কোভিডের টিকাকরণ শুরু হয় সারা দেশে। বিনামূল্যে এই টিকা দেশের মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত দেশে ১০০ কোটি ৬১ লক্ষ ৫২ হাজার ৯১৪ জনকে টিকা করনের আওতায় আনা গেছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭১ কোটি ৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৬৪ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২৯ কোটি ৫২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩৫০ জন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচেষ্টায় কোভিড পরিস্থিতিতে দেশকে একদিকে স্ব নির্ভরতার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
অন্যদিকে প্রত্যেক ভারতবাসীকে কোভিড থেকে মুক্তির রাস্তা হিসাবে বিনামূল্যে টিকাকরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রকল্প গুলির মধ্যে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গুলির এটি উল্লেখযোগ্য। শুক্রবার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ে বিজেপি সদর শহর জেলার উদ্যোগে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। কোভিডের কথা মাথায় রেখে পি এম কেয়ার ফান্ড থেকে প্রদেয় অর্থে দেশব্যাপী ১২২২ টি অক্সিজেন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তার থেকে ২২ টি প্যান্ট ত্রিপুরায় সূচনা হয়েছে। যদিও পূর্বে ৩ টি প্ল্যান্ট থেকে ১.৯৭ ম্যাট্রিকটন অক্সিজন উৎপাদিত হতো। নতুন ২২ টি প্ল্যান্ট থেকে ১৮ ম্যাট্রিক টন অক্সিজেন উৎপাদিত হবে রাজ্যে। ৯ গুন অক্সিজেন উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে রাজ্যে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। কোভিডের প্রথম ঢেউ প্রধানমন্ত্রী জনতার কারফিউ, এরপর লকডাউন, আনলক , কন্টেইনমেন্ট জোন, মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন থেকে ধীরে ধীরে বেড়িয়ে এসে টিকাকরনের ব্যবস্থা করেছেন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তিন থেকে চার গুন পরিকাঠামোর বিকাশ ঘটানো হয়েছে। কেন্দ্রের সহায়তায় রাজ্যেও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের প্রভুত উন্নতি ঘটেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরাতেও ছয়টি ধাপে এই টিকাকরণ শুরু হয়।
এর মধ্যে প্রথম ছিল স্বাস্থ্য কর্মী। এরপর দেওয়া হয় ফ্রন্টলাইন অয়ারিয়র, এরপর দেওয়া ৬০ উর্ধ প্রবীণদের। এরপর ৪৫ উর্ধদের। শেষে দেওয়া হয় ১৮ উর্ধদের টিকা। ৯০ শতাংশ টিকাকরনের ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্য গুলির মধ্যে ত্রিপুরা অন্যতম। উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে ত্রিপুরা। ৪৫ উর্ধদের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৯৫ শতাংশ মানুষকে। মোট ডোজ পেয়েছে ত্রিপুরা ৪০ লক্ষ ১০ হাজার ১০৯ টি। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ২৫ লক্ষ ২ হাজার ৩৩ জনকে। আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ ৮ হাজার ৭৬ জনকে। ২৪ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত চলে ৪৫ উর্ধদের জন্য স্পেশাল ভ্যাক্সিনেশন ড্রাইভ। এই তিন দিনে ২লক্ষ ২৬ হাজার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় স্পেশাল ডাইভ হয় ২১ ও ২২ জুন। এর মধ্যে ১৮ উর্ধদের টিকা দেওয়া হয়। দুই দিনে ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার মানুষ টিকা নেয় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তৃতীয় ডাইভে ২ লক্ষ ২২ হাজার টিকা নেয়। ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরও হয় স্পেশাল ড্রাইভ। কোভীডের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রবীন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে চিঠি দেওয়া হয়। সকলের প্রচেষ্টায় এই কাজ সম্পাদন করা গেছে। ১৩৪২ টিকাকরণ কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি গ্রামে ভ্যাক্সিনেশন সেন্টার আছে। প্রয়োরিটি গ্রুপ তৈরি করেও রাজ্য সরকার টিকা দেয়। ২৩ থেকে ২৫ মে স্পেশাল ড্রাইভের মাধ্যমে প্রতি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রতি ডোজ বাবদ ৫ টাকা করে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে। দিব্যাংন ও অসুস্থদের চিহ্নিত করে বাড়িতে গিয়ে টিকা প্রদান করা হয়। কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে এই সফলতা এসেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এডিসি এলাকা গুলির জন্যও স্পেশাল ড্রাইভ দেয় সরকার। ১১৬ টি পিএইচ সি সেন্টার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করা হয়েছে। গুজবের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করে স্বাস্থ্য কর্মীরা কাজ করেছেন। এ সাফল্যের জন্য ৩৭ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে।