স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ সেপ্টেম্বর : বুধবার থেকে শুরু হয় বর্ষাকালীন বিধানসভার অধিবেশন। তিন দিন ব্যাপী অধিবেশনের প্রথম দিন ছিল বুধবার। এইদিন অধিবেশনের শুরুতে সম্প্রতি রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। তারপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বিধানসভায়। এইদিন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিরোধীদলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন রাজ্যে ইতিহাসে এইবার প্রথম এতবড় বন্যা হয়েছে। এতে বহু মানুষের ক্ষতি হয়েছে। বিশ্ব ব্যাপী পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারনে হয়তো এমনটা হয়েছে।
তাই এই নিয়ে আগামিদিনে সকলকে সতর্ক হতে হবে। বহু মানুষ বন্যার ফলে তাদের রুটি রোজগার হারিয়েছে। বাধ্য হয়ে বহু মানুষ ত্রান শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষি ক্ষেত্রের। তবে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংস্থা, ক্লাব, সামাজিক সংগঠন সহ সকল অংশের মানুষ। যার কারনে সমস্যার মধ্যে থেকে মানুষ পুনঃরায় উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। জিতেন্দ্র চৌধুরী এইদিন দাবি জানান রাজ্যে সম্প্রতি যে বন্যা হয়েছে, এইটাকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা হোক। বন্যায় ফলে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারের ৫০ লক্ষ টাকা করে প্রদান করারও দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি প্রতিটি মহকুমা ও ব্লক এলাকায় সরজমিনে সার্ভে করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের দাবি জানান। অপরদিকে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আলোচনা করতে গিয়ে যারা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে অর্থ দান করেছে, তাদেরকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বলেন আগামিদিনে শাসক দল ও বিরোধী দলকে সম্মিলিত ভাবে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
বিরোধী দল গুলি তাদের যুক্তি পরামর্শ প্রদান করবে। বন্যা চলাকালীন সময় খাদ্য দপ্তর থেকে বন্যা কবলিত মানুষকে কি কি সাহায্য করা হয়েছে তার তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। মন্ত্রী রতন লাল নাথ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য কোন রাজ্য কত টাকা ত্রিপুরা রাজ্যকে দান করেছে তার তথ্য তুলে ধরেন। এবং বুধবার পর্যন্ত মোট কত টাকা সাহায্য পাওয়া গেছে তা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি বলেন বন্যার ফলে রাজ্যের ১৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাথমিক তথ্য অনুসারে। রাজ্য জুড়ে ৮২১ টি ত্রান শিবির খোলা হয়েছিল। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। দুর্ভাগ্য বসত ৩৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দুইজন আহত হয়েছে। একজন নিখোঁজ রয়েছে। তিনি নিহতদের পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানান। এইদিন তিপ্রা মথা দলের বিধায়করাও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এবং সকলে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। বিধায়ক সুদিপ রায় বর্মণও এইদিন বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এইদিন দিল্লিতে থাকার কারনে অধিবেশনে অনুপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। অধিবেশন চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।