আগরতলা, ২ অক্টোবর: পরিচ্ছন্ন ত্রিপুরা গড়ে তোলার জন্য রাজ্যের সকল অংশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জারি রাখতে হবে। আর এই কাজে রাজ্যের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এনিয়ে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সরকারের পাশাপাশি রাজ্যের সকল অংশের মানুষকেও চারদিকের পরিবেশ পরিষ্কার পরিছন্ন রাখার দ্বায়িত্ব নিতে হবে। তবেই স্বচ্ছ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বুধবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ কর্মসূচির উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজ জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন। এর পাশাপাশি আজ মাতৃপক্ষের সূচনা মহালয়া। এজন্য আমি সবাইকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। আজ এখানে আসার আগে শিশু উদ্যানের ভেন্ডিং জোনের উদ্বোধন করি। ৫ জনকে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এরআগে হকাররা নির্দিষ্ট ঠিকানা ছাড়াই শহরের আশেপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ব্যবসা করতেন। এবিষয়টি নিয়ে বহুদিন ধরেই আলোচনা চলছে।
এই ভেন্ডিং জোনটি আগরতলা স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট লিমিটেড এবং ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়া স্কিমের আওতাধীন। যার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ডিজাইনের ভেন্ডিং কার্ট রয়েছে। আমি সমস্ত হকারদের শহর পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান রেখেছি। সেই সঙ্গে ফুড স্ট্রিট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্ব তুলে ধরেন। আমরা সবাই যদি নিজেদের এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিই, তবে আমরা ‘স্বচ্ছ আগরতলা’ এবং ‘স্বচ্ছ ত্রিপুরা’ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর এই কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। আর আজ এই সেবা পক্ষকাল কর্মসূচির অন্তিম দিন। তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই অফিস, স্কুল, বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। আমরা যখন পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করি এবং আমাদের বইপত্র গুছানো অবস্থায় রাখি তখন বেশ ভালো লাগে। ডাঃ সাহা বলেন, আমি অনেক অফিস পরিদর্শন করেছি যেখানে ধুলোয় ভর্তি বিশাল ফাইলপত্রের স্টক পরিলক্ষিত হয়েছে। এরপর আমি মুখ্যসচিবের সাথে কথা বলি এবং অফিস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতার জন্য বাজেটের ১০ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। যা মন্ত্রিসভাতেও পাস হয়। আর এই পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, সবার দায়িত্ব। স্বচ্ছতা অভিযানের সময় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। স্বচ্ছতা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং এরজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এটা শুধু কয়েকদিন করলে হবে না। এরজন্য ধারাবাহিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, নগরোন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা রজত পন্থ, পদ্মশ্রী প্রাপক জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার সহ বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।