স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৮ জানুয়ারি :: রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা। আইন শৃঙ্খলা উন্নতির ক্যাসেট গোটা রাজ্যেই বাজিয়ে চলেছেন শাসক দলের নেতা কর্মী থেকে শুরু করে মন্ত্রী বিধায়করা। একাংশ সংবাদ মাধ্যমও শাসক দল ও পুলিশ প্রশাসনের পালে হাওয়া দিতে দিনরাত ছুটছেন এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে, কিন্তু বাস্তবে মানুষের জীবন যেন মশা মাছি আর আরশোলার সমকক্ষে গিয়ে ঠেকেছে। এক মহুর্তের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না সাধারন মানুষ। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরবেন কিনা তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না কেউ।
যান দুর্ঘটনা অনভিপ্রেত, কোনো যান চালকই হয়তোবা ইচ্ছে করে দুর্ঘটনা সংগঠিত করেন না, তবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়া নিসন্দেহে অপরাধ বলেই গন্য হয়। গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর চন্দ্রপুরে দ্রুত গতিতে এসে এক স্কুটিকে ধাক্কা দিয়ে তিন জনকে মৃত্যু পথযাত্রী করে পালিয়ে যায় এক যান চালক। এই ঘটনাকে দুর্ঘটনার চাইতে অপরাধ প্রবনতা হিসেবেই গন্য করা যেতে পারে,কেননা এই দুর্ঘটনা সংগঠিত করেই স্কুটিতে থাকা তিনজনকে প্রায় মৃত্যু পথযাত্রী করে পালিয়ে যায় গাড়ি চালক। এই ঘটনায় এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু হয়, সেইসাথে তার বাব মা আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিবিতে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর চাপে পরে ঘাটনার মুল অভিযুক্তকে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে পুর্ব আগরতলা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও এদিনেই জামিন পেয়ে যায় ধৃত মন্তোষ দেব। আর এনিয়ে পুলিশের ভুমিকায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার এই ইস্যুতে জেলা পুলিশ সুপারের দারস্ত হয়েছেন মৃতার পরিবার সহ তার এলাকাবাসী। তারা সড়াসরি পুর্ব থানার পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ সদর কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন মৃত কলেজ ছাত্রী মৌমিতার পরিজন। পুলিশের বিরুদ্ধে বেশকিছু বিস্ফোরক অভিযোগ জানান তারা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে আগরতলা চন্দ্রপুর এলাকায় মন্তোষ দেব’র গাড়ির ধাক্কায় মৌমিতা শীলের মৃত্যু হয়, আহত হয় মৃতার পিতা মাতাও। মৌমিতা শীলের মৃত্যুর সার্বিক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী আজ পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপারের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করেন।
পাশাপাশি পূর্ব আগরতলা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন মৌমিতার আত্মীয় পরিজন। তারা বলেন, অভিযুক্ত মন্তোষ দেবকে গ্রেফতার করার পর লকআপে রাখা হয়নি। পুলিশ তাকে আটক করতে না পারলে তাদের বলে দিলে আত্মীয় পরিজনরা সকলে মিলে তাকে আটক করার চেষ্টা করত। ২৫ তারিখ রাতের ভয়ংকর দুর্ঘটনার অভিযুক্তকে পুলিশ কোনো বিচার ছাড়া জামিন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মৌমিতার পরিজনেরা। কি ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছ তা জানতে চান তারা। অপরদিকে পুর্ব থানার এক এস আই মামলা পরিচালনার জন্য এক আইনজীবীর নাম সাজেস্ট করেন৷ এই আইনজীবীকে দিয়েই মামলা পরিচালনা করতে চাপ সৃষ্টি করেন সেই এস আই বলেও সড়াসড়ি অভিযোগ করেন মৃতার পরিবারের লোকজন। তাই মৌমিতা শীলের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী আজ পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপারের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই ঘটনার অভিযুক্তের সঠিক শাস্তি দিতে হবে। অন্যদিকে পুর্ব আগরতলা থানার ওসি রানা চাটার্জী সাত পাচ বুঝিয়ে ঘটনার মুল অভিযুক্তকে বাচানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শহর এলাকার গুটিকয়েক সাংঘাতিককে সামান্য উপহার উপঢৌকনে জব্ধ করে থানা এলাকায় একচেটিয়া কামাই বানিজ্য চালাচ্ছেন ওসি রানা বাবু বলে বিস্তর অভিযোগ উঠছে। এই মামলায়ও মোটা অঙ্কের প্রনামিতে ঘটনাকে ম্যানেজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন ওসি রানা এন্ড টিম বলে অভিযোগ। সেদিন অভিযুক্তকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তার যে ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত মন্তোষ দেব হাত নারিয়ে তার অনুগামীদের অভয় বার্তা দিচ্ছেন। থানায় থাকাকালীনও তার হাবভাব দেখলে মনে হবে যেন তিনি কোনো ঘটনার অভিযুক্ত নয় বরং ওসি সাহেবের খাস আমন্ত্রিত সাহেব। ফলে এই ঘটনার তদন্তভার পুর্ব থানার হাতে থাকলে এই মামলা যে কতখানি কি হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সড়াসড়ি হস্তক্ষেপ দাবী করছেন মৃতা মৌমিতা শীলের আত্মিয় পরিজনেরা।