Thursday, March 28, 2024
বাড়িরাজ্যধর্মঘট সফল বলে দাবি সি আই টি ইউ -র

ধর্মঘট সফল বলে দাবি সি আই টি ইউ -র

পরিদর্শনে গিয়ে সি পি আই এম -এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন মন্ত্রী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ মার্চ : শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা ভাজপার। বিজেপি এবং তিপ্রা মথার সংঘর্ষের অভিযোগ চাপল সিপিআইএমের উপর। তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে আঙুল তোলার সাহস দেখাননি খোদ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। উল্লেখ্য, রবিবার মান্দাই বাজারে ভারতীয় জনতা পার্টির অফিসটি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর সোমবার পরিদর্শনে যান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। কথা বলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বদের সাথে।

ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়ে তীব্র নিন্দা জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। পরবর্তী সময়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ বিজেপি সাধারণ সম্পাদিকা পাপিয়া দত্ত, সহ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের নামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উৎসর্গ করা হয়েছে। এবং তাঁর মূর্তিটি ছিল মান্দাই দলীয় কার্যালয়ের সামনে। মূর্তিটি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। যারা এধরনের কাজ করেছে তারা সেই দলের আদর্শ কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। কারণ তারা সি পি আই এম থেকে সেই দলে যোগদান করেছে। যাতে সেই দলকে কালিমালিপ্ত করা যায়। তাই সেই দলের নেতৃবৃন্দের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে যাতে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। কারণ সিপিআইএম ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে। না হলে রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি হচ্ছে।

সিপিআইএম বুঝতে পারছে রাজ্যে পাহাড়ের ২০ টি আসনে তারা শূন্য হয়ে গেছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাদের সমর্থন করবে না মানুষ। অর্থাৎ তারা খাতা খুলতে পারবে কিনা তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাই তারা ঘোলা জলে মাছ ধরতে এধরনের অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করতে চাইছে। এটা কঠোর হস্তে সাংগঠনিকভাবে এবং মানুষকে পাশে নিয়ে মোকাবিলা করা হবে বলে জানান সুশান্ত চৌধুরী। কিন্তু সরাসরি তিপ্রা মথার নাম এবং দলের নেতৃবৃন্দদের কথা উচ্চারণ করতে দিন ভয় পান সুশান্ত চৌধুরী। জাতি উপজাতি একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজ্যে থাকতে হবে। সরকারের মূল উদ্দেশ্য এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা। আর এ স্বপ্ন রাজ্যের মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের বলে জানান তিনি। তাই পাহাড়ি-বাঙালি সকলকে মিলেমিশে থাকতে হবে বলে জানান সুশান্ত চৌধুরী। তবেই তিনি আরো একবার পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন বিজেপি গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের সমর্থন করে না। জাতি উপজাতি সকলের মিলবন্ধনের ত্রিপুরা এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে চায়।

পুলিশ জানায় এ ঘটনায় ১০ জন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে। বিজেপি’র পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুলিশ রবি দেববর্মা নামে একজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে তুলেছে।

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ মার্চ : গ্রাম পাহাড় সমতল সর্বত্র ধর্মঘট রাজ্যের সফল হয়েছে। তার জন্য সোমবার দুপুরে সি আই টি ইউ রাজ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শংকর প্রসাদ দত্ত। ধর্মঘট সারা দেশে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যে ধর্মঘট সফল করতে মানুষ যাতে নিজের দাবি মনে করে সামিল হয়, তার জন্য আহবান করেছিল সিআইটিইউ।

 মানুষ ধর্মঘটের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরে সারা রাজ্যের ধর্মঘট পালনে এগিয়ে এসেছে। সোমবার রাজ্যের গ্রাম, পাহাড়ের বাজার হাট সমস্ত কিছু ছিল বন্ধ। কিন্তু তারপর শাসক দলের কর্মীরা জোর জবরদস্তি করে। কিন্তু তারপরও মানুষ বন্ধ রেখেছে দোকানপাট। যান চালকদেরও বলা হয়েছিল তারা যদি আজকে গাড়ি না চলায় তাহলে তারা আর গাড়ি চালাতে পারবে না, তাদের পারমিট বাতিল করে দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায় কিছু কিছু গাড়ি চলাচল করেছে। রাজধানীর নাগেরজলা থেকেও বহু দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল করেনি এ দিন। তবে জোর করে দূরপাল্লার যেসব গাড়ি চালানোর চেষ্টা করেছে সেগুলোর মধ্যে খুব কম সংখ্যক যাত্রী যাওয়া আসা করে। মোদ্দাকথা কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতি বিরুদ্ধে মানুষ এই ধর্মঘট সফল করেছে। ত্রিপুরা রাজ্যের যে ধরনের জনবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে বিজেপি সরকার তারও প্রতিবাদ জানিয়েছে ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ।

ত্রিপুরা রাজ্যের ব্যাংক সেক্টরগুলি পুরোপুরিভাবে এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। বিমান সংস্থা এবং বি এস এন এল -এর মতো সংস্থাগুলি ধর্মঘটে দারুণভাবে সাড়া দিয়েছে বলে জানান তিনি। আজকে যেভাবে মানুষ নৈতিকভাবে ধর্মঘট পালন করতে এগিয়ে এসেছে, একইভাবে যেন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও সামিল হয় তার জন্য আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি এদিন ধর্মঘট সফল করার জন্য সচেতন রাজ্যবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জানান শংকর প্রসাদ দত্ত। জনবিরোধী এবং কর্পোরেট বান্ধব সরকারের বিরুদ্ধে দেশের কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। কারণ দেশবাসী জীবন-জীবিকা বিপন্ন। অর্থনীতি অবস্থা ভেঙে পড়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি এবং স্বৈরাচারী শক্তি এবং দেশীয় ও বিদেশী পুঁজির জোটের বিরুদ্ধে ধর্মঘট। তাই এই অবস্থায় দেশ চলতে দেওয়া যায় না। তাই ধর্মঘট সফল করতে রাজ্যের মানুষ এগিয়ে এসেছে বলে জানান সি আই টি ইউ সভাপতি মানিক দে। ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সাত বছরে দেশে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকার সম্পদ বিক্রি করেছে। এটি বিজেপির সম্পদ ছিল না। এটি দেশবাসী সম্পদ। মানুষের রক্ত ঘামে গড়ে ওঠা এই সম্পদ। দেশের সম্পদ গুলো বিক্রি করে দেশকে ভিখারিতে পরিণত করেছে। মানুষের কর্মসংস্থান নেই। সুতরাং বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এই কর্মনাশা দেশ তৈরি করেছে বলে অভিযোগ তোলেন মানিক দে। তিনি আরো বলেন এ ধর্মঘটে নাকি মানুষের উপর প্রভাব পড়বে বলে বিজেপি সরকার মানুষকে বলছে, তাহলে প্রশ্ন এতই যদি বুঝে সরকার তাহলে কেন দেশের সম্পদ বিক্রি করে মানুষকে কর্মনাশা করে তুলছে। তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানান তিনি। দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো বলতে কিছু নেই বর্তমান সরকারের আমলে। শ্রমিকদের ৪৪ টি আইনকে অচল করে দিয়ে ৪ টি শ্রম কোড তৈরি করছে। শ্রমিক কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তাই এ ধর্মঘট দেশ বাঁচানোর এবং মানুষ বাঁচানোর ধর্মঘট। তাই এই ধর্মঘটের প্রথম দিন মানুষের নৈতিক সমর্থন পাওয়া গেছে ত্রিপুরা রাজ্যেও। কারণ পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে মানুষ যে অধিকারটি ভোগ করতো রাজ্যের মানুষ, সেসব অধিকার এখন মানুষ পাচ্ছে না। বিভিন্ন বাধা এবং প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে সি আই টি ইউ প্রচারে শামিল হয়েছে। কিন্তু প্রচার করে ধর্মঘট সফল করতে সম্ভব হয়। আরো বলেন, রাস্তাঘাট ছিল শুনসান, গ্রাম পাহাড় শহর সর্বোচ্চ ধর্মঘট সফল বলে জানান তিনি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য