স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ সেপ্টেম্বর : ভালোবাসার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর প্রতিনিয়ত প্রাক্তন প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেল করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করল এক যুবক। মৃত নাবালিকার নাম শ্যামশ্রী দাস। বয়স ১৬ বছর। বাড়ি রাজধানীর দুর্গা চৌমুহনি এলাকায়। অভিযুক্ত যুবকের নাম মনো উদ্দীন। বাড়ি আগরতলা মোল্লাপাড়া এলাকায়। বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিবি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নাবালিকা মেয়েটি। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েক মাস আগে অভিযুক্ত যুবকের সাথে তাদের মেয়ের ভালোবাসা সম্পর্ক ছিল।
পরিবারের লোকজনেরা মেয়েটিকে বোঝানোর পর মেয়েটি যুবকের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে। তারপর থেকে অভিযুক্ত যুবক মেয়েটিকে বিভিন্ন সময় মোবাইলে ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করত। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার মেয়েটি ভোরবেলা ইঁদুরের ঔষধ খেয়ে ফেলে। তারপর মেয়েটি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন তার বাড়ির লোকজনেরা টের পায়। সাথে সাথে জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দশম শ্রেণীর এই শ্যামশ্রী। জিবি হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটির মা বাবা। মা-বাবার দাবি অভিযুক্ত যুবকের কঠোর শাস্তি হোক। অভিযুক্ত যুবক দীর্ঘদিন ধরে তাদের মেয়েকে ব্ল্যাকমেল করে আসছিল। এ বিষয় নিয়ে এলাকার মন্ডল বিচার পর্যন্ত করেছে। কিন্তু মন্ডলের দুর্বল শাসনে তাদের মেয়ের মৃত্যুর পথ আরো বেশি সুদৃঢ় হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন মৃত শ্যামাশ্রীর মা। ঘটনার খবর পেয়ে মন্ডলের নেতারা দ্রুত জিবি হাসপাতালে ছুটে আসে।
মৃতের পরিবারের পাশে আছে বলে নাটক মঞ্চ তৈরি করে জিবি হাসপাতাল চত্বরে। প্রশ্ন হলো যারা মেয়েটির বিষয় নিয়ে বিচার করেছেন সেসব মন্ডল নেতারা কবে উকালতি পাস করেছে? মন্ডল নেতাদের হাতে তো কোন ধরনের বিচার ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে বলে জানা নেই সাধারণ মানুষের? তাহলে কেন বিষয়টি আগে থেকেই আইনিভাবে মোকাবিলা করার রাস্তা না দেখিয়ে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি রেখে মন্ডলকে বিচার ব্যবস্থার স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে? এর পেছনে কারণ কি? কার স্বার্থসিদ্ধি করতে এ ধরনের জাল বিছিয়েছে স্থানীয় মন্ডল নেতারা? এখন প্রশ্ন হল এই মন্ডল নেতা কারা? পেছনে হয়তো তাদের স্বার্থ জড়িত রয়েছে! নাহলে তারা কেন আসবে সামাজিক ঘটনা মীমাংসা করার জন্য? কারণ দেশে আইন কানুন রয়েছে। গোটা বিষয়টি আইন-কানুনের দিকেই ছেড়ে দেওয়া যেত। তাহলে হয়তো আজকে মেয়েটি বেঁচে যেত। এমনটাই অভিমত সকলের। মৃতদেহ ময়না তদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন দেখার বিষয় অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ জালে তুলতে সক্ষম হয় কিনা।