স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ সেপ্টেম্বর : আবারো ডুকলি স্থিত সানরাইজ ফাউন্ডেশন নামে নেশা মুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠল। ২৭ বছর বয়সী যুবকের মৃত্যু হয়েছে এই নেশা মুক্তি কেন্দ্রের চরম গাফিলতির কারণে। সঠিক সময় মত টাকা দিতে না পারায় তরতাজা যুবককে হারাতে হয়েছে পরিবারের। এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে শুক্রবার রাতে। মৃত যুবকের নাম রাহুল দেব।
পরিবারের লোকজনদের কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘ তিন বছর ধরে কৌটার নেশায় উর্মাদ হয়ে উঠেছিল রাহুল। তাকে সুস্থ করে তুলতে পরিবারের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল সানরাইজ ফাউন্ডেশন নামে নেশা মুক্তি কেন্দ্রে। গত তিন মাস ধরে পরিবারের পক্ষ থেকে সংস্থাকে কোনরকম টাকা দেওয়া হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল চার মাস হয়ে গেলে ২৪ হাজার টাকা মিটিয়ে দিয়ে তারা রাহুলকে বাড়িতে নিয়ে আসবে। এরই মধ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ির লোকজনকে ফোন করে সংস্থার কর্মীরা। তারা জানায়, রাহুল গুরুতর অসুস্থ। তারা অতিসত্বর নেশা মুক্তি কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য।
যথারীতি রাহুলের স্ত্রী নেশা মুক্তি কেন্দ্রে ছুটে গেলে বলা হয় তার পেটের ব্যথা অস্বাভাবিক হওয়ার কারণে তারা জিবি হাসপাতালে নিয়ে গেছে। সাথে সাথে রাহুলের স্ত্রী জিবি হাসপাতালে ছুটে এসে দেখে অক্সিজেন লাগানো। কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যুর কূলে ঢলে পড়ে রাহুল। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি সঠিক সময়ে যদি টাকা গুলি মিটিয়ে দেওয়া যেত তাহলে হয়তো আজ রাহুলের মৃতদেহ দেখতে হতো না তাদের। সময়মতো টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য নেশা মুক্তি কেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত চাপ সৃষ্টি করত। বিশেষ করে গত চার মাসে রাহুলকে দেখতেও দেয়নি নেশা মুক্তি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ। পরিবারের লোকজনদের বলতো যখন টাকা মিটিয়ে দেবে তখন রাহুলকে দেখতে দেওয়া হবে। অভাব অনটনের সংসারের জন্য মৃত ব্যক্তির ভাই ভেবেছিল চলতি মাসে ঋণ নিয়ে ভাইকে নেশা মুক্ত কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসবে। আর এরই মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু। কান্নায় ভেঙে পড়ে রাহুলের পরিবারের লোকজন। শনিবার দুপুরে মৃতদেহ ময়না তদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেয়। মৃতদেহ হাতে পেয়ে পরিবারের বক্তব্য রাহুল কখনো এত মোটা ছিল না। চার মাসে এত মোটা কিভাবে হয়েছে তারা বুঝে উঠতে পারছে না। কোন ঔষধ খাইয়ে তাকে কোনরকম নির্যাতন করেছে কিনা সে বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এমনটাই দাবি তার স্ত্রীর। সানরাইজ ফাউন্ডেশন নামে এই নেশা মুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আগেও বহু অভিযোগ উঠেছিল। ফের একবার অভিযোগ উঠেছে এই নেশা মুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন হচ্ছে প্রশাসনের দিকে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এই নেশা মুক্তি কেন্দ্র গুলির ভেতর কি ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে এবং মানুষের উপর কোন রকম নির্যাতন করা হয় কিনা সে বিষয়টা যাচাই করা হয় না। যা অত্যন্ত উদ্বেগের বলে মনে করে সাধারণ মানুষ।