Saturday, April 26, 2025
বাড়িরাজ্যরান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং জীবন দায়ী ঔষধের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে...

রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি এবং জীবন দায়ী ঔষধের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামবে কংগ্রেস

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৮ এপ্রিল : বিজেপি অমিত শাহরা যতই বিকশিত ভারত অর্থনীতির তৃতীয় শক্তিধর দেশ হয়ে ওঠার গল্প শুনিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করে রাখার চেষ্টা করুক না কেন প্রকৃত অর্থে দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে, কৃষকদের আয় কমে যাচ্ছে, শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে, সংঘটিত ও অসংঘটিত ক্ষেত্রে মজুরি কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে ক্রমাগত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে রান্নার গ্যাসের মূল্য এবং জীবন দায়ী ঔষধের মূল্য।

এই ঔষধ এবং রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির প্রত্যাহারে দেশজুড়ে জাতীয় কংগ্রেস যে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে চলেছে। একই সাথে আন্দোলনে নামবে প্রদেশ কংগ্রেস। লেখা মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনের সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা বলেন মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী। তিনি বলেন,

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে দেশের ৪০ শতাংশ সম্পদ চলে গেছে দেশেরই এক শতাংশ ধনী গোষ্ঠীর হাতে। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্পোরেট জগতের মানুষের স্বার্থে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। এই সময়ে ২০২৪ সালেই উচ্চ সম্পদশালী মানুষের সংখ্যা ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮৫ হাজার ৬৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের সম্পদের পরিমাণ ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। বিলিয়ন ডলারের মালিকের সংখ্যা বর্তমানে ২৬ জন থেকে বেড়ে ১৯১ জনে পরিণত হয়েছে। ২০১৯ সালেও তা ছিল সাতজনে মাত্র।

এই ১৯১ জনের সম্পদের পরিমাণ ৯৫০ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে দেশের নির্ভরযোগ্য সমীক্ষক সংস্থা Night Frank Wealth -এর ২০২৫ এর রিপোর্ট অনুযায়ী ১০০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সরাসরি স্বীকার না করলে পরেও দেশের অর্থমন্ত্রী গত বাজেট অধিবেশনে তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেছিলেন দেশের ৯০ শতাংশ মানুষের কাছে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করার পর অতি প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ক্রয় করার অর্থ নেই। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে দেশের ৪ কোটিরও বেশি মহিলা গোল্ড ঋন নিতে বাধ্য হয়েছে। দেশের ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষকে মাসে পাঁচ কেজি চাল সরবরাহ করেই দায়িত্ব সেরেছেন। তাতে ইউপিএ সরকারের তুলনায় মাসে দশ টাকা মাত্র সাশ্রয় হচ্ছে। সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে বাজার থেকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা থেকে ১২০০ টাকার চাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রেও ২০১১ সালের পর দেশে জনগণনা না করার ফলে ১৪ কোটি মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। আবার নরেন্দ্র মোদি গর্ব করে বলছে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। সরকারি পরিসংখ্যানে ২০১৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত খাদ্য পণ্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম ১৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণ করার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মোদি সম্মান ও জনস্বার্থে বিসর্জন দিয়ে ট্রাম্পের কাছে নতি স্বীকারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে আরো বড় বিপর্যয় নেমে এসেছে। এটা স্পষ্ট ইঙ্গিত বর্তমান সময়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ৭ এপ্রিল রান্না করার প্রতি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ৫০ টাকা বৃদ্ধি হয়েছে। যা উজ্জ্বলা গ্যাস সিলিন্ডারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সিএনজি গ্যাসের দাম প্রতি কেজিতে এক টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পেট্রোল ডিজেলের লিটার প্রতি দুই টাকার শুল্কবৃদ্ধি করেছে যাতে অদূর ভবিষ্যতে খোলা বাজারে পেট্রোল ও ডিজেলের আরো মূল্যবৃদ্ধি নিশ্চিত। সম্প্রতি ১০ দিনও অতিক্রান্ত হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের জ্ঞাতসারে ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো জীবন দায়ী ওষুধ সহ প্রায় নয়শো ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে দিয়েছে। এ ক্ষতস্থানে নুন ছিটিয়ে দেওয়ার মত। মার্চ মাসের শেষার্ধে জীবন দায়ী ওষুধ সহ ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি জনিত সমস্যার নিরিখে সুপ্রিম কোর্টে করা একটি জনস্বার্থ মামলায় এক অভিযোগকারী রোগী যার একটা জীবন দায়ী ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, তার বাৎসরিক আনুমানিক খরচ প্রায় দুই কোটি টাকার মতো।

এই মামলায় শোনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী নানা বিষয় উল্লেখ করার সাথে এই জীবন দায়ী ওষুধের তথ্য দিতে গিয়ে দেখিয়েছে এই ওষুধ টাই বহু স্বল্প মূল্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র পাকিস্থান এবং চীনে ওষুধ কোম্পানি রোগীদের মধ্যে সরবরাহ করছে। এই মামলার শুনানি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি সেই শোনানিতে ভারত সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল বা সরকার পক্ষের কোন উকিলই এই তথ্যের বিরোধিতা করেনি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ বিচারপতিগণ এই জীবনদায়ী ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে উষ্ণ প্রকাশ করে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার গুলি উচিত জীবন দায়ী ঔষধ সহ সব ওষুধেরই মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সুপ্রিম রায়ে এসবিআই যে তথ্য দিয়েছিল তাতে দেখা গিয়েছে ওষুধ কোম্পানিগুলো ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচিত তহবিলে প্রভূত পরিমাণ অর্থ জমা করে এসেছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সর্বাণী ঘোষ সহ অন্যান্যরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!