স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ ডিসেম্বর : জিবি হাসপাতালের মর্গে দাঁড়িয়ে সমাজের মেরুদন্ড শিক্ষক পিতার শাস্তি দাবি করলেন তার কন্যা। বাবার কারনে তার মাকে হারাতে হয়েছে বলে দাবি তের বছর বয়সী কন্যার। মেয়ের বক্তব্য তার মা-বাবা দুজনেই সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা। মৃত শিক্ষিকার তথা স্ত্রীর নাম হৈমন্তী সিং এবং অভিযুক্ত শিক্ষক তথা স্বামীর নাম মৃনাল কান্তি বর্মন। বাড়ির মেলাঘরে। মৃত গৃহবধূ তথা শিক্ষিকার কন্যা জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর আগে তার মা বাবার বিয়ে হয়। তার মা হৈমন্তী সিংয়ের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহের দানা বাঁধতে শুরু করে তার বাবা মৃনাল কান্তি বর্মনের মনে। তা নিয়ে দুজনের মধ্যে ধীরে ধীরে ঝামেলা শুরু হয়।
কিছুদিন পর কলম ক্ষেত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বদলি হন তার মা হৈমন্তী সিং এবং সেই শিক্ষক। তার বাবা মৃনাল কান্তি বর্মন বন নারায়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক। প্রতিদিন তার মাকে বিদ্যালয়ের নিয়ে যেতেন। তখন লক্ষ্য করেন সন্দেহজনক সে শিক্ষক আবার কলম ক্ষেত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়েছেন। তারপর পারিবারিক ঝামেলা তাদের মধ্যে আরও বাড়তে থাকে। একটা সময়ের পর তার মা-বাবা দুজনের মধ্যেই পারিবারিক কলহ এত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে যে প্রতিদিন শারীরিক মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন তার মা। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতের বেলাও দুজনের ঝগড়া শুরু করে। দীর্ঘ রাত হয়ে যাওয়ার সে ঘুমিয়ে পড়েন।
হঠাৎ রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ তার মার চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখে মায়ের অগ্নিদগ্ধ দেহ। তার বাবা একটি অটো দিয়ে তার মাকে মেলাঘর হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রেফার করেন জিবি হাসপাতালে। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ৯ টা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাদের মেয়ে আরো জানান, তার বাবা তার মাকে এতটাই সন্দেহ করতো যে খাবারের মধ্যে ওষুধ মেশানো আছে। তাই স্ত্রী রান্না খেতেন না। নিজে রান্না করে কিংবা তার ঠাম্মা বা হোটেল থেকে নিয়ে এসে খাবার খেতেন। তার মার উপর বাবার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন এতটাই দুর্বিষহ যে সহ্য করার ক্ষমতা পর্যন্ত তারা শেষ পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছিলেন। শনিবার দুপুরে মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। পুলিশ একটি অভিযোগ নিয়ে ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে।