স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ সেপ্টেম্বর : ১৯-২৩ আগস্ট পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বিধ্বংসী বন্যায় রাজ্যের জনজীবনে এক নজিরবিহীন বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই বন্যায় ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বেশ কয়েকজন। ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার দাবি জানায় সিপিআইএমএল। এদিন আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের রাজ্য কমিটি সম্পাদক পার্থ কর্মকার বলেন, কৃষি ফসল, মৎস্য সম্পদ, গবাদি পশু এবং ঘরবাড়ির বিপুল ক্ষতি হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সরকারি তথ্য বলছে নজিরবিহীনভাবে বন্যায় ১৮ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভূমি ধস ২০৩২ স্থানে হয়েছে। ১৯৫২ টি রাস্তা ভেঙেছে।
৫ হাজার হেক্টর কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ১ লক্ষ ৫ হাজার ১০১ হেক্টর আমন ধানের ফসল নষ্ট হয়েছে। উদ্যান চাষে ৫.৬১৪ হেক্টর আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। কৃষিতে মোট ক্ষতি ১ হাজার ১৮ কোটি টাকা। মৎস্য চাষে ক্ষতি ১৪৮২ কোটি। প্রাণীসম্পদে ক্ষতি ২৩ কোটি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষক ও শ্রমিকদের। ২/৫ লক্ষ কৃষক পরিবারের প্রায় ২ লক্ষ মানুষ শিবিরে ও টিলা ভূমিতে বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বন্যায় প্লাবিত এলাকায় পানীয় জলের সংকট সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। মৃতদের পরিবার এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। ই শ্রম কার্ড ভুক্ত শ্রমিকদের ব্যাংক একাউন্টে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। কৃষি জমি চাষের উপযোগী করতে কৃষকেরা কোনও সহায়তা পায়নি। সহায়তা না পেয়ে কৃষকেরা এখন নিজেরাই উদ্যোগী হতে শুরু করেছেন। কিন্তু তা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। শ্রমিকদের কাজ নেই। বাজারে জিনিসপত্র অগ্নি মূল্য। তাই দাবি জানানো হচ্ছে, অবিলম্বে রাজ্যকে জাতীয় বিপর্যয় এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা, রাজস্ব দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন করা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফান্ড থেকে ১৫ হাজার ভোটে টাকা প্রদান করা, মৃতদের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ও একটি করে সরকারি চাকরি প্রদান করা, আহতদের কুড়ি লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানায়।