স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ৩১ জানুয়ারি : ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর ২৪ তম ত্রিপুরা রাজ্য সম্মেলন সমাপ্ত হয় শুক্রবার। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় মেলার মাঠস্থিত সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে নতুন রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন ২৯ জানুয়ারি প্রকাশ্য সমাবেশের মধ্য দিয়ে সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়। শুক্রবার দুপুরে এই সম্মেলন শেষ হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সম্মেলনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। প্রথমে অনুষ্ঠিত হয় ব্রাঞ্চ সম্মেলন।

তারপর হয় অঞ্চল সম্মেলন। অঞ্চল সম্মেলন শেষে মহকুমা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর অনুষ্ঠিত হয় জেলা সম্মেলন। জেলা সম্মেলন শেষে অনুষ্ঠিত হয় রাজ্য সম্মেলন। সিপিআইএম রাজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখে আয়োজিত প্রকাশ্য সমাবেশকে বানচাল করার জন্য শাসক দল সকল ধরনের চেষ্টা চালিয়েছে। শেষ পর্যন্ত সমাবেশ করার জন্য রবীন্দ্রভবনের সামনের জায়গাটি প্রদান করা হলেও, সে ক্ষেত্রে সিপিআইএম দলকে আরক্ষা প্রশাসন থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় লিখিত দিতে হবে সমাবেশে ৩ হাজারের অধিক লোক হবে না। সমাবেশে যেন মানুষ সামিল হতে না পারে তার জন্য জায়গায় জায়গায় গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় প্রকাশ্য সমাবেশ। সিপিআইএম রাজ্য সম্মেলনে ৪১৪ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছে। সম্মেলনের শুরুতে দলীয় সাংগঠনিক নিয়ম মেনে লিখিত আকারে প্রতিবেদন পেশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের উপর ৫১ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন।
সকল আলোচনা শেষে ৬০ জনের নতুন সিপিআইএম রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়। ৬০ জনের কমিটির মধ্যে ১৪ জনের সম্পাদক মন্ডলী তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি সর্বভারতীয় সম্মেলনের জন্য ৪০ জন প্রতিনিধি এবং দুজন পর্যবেক্ষকের নাম ঠিক করা হয়েছে। ৬০ জন রাজ্য কমিটির সদস্যের পাশাপাশি দুইজন বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য রয়েছেন। সিপিআইএম দলের নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী কোন সদস্যের বয়স ৭৫ বছরের অধিক হলে তিনি কোন কমিটির সদস্য হতে পারেন না। তার জন্য সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটিতে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে নারায়ণ কর ও পবিত্র করকে রাখা হয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বয়স ৭৫ বছর হলেও তার নাম সিপিআইএম রাজ্য কমিটিতে রাখা হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে এই নাম রাখা হয়েছে। কারণ রাজ্যের বর্তমান চলমান পরিস্থিতিতে তিনি যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক. এবং তিনি বর্তমানে সুস্থ ও সবল রয়েছেন। ৬০ জনের রাজ্য কমিটিতে ৮ জন স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্যও রাখা হয়েছে বলে জানান জিতেন্দ্র চৌধুরী। সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি গঠন হওয়ার পর। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রাজ্য কমিটির সম্পাদক হিসেবে জিতেন্দ্র চৌধুরী নাম প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি জানতে চাওয়া হয় অন্য কেউ সম্পাদক হতে চায় কিনা। কিন্তু অন্য কেউ সম্পাদক হতে চায়নি এবং সর্বসম্মতিক্রমে পুনরায় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক হিসেবে জিতেন্দ্র চৌধুরী নির্বাচিত হন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানান মানিক দে। তিনি আরো জানান সম্পাদকের ন্যায় অনুরূপভাবে সম্পাদক মন্ডলী গঠন করা হয় ১৪ জনের। সিপিআইএম রাজ্য সম্মেলনে ৯ টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এগুলোকে নিয়ে আগামী দিনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে জানান মানিক দে। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শঙ্কর প্রসাদ দত্ত ও রতন ভৌমিক।