Friday, April 25, 2025
বাড়িরাজ্যমুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ পাত্তা না দিয়ে আগরতলা শহরেই গুন্ডামীতে নাম লেখালো শিবনগর...

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ পাত্তা না দিয়ে আগরতলা শহরেই গুন্ডামীতে নাম লেখালো শিবনগর স্থিত উদিচি ক্লাব, দন্ত চিকিৎসকের পরিবারের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করল ক্লাব কর্তৃপক্ষ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ সেপ্টেম্বর : মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কিছু ক্লাবের সদস্যরা মস্তানিতে নেমেছে। নাম লেখাচ্ছে গুন্ডাগিরির খাতায়। গত কয়েকদিন আগে শহরের দক্ষিণাঞ্চলের এক ক্লাবের পর এবার অভিযোগ উঠল শহরের উদিচি ক্লাবের বিরুদ্ধে। শিবনগর এলাকায় অবস্থিত এই ক্লাব। গত আগস্ট মাসে বন্যায় রাজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সকল ক্লাব ও পূজা উদ্যোক্তাদের নিকট আহ্বান জানান দুর্গা পুজার চাঁদার জন্য সাধারন মানুষের সাথে জুলুমবাজি যেন করা না হয়। মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়ে বলেন চাঁদার জন্য জুলুমবাড়ি বরদাস্ত করা হবে না।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানছে না আগরতলা শহরের একাংশ ক্লাব। রাজধানীর একাংশ ক্লাব চাঁদার জন্য সাধারন মানুষের উপর রীতিমতো জুলুমবাজি করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, সাধারন মানুষ যেন চাঁদার জুলুমবাজি নিয়ে মুখ না খোলে তার জন্য হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকাকে যে ক্লাব গুলি মানছে না তা বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা প্রমান করে দিয়েছে। এইদিন সকালে দুর্গা পুজার চাঁদার জন্য রাজধানীর উদিচি ক্লাবের সদস্যরা এক পরিবারের উপর জুলুমবাজি চালায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এইদিন উদিচি ক্লাবের সদস্যরা চাঁদার জন্য এক দন্ত চিকিৎসকের বাড়িতে চড়াও হয়। মারধর কড়া হয় দন্ত চিকিৎসক প্রিতম দেবরায়, তার ভাই ও মাকে। আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রী জানান এইদিন সকালে তারা সকলে ঘুমাচ্ছিলেন। সেই সময় বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠে। তখন তার শাশুড়ি গিয়ে বাড়ির মূল ফটক খোলেন। মূল ফটক খোলার পর দেখতে পান উদিচি ক্লাবের সদস্যরা দুর্গা পুজার জন্য এসেছে। গত বছরও উদিচি ক্লাবের সদস্যরা দুর্গা পুজার চাঁদা নিয়ে ঝামেলা করেছে। এই বছর দেড় হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয় তাদেরকে। ওনার শাশুড়ি ৫০০ টাকা চাঁদা দিয়ে জানান তার বেশি চাঁদা দেওয়ার ক্ষমতা ওনার নেই। তখন উদিচি ক্লাবের সদস্যরা চেঁচামেচি শুরু করে। ক্লাবের সদস্যরা জানান এই বছরের দেড় হাজার টাকা সহ গত বছরের ১৭০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। ওনার শাশুড়ি জানান এত টাকা চাঁদা দিতে অপারক তিনি। তখন ক্লাবের সদস্যরা গালিগালাজ শুরু করে। গালিগালাজ শুনে ওনার দেবর মোবাইল নিয়ে যায় গোটা ঘটনা ক্যামেরা বন্দি করার জন্য। ক্লাবের সদস্যরা যখনই দেখতে পায় তাদের দাদাগিরি মোবাইলে রেকর্ড কড়া হচ্ছে। সাথে সাথে তারা প্রমান লোপাটের জন্য মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সোজা ঘরে ঢুকে পরে।

 ওনার শাশুড়ি বাধা দান করলে ওনাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর তার দেবরকে মারধর করা হয়। আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রী জানান উদিচি ক্লাবের সদস্যরা ওনার দেবরকে মারধর করার সময় ওনার স্বামী ঘুম থেকে উঠে আসে। তখন ওনার স্বামীকেও মারধর কড়া হয়। উদিচি ক্লাবের সদস্যরা হুমকি দেয় চাঁদা না দিলে এলাকায় থাকতে পারবে না তারা। আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রী এইদিন পুলিশের ভুমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান ঘটনা চলাকালীন সময় ওনারা থানায় ফোন করেন। মহিলা পুলিশ কর্মী ফোন রিসিভ করে উল্টো তাদেরকে থানায় আসার জন্য বলে। তিনি জানান পুলিশ যদি এই ধরনের ভুমিকা পালন করে তাহলে সাধারন মানুষ কোথায় যাবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার জন্য কড়া বার্তা দিয়ে বলে থাকেন চাঁদা নিয়ে জুলুমবাজি বরদাস্ত করা হবে না। প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কালিমা লিপ্ত করতে উদিচি ক্লাব চাঁদার জন্য এইদিন যা করেছে তা জুলুমবাজি বললে ভুল হবে।

 রীতি মতো চাঁদার জন্য উদিচি ক্লাবের সদস্যরা এইদিন একটি পরিবারের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। এখন দেখার প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে কিনা। আক্রান্ত চিকিৎসক পূর্ব আগরতলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে ক্লাবের পক্ষ থেকে সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, যে দন্ত চিকিৎসকের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তারা গত সাত থেকে আট বছর আগে এলাকায় বাড়ি করে এসেছে। তারপর থেকে তারা প্রতিবছর দুর্গাপূজার চাঁদা নিয়ে আপত্তি জানায়। গতবছরও চাঁদা দেয়নি তারা। এ বছর যাওয়ার পর তাদের বাড়ির মহিলারা ক্লাবের ছেলেদের গালিগালাজ শুরু করে। কিছুক্ষণ পর দন্ত চিকিৎসক একটি মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে ভিডিও করতে শুরু করে। তখন ক্লাবের ছেলেরা ভিডিও না করার জন্য বলে তাদের। তখন বাক বিতন্ডা শুরু হলে বাড়ির দুই ব্যক্তি ক্লাবের সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর করে রক্তাক্ত করে বলে অভিযোগ। তারপর সাথে সাথে আইজিএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ক্লাবের সম্পাদককে। তারপর বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের সামনে গল্প সাজিয়েছেন দন্ত চিকিৎসকের পরিবার। এলাকাবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তারা আরো জানিয়েছেন, ক্লাবের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য